সপ্তম শ্রেণির যাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ। —প্রতীকী চিত্র।
স্কুলের গণ্ডিও পেরোয়নি কেউ। সবে মাধ্যমিকের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। পরীক্ষা শেষের সেই ‘আনন্দে’ খানাপিনার পরে গ্রামেরই সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল এক দল কিশোরের বিরুদ্ধে। এখানেই শেষ নয়, গণধর্ষণের পর কিশোরীকে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওই স্কুলপড়ুয়াদের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে আবার ছিল মেয়েটির প্রেমিকও! অভিযোগ, সে-ই শ্বাসরোধ করে খুন করেছে কিশোরীকে। এমনই অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় অসমের বিশ্বনাথ দেলার গোহপুরের রজাবাড়ি এলাকা।
ঘটনা জানাজানির পর ওই পড়ুয়াদের গণপিটুনির পর পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এক কিশোর আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। পুলিশ জানিয়েছে, পরে ধরা পড়েছে দলের বাকি পাঁচ অভিযুক্ত কিশোরও। আগামিকাল মঙ্গলবার অভিযুক্তদের জুভেনাইল আদালতে তোলা হবে।
নির্ভয়াকাণ্ডে দণ্ডিতদের ফাঁসি নিয়ে আইনি চাপানউতোর চলাকালীনই অসমের এই ঘটনায় পুলিশ প্রশাসন মহলে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, রজাবাড়ি এলাকায় ১ নম্বর চকলা গ্রামের বাসিন্দা সাত কিশোর পরীক্ষা শেষের আনন্দে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাতে খানাপিনার আয়োজন করে। প্রতিবেশী ১২ বছরের কিশোরীকেও তাদের সঙ্গে যোগ দিতে নিয়ে আসে। সে রাতে বাড়ি না-ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজখবর শুরু করেন। শনিবার খেতের পাশে গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মেয়েটির দেহ পাওয়া যায়। প্রথমে আত্মহত্যার ঘটনা মনে হলেও, ডাক্তারি পরীক্ষার পর জানা যায়, মেয়েটিকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে।
মেয়েটির পরিবার সাত কিশোরের নামে অভিযোগ দায়ের করেছে। তাদের মধ্যে পাঁচ জন পালিয়ে গেলেও দুই কিশোরকে পরে গ্রামবাসীরাই খুঁজে বার করেন। তাদের মধ্যে এক জন মেয়েটির প্রেমিক বলে জানা গিয়েছে। অন্য জন মেয়েটিকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়েছিল। দু’জনকেই বেধড়ক মারধর করা হয়। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রেমিকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে রবিবার তেজপুরের হাসপাতালে আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রায় সংশোধনের আর্জি খারিজ পবনের, কালই ফাঁসি হওয়ার কথা নির্ভয়ার ধর্ষকদের
আরও পড়ুন: ৩৭০ নিয়ে চ্যালেঞ্জের শুনানি বৃহত্তর বেঞ্চে নয়, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
অভিযুক্তদের জেরা করেপুলিশ জানতে পেরেছে, মেয়েটির প্রেমিক দুই বন্ধুর উপরে মেয়েটিকে বাড়ি থেকে নিয়ে আসার ভার দিয়েছিল। তারাই প্রথমে ধর্ষণ করে। পরে মেয়েটি সে কথা প্রেমিককে জানালে প্রেমিক রেগে মেয়েটিকে ফের ধর্ষণ করে ও শ্বাসরোধ করে খুন করে। দলের অন্য দুই কিশোর ধর্ষণ করেছে কি না, নিশ্চিত নয় পুলিশ। কিন্তু তারা মৃতদেহ গাছে ঝোলাতে সাহায্য করেছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। ময়না-তদন্তের পরে দেহটি সমাধিস্থ করেছেন গ্রামবাসীরা। অভিযুক্ত কিশোরদের চরম শাস্তির দাবিতে সোমবার গোহপুর থানা ঘেরাও করেন গ্রামের মানুষ। অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে এলাকার ছাত্রীরা মিছিল বার করে সেখানকার বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy