কমিশনের তোপে আদিত্যনাথ। ফাইল চিত্র।
নির্বাচনী জনসভায় ভারতীয় সেনাকে ‘মোদীজি কি সেনা’ বলে মন্তব্য করায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে কড়া ভাষায় সতর্ক করল নির্বাচন কমিশন। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে এই ধরনের মন্তব্য করার আগে তাঁর সতর্ক থাকা উচিত বলেও আদিত্যনাথকে জানানো হয়েছে কমিশনের তরফে।
গত রবিবার উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে একটি নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন যোগী আদিত্যনাথ। সেখানে তিনি বলেন, “কংগ্রেস জঙ্গিদের বিরিয়ানি পরিবেশন করে, সেখানে ‘মোদীজির সেনা’ জঙ্গিদের দিকে বুলেট আর বোমা ছোড়ে। কংগ্রেস আর মোদীজির মধ্যে ফারাক এটাই।’’
যোগী আদিত্যনাথের এই মন্তব্যের পরই ঝড় উঠেছিল দেশের রাজনৈতিক মহলে। কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া ছিল, আদিত্যনাথের এই মন্তব্য আসলে ভারতীয় সেনার অপমান। যোগী আদিত্যনাথ এবং বিজেপির কড়া সমালোচনা করে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “সেনা কারও ব্যক্তিগত হতে পারে না, সেনা আসলে সবার।” বিজেপি শিবিরের মধ্যেও সমালোচিত হয়েছিলেন যোগী। বিজেপি নেতা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং প্রাক্তন সেনাপ্রধান ভি কে সিংহ-ও আদিত্যনাথের সমালোচনা করে বলেছিলেন, ‘সেনা কারও ব্যক্তিগত হতে পারে না’।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন দেশের প্রাক্তন সেনাকর্তারাও। বিষয়টি নিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন দেশের প্রাক্তন নৌসেনা প্রধান এল রামদাস। তাঁর অভিযোগ ছিল, ‘‘ভারতীয় সেনা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। তাঁরা গোটা দেশকে সেবা করেন।’’ ভারতীয় সেনাকে নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহার করার জন্য নাম না করে বিজেপির কড়া সমালোচনা করেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল এইচ এস পনাগ। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বেশ কিছু দিন ধরেই জাতীয়তাবোধ এবং ভারতীয় সেনাকে এক করে ফেলার একটা চেষ্টা চলছে। এর ফলে ভারতীয় সেনার রাজনীতিকরণের মতো মারাত্মক ঘটনা ঘটতে পারে। আমাদের বুঝতে হবে জাতীয় সেনা একটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক বিষয়।’’
আরও পড়ুন: দেবের সভার প্রচারে জংলা পোশাকে তৃণমূলের জয় হিন্দ বাহিনী, কমিশনে বিজেপি
আদিত্যনাথের মন্তব্য নিয়ে সারা দেশে বিক্ষোভের আঁচ টের পেয়ে নড়েচড়ে বসে নির্বাচন কমিশনও। গাজিয়াবাদের জেলাশাসকের কাছ থেকে তাঁর বক্তব্যের ভিডিয়ো ক্লিপ চেয়ে পাঠানো হয়। পাশাপাশি শুক্রবারই যোগী আদিত্যনাথের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কেন তিনি এই ধরনের মন্তব্য করেছেন। শুধু তাই নয়, প্রশাসনের উচ্চপদে থাকা এক জন ব্যক্তি এই ধরনের মন্তব্য কী করে করতে পারেন, তা নিয়েও যোগীকে ভর্ৎসনা করেছে কমিশন, এমনটাই জানা যাচ্ছে বিভিন্ন সূত্র থেকে।
আদিত্যনাথের এই মন্তব্যের বহু আগেই নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছিল, যেহেতু ভারতীয় সেনা অরাজনৈতিক এবং নিরপেক্ষ, তাই নির্বাচনী জনসভায় ভারতীয় সেনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করা যাবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy