প্রতীকী ছবি।
প্রথম রাউন্ডে রণে ভঙ্গ দিতে হয়েছে। দ্বিতীয় রাউন্ডে রণক্ষেত্রে পাশ কাটিয়ে লড়াই এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল। জিএসটি ক্ষতিপূরণ নিয়ে মোদী সরকার এ বার জিএসটি পরিষদকে এড়িয়েই নিজের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে চাইছে।
রাজ্যের জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটাতে পারবেন না বলে জানিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছিলেন, রাজ্যগুলি নিজেদের মতো ধার করে নিক। কিন্তু সোমবার জিএসটি পরিষদের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১০টি বিরোধী শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা কেন্দ্রকেই ধার করে ক্ষতিপূরণ মেটাতে হবে বলে দাবি তোলেন। এ নিয়ে ভোটাভুটিও চান। ঐকমত্য না হওয়ায় আগামী সোমবার ফের বসবে জিএসটি পরিষদের বৈঠক। বিরোধী শাসিত
রাজ্যগুলি সুর নরম করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। এখন সুর পাল্টে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, ঋণ নেওয়ার বিষয়টি জিএসটি পরিষদের আওতার মধ্যেই আসে না। ফলে এ নিয়ে ভোটাভুটিও হতে পারে না।
আরও পড়ুন: উপনির্বাচন, বিহার ভোটে বিজেপির চিন্তা দলিত ক্ষোভ
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী রাজ্যের সামনে দু’টি বিকল্প রেখেছিলেন। এক, তারা জিএসটি থেকে কম হওয়া আয়ের অভাব মেটাতে ৯৭ হাজার কোটি টাকা ধার করতে পারে। দুই, সামগ্রিক রাজস্ব আয়ের অভাব মেটাতে ২.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা ধার করতে পারে। কিন্তু কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম শাসিত রাজ্যগুলি দাবি তুলেছে, কেন্দ্র ধার করুক। ২১টি বিজেপি, এনডিএ ও বিজেপি ঘেঁষা দল শাসিত রাজ্য প্রথম বিকল্প মেনে নিয়েছে।
অর্থ মন্ত্রক সূত্রের যুক্তি, ‘‘এই ২১টি রাজ্য যদি বাড়তি ধার করতে চায়, তা হলে অন্য কোনও রাজ্য বাধা দিতে পারে না। রাজ্যের ঋণের বিষয়টি জিএসটি পরিষদের আওতায় পড়ে না। সেস বসানোর অধিকার জিএসটি পরিষদের রয়েছে। জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটাতে নির্ধারিত পাঁচ বছর পরেও সেসের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এখন রাজ্যগুলি ঠিক করবে, ধার করবে কি করবে না। সংবিধান অনুযায়ী তা রাজ্যের নিজস্ব অধিকারের মধ্যে পড়ে। ফলে তা নিয়ে জিএসটি পরিষদে ভোটাভুটি হতে পারে না।’’
আরও পড়ুন: ধার করার দায় ঠেললেও সংঘাত এড়াচ্ছে কেন্দ্র
বিরোধী শাসিত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের যুক্তি, ২০১৭-য় জিএসটি চালুর জন্য কেন্দ্র আশ্বাস দিয়েছিল, পাঁচ বছর পর্যন্ত রাজ্যের প্রতি বছর ১৪ শতাংশ আয় বৃদ্ধির নিশ্চয়তা কেন্দ্র দেবে। রাজ্যের আয় কম হলে কেন্দ্র সেস বসিয়ে ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেবে। এখন সেস থেকে
আয় কম হলে কেন্দ্রের ধার করে ক্ষতিপূরণ মেটানো উচিত। পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রের অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে আস্থার অভাব দেখা দিয়েছে।’’ পঞ্জাবের অর্থমন্ত্রী মনপ্রীত বাদল বলেন, ‘‘কেন্দ্রের কাছে এটা সামান্য টাকা। চাইলেই কেন্দ্র মিটিয়ে দিতে পারে।’’ বিরোধী অর্থমন্ত্রীদের দাবি, তাঁরা আগামী সোমবারের বৈঠকেও অবস্থান বদলাচ্ছেন না।
১০টি রাজ্য বিরোধিতা করলেও ২১টি রাজ্যের সমর্থন নিয়ে জিএসটি পরিষদ ভোটাভুটি করছে না কেন? সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, এমনিতেই কেন্দ্রের তিন কৃষি আইন খারিজ করতে বিভিন্ন রাজ্য নিজের আইন আনার কথা ভাবছে। অনেক রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। মোদী সরকারের কৃষি সংস্কারেই বাধা পড়তে পারে। তাই জিএসটি পরিষদে ভোটাভুটি এড়িয়ে কেন্দ্র এখন বিরোধী রাজ্যের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতেও যেতে চাইছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy