Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Election Results 2019

পদে ফিরতে নারাজ রাহুল, প্রিয়ঙ্কা-সহ দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক, বাড়ছে উত্তরসূরি নিয়ে জল্পনা

রাজনৈতিক মহলের ধারণা, দলের শীর্ষ নেতারা শেষ বারের মতো রাহুল গাঁধীকে সভাপতি পদে থাকার আর্জি জানাবেন। যদিও রাহুল সেই আবেদনে সাড়া না দিয়ে পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত আরও নির্দিষ্ট করে জানিয়ে দিতে পারেন।

ইস্তফার সিদ্ধান্তেই অনড় রাহুল। —ফাইল চিত্র

ইস্তফার সিদ্ধান্তেই অনড় রাহুল। —ফাইল চিত্র

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৯ ১৩:৫৬
Share: Save:

শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে ঘনিষ্ঠরা কেউই বোঝাতে কসুর করেননি। কিন্তু তিনি সিদ্ধান্ত থেকে এক চুলও সরার পক্ষপাতী নন। কংগ্রেস সভাপতির পদে আপাতত আর ফিরবেন না— কার্যত ধনুকভাঙা পণ করেছেন রাহুল গাঁধী। এই পরিস্থিতিতে আজ মঙ্গলবার কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন রাহুল। ইতিমধ্যেই দিল্লিতে তাঁর বাসভবনে হাজির হয়েছেন দলের নেতা-নেত্রীরা। রয়েছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধীও। এই বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে তুমুল জল্পনা।

রাজনৈতিক মহলের ধারণা, দলের শীর্ষ নেতারা শেষ বারের মতো রাহুল গাঁধীকে সভাপতি পদে থাকার আর্জি জানাবেন। যদিও রাহুল সেই আবেদনে সাড়া না দিয়ে পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত আরও নির্দিষ্ট করে জানিয়ে দিতে পারেন। ফলে রাহুল-উত্তর কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের প্রক্রিয়া এবং তার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে যেতে পারে, মত রাজনৈতিক মহলের। যদিও আনুষ্ঠানিক ঘোষণার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ এই সপ্তাহের শেষের দিকে ফের বৈঠকে বসছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি (সিডব্লিউসি)। ওই বৈঠকেই রাহুলের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হতে পারে এবং তার পর ঘোষণা করা হতে পারে।

গত শনিবার কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিতে চাইলেও সিডব্লিউসি তা গ্রহণ করেনি। দলীয় সূত্রে খবর, ওই দিনের পরও অনেক নেতা-নেত্রী তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। সনিয়া-প্রিয়ঙ্কাও আরও এক দফা বুঝিয়ে রাহুলকে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার অনুরোধ-উপরোধ করেছেন। কিন্তু রাহুল রাজি না হওয়ায় তাঁরাও মেনে নিয়েছেন। সোমবারও দলের দুই শীর্ষ নেতা আহমেদ পটেল এবং কে সি বেনুগোপালকে রাহুল স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর উত্তরসূরি খোঁজার জন্য।

আরও পড়ুন: অমিতকেই উত্তরসূরি করতে প্রস্তুতি মোদীর, মিলতে পারে স্বরাষ্ট্র বা অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্বও

আরও পড়ুন: পুলিশ-প্রশাসনে বড় রদবদল, আলাপন স্বরাষ্ট্রে, সব মিলিয়ে বদলি ১০ ডিএম

তার মধ্যেই মঙ্গলবার সকালে দিল্লিতে রাহুলের বাড়িতে আসেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সূরজেওয়ালা। রাজস্থানের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সচিন পায়লটও চলে আসেন রাহুলের বাড়িতে। রাহুলের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেও প্রথমে অন্যদের সঙ্গে দেখা করতে চাননি রাহুল। তবে পরে দলের এই নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য বিকেল সাড়ে চারটেয় সময় দেন রাহুল। ফলে ওই বৈঠকের দিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের।

রাহুল কি তবে দলের এই দুর্দিনে পিছু হঠলেন? ইতিমধ্যেই নানা মহল থেকে এই গুঞ্জনও মাথাচাড়া দিয়েছে। কংগ্রেস নেতৃত্বও সেটা বুঝছেন। তাই সেই অনুযায়ী রণকৌশলও তৈরি হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে। শনিবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিডব্লিউসি-র সদস্য তরুণ গগৈ। তিনি বলেন, ‘‘রাহুল নিজে বলেছেন, আমি পালিয়ে যাচ্ছি না। আমি বরং আরও বেশি করে লড়াই করব। এমনকি, কংগ্রেসের হয়ে না পারলে আদর্শগত লড়াই করব।’’ অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ বলেন, ‘‘আমি নিজেও রাহুলকে কংগ্রেস সভাপতির পদে থাকার জন্য অনুরোধ করেছি। কিন্তু রাহুল সিদ্ধান্ত থেকে সরবেন না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কিছু বর্ষীয়ান নেতার ভূমিকায় রাহুল বিরক্ত। লোকসভা ভোটে তাঁদের কাছ থেকে যে একাগ্রতা ও পরিশ্রম আশা করেছিলেন, তা তাঁরা করেননি।’’

কিন্তু রাহুল এই রকম অনমনীয় মনোভাব কেন নিয়েছেন? কোনও ভাবেই তাঁকে অবস্থান থেকে টলানো যাচ্ছে না কেন? কংগ্রেস নেতা শশী তারুরের মতে, ‘‘লোকসভা ভোটের এই বিপর্যয়কে রাহুল ব্যক্তিগত হার হিসেবে ধরে নিচ্ছেন। সেই কারণেই তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং তাতে তিনি অনড়।’’ যদিও এই দায় শুধুমাত্র রাহুলের একার নয়, দলের সকলের— মত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তারুরের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE