—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বাড়ি করার টাকা পেলেও জমি নেই। এই রকম পরিস্থিতিতে পড়া রাজ্যের ১২ হাজার পরিবারের জন্য বিকল্প বন্দোবস্ত করতে জেলা প্রশাসনগুলিকে নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে প্রায় সব জেলাই সেই কাজ শুরু করে দিয়েছে বলে নবান্ন সূত্রের খবর।
দিল্লির মুখাপেক্ষী হয়ে না থেকে আবাস যোজনার টাকা নিজেদের কোষাগার থেকেই দিয়েছে রাজ্য সরকার। বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ১২ লক্ষ অ্যাকাউন্টে ইতিমধ্যেই প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা পৌঁছে গিয়েছে গত ডিসেম্বর মাসে। কিন্তু তার পরে দেখা যাচ্ছে, ১২ হাজার অ্যাকাউন্ট থেকে সেই টাকা তুলতে পারেননি উপভোক্তারা। রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ— প্রায় সব জেলাতেই এই রকম ঘটনা রয়েছে। এর পরেই ‘বিকল্প পন্থা’ নিয়েছে রাজ্য সরকার।
পঞ্চায়েত দফতরের তরফ থেকে জেলাগুলিকে বলা হয়েছে, ওই পরিবারগুলির জন্য জমির বন্দোবস্ত করে দিতে। পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘১২ লক্ষ মানুষ আবাস যোজনার টাকা পেয়েছেন। তাঁদের মাত্রই ১ শতাংশ এই ধরনের সমস্যায় পড়েছেন। আমরা বিষয়টা জানার পরেই জেলাগুলিকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করতে বলেছি।’’
কিন্তু কী ভাবে তাঁদের জমি দেবে সরকার? পঞ্চায়েত দফতরের তরফে বলা হয়েছে, বিভিন্ন জেলায় সরকারের ‘খাস জমি’ রয়েছে। সেখান থেকেই জমি বরাদ্দ করতে বলা হয়েছে। যে পরিবার বর্তমানে যেখানে থাকেন, তার কাছাকাছি জায়গায় জমি দেখতে বলা হয়েছে জেলা প্রশাসনকে। কিন্তু জমি ছাড়া আবাসের বাড়ি তৈরির টাকা উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছল কী করে? জমি না থাকলে তাঁরা কোথায় বাড়ি বানাবেন? তা হলে কি সমীক্ষায় কোনও ‘প্রক্রিয়াগত’ ত্রুটি থেকে গিয়েছিল? পঞ্চায়েতমন্ত্রী বলেন, ‘‘ত্রুটি থাকবে কেন? হতদরিদ্র মানুষগুলি মাথার উপর ছাদের জন্য আবেদন করেছিলেন। সরকার তাঁদের বিকল্প ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। এটা সরকারের সাফল্য।’’
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল, কেন্দ্রীয় সরকার টাকা না দিলে রাজ্যই আবাসের টাকা দেবে উপভোক্তাদের। এবং তা ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই। পুজোর পর থেকেই আবাস যোজনার সমীক্ষার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। সব মিলিয়ে ২৮ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছিল রাজ্য সরকারের কাছে। ১২ লক্ষ অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার দিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাকি ১৬ লক্ষ মানুষেরও মাথার উপর ছাদের ব্যবস্থা করে দেবে রাজ্য সরকার। তা বাস্তবায়িত হলে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে ২৮ লক্ষ পরিবারের বাড়ি তৈরি হয়ে যাবে।
আবাস যোজনার টাকা নিয়ে যাতে স্থানীয় স্তরে কোনও ‘অবাঞ্ছিত’ ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে এই পর্বে গোড়া থেকেই সতর্ক ছিল রাজ্য সরকার। ‘কাটমানি’ সংস্কৃতি রুখতে শুরুতেই জেলাগুলিকে নির্দেশ পাঠিয়েছিল নবান্ন। বাড়ি তৈরির সরঞ্জাম নিয়েও উপভোক্তাদের যাতে কেউ কোনও ‘চাপ’ না দেয়, তা-ও জেলা প্রশাসনকে সুনিশ্চিত করতে বলেছিল রাজ্য সরকার। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘অতীতের থেকে শিক্ষা নিয়েই রাজ্য এ বার আবাসের বিষয়ে অনেক বেশি সতর্ক। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ১২ হাজার জমিহীনকে জমিও দেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy