—ফাইল চিত্র।
শপথ নিয়ে নরেন্দ্র মোদী দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার আগেই তাঁর সঙ্গে সরাসরি রাজনৈতিক সংঘাতে নেমে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সে কারণেই বুধবার দুপুরে শেষ মুহূর্তে বাতিল করলেন শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যাওয়া। বিজেপির ‘সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে আজ, বৃহস্পতিবারই পথে নামছেন তৃণমূল নেত্রী। গন্তব্য নৈহাটি। এ ছাড়া, বাঁকুড়ার শালতোড়ায় এক তৃণমূল নেতার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের পরে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে অবিলম্বে সেখানে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
নির্বাচনের ফল বেরনোর পর থেকেই বিভিন্ন জেলায় বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষ, তৃণমূলের অফিস দখল, পুরবোর্ডে ভাঙন ধরানো ইত্যাদি চলছে। এ দিন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জানান, রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের ‘সন্ত্রাসে’ খুন হওয়া ৫৪ জন বিজেপি কর্মীর পরিবারকে মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সঙ্গে সঙ্গে এর প্রতিবাদে সরব হন মমতা। তাঁর অভিযোগ, বিজেপি শুধু মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে তা-ই নয়, সৌজন্যের আবহ নষ্ট করে রাজনৈতিক ‘প্রতিহিংসা’ চরিতার্থ করতে চাইছে। তারই প্রতিবাদে মোদীর উদ্দেশে টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, তিনি শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যাবেন না। বিরোধী নেতাদেরও অনেককে তিনি ব্যক্তিগত ভাবে তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
The oath-taking ceremony is an august occasion to celebrate democracy, not one that should be devalued by any political party pic.twitter.com/Mznq0xN11Q
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) May 29, 2019
টুইটে মমতা লেখেন, ‘অভিনন্দন নতুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজি। আমি ভেবেছিলাম শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক নিমন্ত্রণ গ্রহণ করব। কিন্তু গণমাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি, বিজেপি বলছে, বাংলায় রাজনৈতিক হিংসায় ৫৪ জন খুন হয়েছেন। এটি সর্বৈব মিথ্যা। বাংলায় কোনও রকম রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটেনি। এই মৃত্যুগুলির পিছনে পারিবারিক বিবাদ, ব্যক্তিগত ঝগড়া ইত্যাদি থাকতে পারে। রাজনীতি নয়। আমি দুঃখিত নরেন্দ্র মোদীজি, এই কারণেই আমি আপনার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারছি না। এই অনুষ্ঠান গণতন্ত্রের পবিত্র উদ্যাপন। তার মর্যাদাহানি করে রাজনৈতিক পয়েন্ট বাড়ানোর জন্য নয়।’
এ বিষয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘‘উনি সত্য ঢাকার চেষ্টা করছেন। যে ৫৪টি পরিবারকে দিল্লিতে আনা হয়েছে, তাদের প্রত্যেকের পরিবারের কোনও না কোনও সদস্যকে রাজনৈতিক কারণে খুন করা হয়েছে। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের নিহতদের পরিবারকে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ডাকতে পারেন, আর আমরা পারি না?’’ তৃণমূলের অবশ্য পাল্টা যুক্তি, যদি খোলা জায়গায় শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়, তখন সেখানে অনেকেরই প্রবেশাধিকার থাকতে পারে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি ভবন বা রাজভবনের মতো জায়গায় দেশ ও বিদেশের বাছাই আমন্ত্রিতদের সঙ্গে ‘রাজনৈতিক হিংসায় নিহতের পরিবার’ বলে কিছু মানুষকে হাজির করানো হলে তা ‘রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি’-রই প্রতিফলন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy