মেজর লিতুল গগৈ।
এক কাশ্মীরি যুবককে গাড়ির বনেটে বেঁধে গ্রামে গ্রামে ঘুরিয়েছিলেন তিনি। বদগামের সেই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছিল তাঁর নাম। সেনাবাহিনী অবশ্য তাঁর পাশেই দাঁড়ায়, তাঁকে বিশেষ সম্মানও দেয়।
কিন্তু এ বার সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে বিতর্কে সেনা মেজর লিতুল গগৈ। শ্রীনগরের একটি হোটেল থেকে তাঁকে এক ‘নাবালিকা’-সহ কিছু ক্ষণের জন্য আটক করে পুলিশ। শ্রীনগর পুলিশ অবশ্য তাদের বিবৃতিতে মেজর গগৈয়ের নাম নেয়নি। কিন্তু স্থানীয় হোটেল আধিকারিকের দাবি, গোটা ঘটনার মূলে ছিলেন বদগামের বিতর্কিত সেনাকর্তাই।
গত বছর অসমের এই সেনা অফিসার বদগামের চিল এলাকায় ফারুক আহমেদ দার নামে এক যুবককে গাড়ির বনেটে বেঁধে মানব ঢাল বানিয়ে গ্রামে ঘুরেছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে মানবাধিকার কমিশন— সমালোচনায় সরব হয় সকলেই। কিন্তু সেনা ওই অফিসারের পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাদের দাবি ছিল, সেনাকে লক্ষ্য করে ক্রমাগত পাথর ছোড়া হচ্ছিল। সংসদীয় উপনির্বাচনের দায়িত্ব পালন করতে গ্রামে ঢুকতে পারছিল না সেনা। তাদের অভিযোগ, পাথর ছুড়তে প্ররোচনা দিচ্ছিলেন ফারুকও। তাই তাঁকে মানব ঢাল বানাতে বাধ্য হয়েছিল সেনা।
আজ কী ঘটল? শ্রীনগরের ডালগেটের একটি হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার এজাজ আহমেদের দাবি, গত কাল অনলাইনে ঘর বুক করেন মেজর গগৈ। এক দিনের জন্য। আজ সকালে তিনি এক নাবালিকাকে নিয়ে থাকতে আসেন। এজাজের দাবি, মেয়েটিকে দেখে সন্দেহ হওয়ায় দু’জনের পরিচয়পত্র দেখতে চান তাঁরা। গগৈ নিজের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখান, যার থেকে হোটেল আধিকারিকরা তাঁর নাম জানতে পারেন। অনেক আপত্তির পরে মেয়েটি নিজের আধার কার্ড দেখায়। এজাজের দাবি, মেয়েটির বয়স ১৮-র কম হওয়ায় তার সঙ্গে মেজরকে থাকতে দিতে আপত্তি তোলা হয়। দু’পক্ষের বচসার মধ্যেই হোটেল কর্তৃপক্ষ পুলিশ ডাকেন। পুলিশ এসে গগৈ, তাঁর গাড়ির চালক আর মেয়েটিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, এজাজের কথার সঙ্গে শ্রীনগর পুলিশের বিবৃতি কিন্তু মিলছে না। তাদের বিবৃতিতে মেজর গগৈয়ের নামই নেওয়া হয়নি। বরং তাদের দাবি, ওই হোটেল থেকে ফোন পেয়ে তাদের একটি দল ওই হোটেলে গিয়েছিল বটে। কিন্তু সেখান গিয়ে দেখা যায় সমীর আহমেদ এবং এক মহিলা (যাঁর নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ) একই ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করতে হোটেলে গিয়েছিলেন। কিন্তু ওই ব্যক্তির সঙ্গে তাঁদের দেখা করতে দিচ্ছিলেন না হোটেল কর্তৃপক্ষ। সে নিয়েই ঝামেলা বাধে। পুলিশ গিয়ে সকলকে থানায় নিয়ে আসে। তবে পুলিশ এ কথা জানিয়েছে যে, মহিলাটি যাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন, তিনি একজন সেনা অফিসার। আইজি এস পি পানি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘মেয়েটি নাবালিকা নয়। গোটা ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। আমাদের কিছু লুকোনোর নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy