অনন্ত কুমার হেগড়ে।
মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর স্বাধীনতা আন্দোলন নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ অনন্তকুমার হেগড়ে। তাঁর মতে, গাঁধীর স্বাধীনতা সংগ্রাম আসলে ‘নাটক’। উত্তর কন্নড়ের এই বিজেপি সাংসদের মন্তব্যের সমালোচনা করতে গিয়ে কংগ্রেস টেনে এনেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। তাদের দাবি, হেগড়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ দায়ের করতে হবে এবং ওই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে।
বিতর্কের জেরে নড়চড়ে বসেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, হেগড়ের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী। বিতর্ক ক্রমশ ঘোরালো হচ্ছে বুঝে দলীয় সাংসদকে শো-কজ় করেছে বিজেপি। দলের কর্নাটকের সভাপতি নীলম কুমার কাটিল জানান, হেগড়ের মন্তব্যে শীর্ষ নেতৃত্ব অসন্তুষ্ট।
হেগড়ের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে তৃণমূল নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই শো-কজ়কেই ‘নাটক’ বলে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে যাঁদের কোনও অবদান নেই, গাঁধী হত্যাকারীকে যাঁরা দেশপ্রেমিক বলেন, তাঁরা হেগড়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন, এটাও কি বিশ্বাস করা যায়? মনে হয় এটাও একটা নাটক।’’
গত শনিবার বেঙ্গালুরুতে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস নিয়ে বলতে গিয়ে হেগড়ে নিশানা করেন গাঁধীকে। বলেন, ‘‘ব্রিটিশ শাসকের অনুমতি ও সমর্থনে স্বাধীনতা সংগ্রাম নামক নাটক হয়েছিল। তথাকথিত এই সব নেতা এক বারও পুলিশের মার খাননি। ওটা স্বাধীনতা সংগ্রাম ছিল না, লোকদেখানো লড়াই ছিল।’’ এখানেই থেমে থাকেননি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বলেছেন, ‘‘কংগ্রেসের সমর্থকেরা বলেন, আমরণ অনশন ও সত্যাগ্রহের কারণেই দেশ স্বাধীনতা পেয়েছে। ব্রিটিশেরা সত্যাগ্রহের ভয়ে দেশ ছাড়েনি, হতাশ হয়েই স্বাধীনতা দিয়েছিল।’’ গাঁধীকে নিশানা করে হেগড়ের মন্তব্য, ‘‘যখন ইতিহাস পড়ি, তখন আমার রক্ত ফুটতে থাকে। এমন মানুষকে আমাদের দেশে মহাত্মা বলা হয়।’’ শো-কজ়ের আগে পর্যন্ত নিজের অবস্থানেই অনড় ছিলেন হেগড়ে। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে তিনি বলেন, ‘‘যা বলেছি, তা দেশের আসল ইতিহাস। কংগ্রেস নিজেদের মহান প্রমাণ করতে বছরের পর বছর ধরে ভুল ইতিহাস পড়িয়েছে।’’
কারণে-অকারণে গাঁধী-স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। হেগড়ের মন্তব্যে তৈরি হওয়া বিতর্কে বলটি মোদীর কোর্টেই ঠেলেছে কংগ্রেস। রাজ্যসভায় তাদের উপদলনেতা আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘গাঁধীজির সার্ধজন্মশতবর্ষ উদ্যাপনে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সরকার যদি আন্তরিক হন, তা হলে প্রধানমন্ত্রী সংসদে এসে এই মন্তব্য সম্পর্কে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করুন।’’ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ওই অংশ মনে করিয়ে দেন, লোকসভা ভোটপর্বে বিজেপি নেত্রী সাধ্বী প্রজ্ঞাও গাঁধী সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, প্রজ্ঞাকে তিনি মন থেকে ক্ষমা করতে পারেন না। প্রজ্ঞাকেও শো-কজ় করেছিল বিজেপি। বিষয়টি দলের শৃঙ্খলা কমিটিতে যায়। কিন্তু প্রজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে এখনও একটি বৈঠক পর্যন্ত করে উঠতে পারেনি ওই শৃঙ্খলা কমিটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy