সিবিআইয়ের কাজকর্ম কি থমকে গিয়েছে? কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থার বিভিন্ন তদন্তের ভবিষ্যৎ নিয়ে এই প্রশ্ন উসকে দিল দিল্লি হাইকোর্ট।
রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে এফআইআর নিয়ে দিল্লি হাইকোর্ট ছ’দিন আগে সিবিআইয়ের জবাব চেয়েছিল। আজ সিবিআই সেই জবাব দিতে পারেনি। জবাব তৈরির জন্য সিবিআইয়ের আইনজীবী কে রাঘবচারিলু আরও সময় চাওয়ায় বিচারপতি নাজমি ওয়াজিরি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘সিবিআইয়ের কাজকর্ম কি লাটে উঠেছে?’’ সময় বাড়িয়ে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
এতে লাভ হয়েছে অবশ্য বিশেষ অধিকর্তা রাকেশ আস্থানার। তাঁর বিরুদ্ধে তাঁর সংস্থারই এফআইআর-কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আস্থানা দিল্লি হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। ২৩ অক্টোবর হাইকোর্ট তাঁকে এ দিন পর্যন্ত গ্রেফতার না-করার নির্দেশ দিয়েছিল। কোর্ট জানিয়েছে, সিবিআই ১ নভেম্বরের পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত আস্থানাকে গ্রেফতার করতে পারবে না।
আস্থানা তিন দিন স্বস্তি পেলেও সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ কে পট্টনায়েকের নজরদারিতে কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশন সিবিআইয়ের অধিকর্তা অলোক বর্মার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে। সিবিআই সূত্রের খবর— প্রয়োজনীয় নথি সিভিসি-তে জমা দেওয়া হয়েছে।
বর্মার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আস্থানা যে ‘টপ সিক্রেট নোট’ তৈরি করেছিলেন, তা-ও ভিজিল্যান্স কমিশন খতিয়ে দেখবে। ওই নোটে আস্থানা অভিযোগ তুলেছিলেন, বর্মাই মইন কুরেশির থেকে ঘুষ নিয়েছিলেন। কিন্তু সিবিআই সূত্রের খবর, আস্থানা নিজে বর্মার বিরুদ্ধে এর আগে পাঁচ বার ভিজিল্যান্স কমিশনে অভিযোগ জানালেও কখনও এই নোটের প্রসঙ্গ তোলেননি। বলেছিলেন ‘একটি সূত্র থেকে’ বর্মার বিরুদ্ধে দুর্নীতির খবর পেয়েছিলেন। এখন বর্মার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে হলে আস্থানাকে নিজের সূত্রও জানাতে হবে।
আস্থানার পাশাপাশি তাঁর ঘনিষ্ঠ, সিবিআইয়ের হাতেই ধৃত সিবিআই অফিসার দেবেন্দ্র কুমারও হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়েও সিবিআই কোনও বক্তব্য জানাতে পারেনি। রাঘবচারিলু ‘একটু সময়’ চাওয়ায় বিচারপতি বলেন, ‘‘একটু সময় মানে কত, ব্যাখ্যা দিন।’’ রাঘবচারিলু যুক্তি দেন, ভিজিল্যান্স কমিশনের কাছে ফাইল পাঠাতে হয়েছে বলে দেরি হচ্ছে। বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনাদের এফআইআর, আপনারাই ঠিক করুন, জবাব দেবেন কি না।’’
সতীশ সানা নামের যে ব্যবসায়ী আস্থানার বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন— তিনি আজ সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ তুলেছেন, তাঁর প্রাণনাশের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সতীশের আর্জি, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি পট্টনায়েকের নজরদারিতেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। যে মনোজ প্রসাদের হাত থেকে আস্থানা ঘুষ নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ, তাকেও আগে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। প্রসাদও আজ দিল্লি হাইকোর্টে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর খারিজের আর্জি জানিয়ে যুক্তি দিয়েছেন, দুই হাতির লড়াইয়ে তিনি ফেঁসে গিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy