Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Karnataka Crisis

কর্নাটকে আরও এক নির্দল মন্ত্রীর ইস্তফা, সুতোয় ঝুলছে কুমারস্বামী সরকারের ভবিষ্যৎ

একেবারে হাল ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের মন্ত্রিসভায় জায়গা করে দিয়ে মন ফেরানোর চেষ্টা চলছে। সেই লক্ষ্যেই, কুমারস্বামী ছাড়া জোট সরকারের সব মন্ত্রী সোমবার ইস্তফা দিয়েছেন।

কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী।

কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী।

সংবাদ সংস্থা
বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৯ ১৩:৫৮
Share: Save:

সকালের পর বিকেলে আরও এক নির্দল মন্ত্রী পদত্যাগ করলেন কর্নাটকে। পদত্যাগী দুই নির্দল মন্ত্রীই বিজেপি-কে সমর্থন জানানোর কথা ঘোষণা করে দিয়েছেন প্রকাশ্যে। এর আগে দুই দলের ১৩ জন বিধায়ক পদত্যাগ করেছিলেন। সব মিলিয়ে, কর্নাটকের জেডিএস-কংগ্রেস জোট সরকারের অবস্থা আরও সঙ্গীন হল।

তবে একেবারে হাল ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের মন্ত্রিসভায় জায়গা করে দিয়ে মন ফেরানোর চেষ্টা চলছে। সেই লক্ষ্যেই, কুমারস্বামী ছাড়া জোট সরকারের সব মন্ত্রী সোমবার ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে খুব শীঘ্রই নয়া মন্ত্রিসভা গড়া হবে বলে দুপুরে টুইট করে জানায় মুখ্যমন্ত্রীর দফতর।

এ দিন সকালে প্রথমে কংগ্রেসের ২১ জন মন্ত্রী ইস্তফা দেন। সরকার বাঁচাতেই মন্ত্রীদের এই ইস্তফা বলে সূত্রের খবর। ইস্তফা দেওয়া কংগ্রেসের মন্ত্রীদের মধ্যে উপমুখ্যমন্ত্রী জি পরমেশ্বরও রয়েছেন। তিনি আগেই জানিয়েছিলেন বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের মন্ত্রিসভায় জায়গা দিতে দল যদি তাঁদের ইস্তফা দিতে বলে, সকলেই ইস্তফা দেবেন। এর পর ইস্তাফা দেন জেডিএস-এর মন্ত্রীরা।

যে ভাবেই হোক সরকার বাঁচাতেই হবে— রাজ্যের রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে দাঁড়িয়ে এখন এটাই মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেস-জেডিএস-এর কাছে। আশু সমাধান বার করতে দিল্লিতে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব বৈঠকে বসছেন সন্ধ্যাবেলায়। অন্য দিকে, এই সঙ্কট কাটাতে নিজেদের মতো করে আটঘাট বাঁধছেন জেডিএস-এর শীর্ষ নেতৃত্বও। সূত্রের খবর, এই সঙ্কটের সময় কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চাইছেন না কুমারস্বামী। বিজেপি ঘোড়া কেনাবেচা করতে পারে, এই আশঙ্কা করেই বিধায়কদের কুর্গে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছেন তিনি। এ দিন দুপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করে কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপাল বলেন, “যে সব বিধায়ক ইস্তফা দিয়েছেন, আশা করব তাঁরা দলকে মজবুত করতে তাঁরা ফিরে আসবেন। এই সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে তাঁরা দলের পাশে থাকবেন।” বিজেপির ‘চক্রান্ত’ আটকাতে দলের সব মন্ত্রীর একসঙ্গে ইস্তফা দেওয়াকেও স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।

গত শনিবারে ইস্তফা দিয়েছিলেন কংগ্রেস ও জেডিএস-এর মোট ১৩ জন বিধায়ক। তাঁদের বুঝিয়ে দলে ফিরিয়ে আনার প্রয়াস চলাকালীন সোমবার সকালেই ইস্তফা দেন রাজ্যেরই এক মন্ত্রী তথা নির্দল বিধায়ক নাগেশ। কর্নাটকের প্রাক্তন মন্ত্রী রামলিঙ্গ রেড্ডির মেয়ে কংগ্রেসের সৌমিয়া রেড্ডিও পরে ইস্তফা দেন।

আমেরিকা সফর ছেঁটে রবিবারই রাজ্যে ফিরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। একের পর এক বিধায়কের ইস্তফায় খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা দলকে টেনে তুলতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। রাজ্যে পা দিয়েই রবিবারেই জেডিএস ও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে একপ্রস্থ বৈঠক করেন সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে। সূত্রের খবর, কী ভাবে বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের দলে ফিরিয়ে আনা যায়, সেটারও একটা ব্লু-প্রিন্ট তৈরি হয় ওই বৈঠকে। রাতে ফের জোটের নেতাদের সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠক করেন কুমারস্বামী। কিন্তু সেই বৈঠকে কোনও সন্তোষজনক ফল বার হয়নি বলেও সূত্রের খবর।

আরও পড়ুন: ‘ব্যাঙ লাফিয়ে’ দিলীপ ঘোষের পায়ে পড়লেন রেলকর্তা!

বিক্ষুব্ধ বিধায়করা তাঁদের সিদ্ধান্ত বদলাবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন জোট সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বরা। দেবগৌড়া দলের সমস্ত নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। অন্য দিকে, কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপাল, সিদ্দারামাইয়া এবং ডি কে শিবকুমার কংগ্রেস বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করেন। মঙ্গলবার একটা বৈঠক ডেকেছেন তাঁরা। সেখানে সব বিধায়কদের উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নির্দল বিধায়ক নাগেশের ইস্তফা প্রসঙ্গে শিবকুমার বলেন, “চাপে পড়েই ইস্তফা দিয়েছেন নাগেশ। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। আমরা ওঁর সঙ্গে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রাখছি।” এ দিকে, কংগ্রেস ও জেডিএস-এর যে সকল বিধায়ক মুম্বইয়ের হোটেলে উঠেছেন, তাঁদের উপর কড়া নজরদারিও শুরু হয়ে গিয়েছে। হোটেলের বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে বিধায়কদের। বিজেপি যাতে ঘোড়া কেনাবেচা করতে না পারে জোর কদমে সেই প্রচেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছেন কুমারস্বামী।

আরও পড়ুন: ভোর রাতে কামান ধ্বংসকারী ‘নাগ’-এর সফল পরীক্ষা করল ভারত

রাজ্যে এমন রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য বিজেপিকেই বার বার দায়ী করেছে কংগ্রেস-জেডিএস। কিন্তু সে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিজেপির পাল্টা দাবি, এই অস্থিরতার জন্য বিজেপি কোনও ভাবেই দায়ী নয়। সোমবার সংসদে কর্নাটকের প্রসঙ্গ উঠলে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহও বলেন, “বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা ঠিক নয়। কর্নাটকের এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপি কোনও ভাবেই জড়িত নয়।” এই ঘটনার জন্য পাল্টা তিনি রাহুল গাঁধীকেই দুষেছেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy