Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

জালিয়ানওয়ালা বাগও কি দখল মোদী সরকারের? শুরু বিতর্ক

এমনিতেই স্বাধীনতা সংগ্রামে আরএসএস-এর ভূমিকা নিয়ে বাম ও কংগ্রেসের নেতারা বিস্তর কটাক্ষ করেন কেন্দ্রের বর্তমান শাসক দলকে।

ছবি: রয়টার্স।

ছবি: রয়টার্স।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:১০
Share: Save:

জালিয়ানওয়ালা বাগ নিয়েও কি নতুন ইতিহাস লিখতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার? প্রশ্নটা আজ উঠেই গেল সংসদে।

এমনিতেই স্বাধীনতা সংগ্রামে আরএসএস-এর ভূমিকা নিয়ে বাম ও কংগ্রেসের নেতারা বিস্তর কটাক্ষ করেন কেন্দ্রের বর্তমান শাসক দলকে। কিন্তু তার পরেও বিজেপি ও সঙ্ঘ নেতৃত্ব ‘নিজেদের মতো করে’ ইতিহাস বদলাতে চাইছে বলে গত কয়েক বছরে বারেবারে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যেই আজ ‘জালিয়ানওয়ালা বাগ জাতীয় স্মারক’ পরিচালনার ট্রাস্ট থেকে কংগ্রেস সভাপতিকে সরিয়ে দিতে গিয়ে সংসদে ‘অপ্রত্যাশিত’ প্রশ্নের মুখে পড়ল মোদী সরকার। পাশাপাশি যে বিজেডি কংগ্রেসের সঙ্গে বরাবর দূরত্ব রেখে চলে, তারাও এই প্রশ্নে ‘অপ্রত্যাশিত’ ভাবে তোপ দাগল কেন্দ্রকে। বিরোধীদের অভিযোগ, আইন সংশোধনের নাম করে ‘জালিয়ানওয়ালা বাগ ট্রাস্ট’ থেকে কংগ্রেস সভাপতিকে বাদ দিয়ে কেন্দ্র সস্তার রাজনীতি করছে।

জালিয়ানওয়ালা বাগ পরিচালনার জন্য ১৯৫১-য় আইন করে ট্রাস্ট তৈরির পর থেকেই কংগ্রেস সভাপতি তার সদস্য। ওই ট্রাস্টের চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী। অন্য সদস্যরা হলেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল ও লোকসভার বিরোধী দলনেতা। তার সঙ্গে তিন জন বিশিষ্ট ব্যক্তি। মোদী সরকার সেই আইনে সংশোধন করে ট্রাস্ট থেকে কংগ্রেস সভাপতিকে বাদ দিচ্ছে। লোকসভার পরে আজ রাজ্যসভাতেও এ নিয়ে বিল পাশ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস সাংসদ প্রতাপ সিংহ বাজওয়া বলেন, ‘‘জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ড থেকে কংগ্রেসকে বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। ইতিহাস নতুন করে লেখারও দরকার নেই।’’

আরও পড়ুন: নির্বাচনী বন্ড বিশাল কেলেঙ্কারি: কংগ্রেস

বিজেডি সাংসদ প্রসন্ন আচার্য যুক্তি দেন, ১৯৫১-য় জালিয়ানওয়ালা বাগ জাতীয় স্মারক বিল পেশ করেছিলেন বি আর অম্বেডকর। তার আগে থেকেই জালিয়ানওয়ালা বাগের ট্রাস্টটি দেখভাল করত কংগ্রেস। জওহরলাল নেহরু, বল্লভভাই পটেল তার সদস্য ছিলেন। কংগ্রেসের সংগ্রহ করা চাঁদায় তহবিল তৈরি হয়েছিল। আইন এনে তা সরকারি ট্রাস্ট করা হয়। প্রসন্ন বলেন, ‘‘আপনারা এই ট্রাস্ট থেকে কংগ্রেসকে বাদ দিতে পারেন না। কেউ ইতিহাস বিকৃত করতে পারে না। কংগ্রেস সভাপতিকে সরালে ইতিহাস বদলাবে না।’’ সিপিএম সাংসদ কে কে রাগেশ প্রশ্ন তোলেন, জাতীয় স্মারকের দখল নিয়ে বিজেপি কি নিজের মতো ইতিহাস লিখতে চাইছে? যে স্বাধীনতা সংগ্রামে আরএসএসের ভূমিকা ছিল নেতিবাচক, সেই স্বাধীনতার ইতিহাস কি বিজেপি নতুন করে লিখতে চায়? তিনি মনে করিয়ে দেন, কিছু দিন আগেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ভারতীয় প্রেক্ষিত থেকে ইতিহাস লেখা দরকার।

তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ডের পরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গাঁধীজির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন, দিল্লি এসে গাঁধীজির সঙ্গে জালিয়ানওয়ালা বাগ যাবেন। দরকারে গ্রেফতারি বরণ করবেন। কিন্তু গাঁধীজি রাজি হননি। পরে রবীন্দ্রনাথ নাইটহুড খেতাব ফিরিয়ে দেন। এখন সেই জালিয়ানওয়ালা বাগের ট্রাস্ট থেকে কাউকে বাদ দেওয়ার জন্য বিল আনা হলে মনে হবে রাজনীতি হচ্ছে।

বিরোধীদের আক্রমণের জবাবে পর্যটনমন্ত্রী প্রহ্লাদ সিংহ পটেলের যুক্তি, ইন্দিরা গাঁধী কংগ্রেস সভানেত্রী হিসেবে ট্রাস্টের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছেন। একই কাজ করেছেন সনিয়া গাঁধীও। বিজেপির শরিক জেডিইউ আবার বলেছে, ১৯১৯ ও ২০১৯-এর কংগ্রেস এক নয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Jallianwala Bagh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy