চূড়ান্ত সতর্কতা জারি হয়েছে ওড়িশায়। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে (ইনসেটে দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়)। ছবি: এএফপি।
হঠাৎ করেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে সমুদ্র। বিশাল বিশাল ঢেউগুলো আছড়ে পড়ছে বিচে। সঙ্গে তীব্র গর্জন। পাড়ে দাঁড়িয়ে এক হাত দূরে দাঁড়ানো কারও কথা স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে না।
কাজের সূত্রে ৩০ বছর আগে পুরীতে আসা। সেই থেকে এখানেই রয়েছি। এর আগে অনেক ঝড় আছড়ে পড়েছে ওড়িশায়। গত বছরের অক্টোবরে যখন তিতলি আসে, তখনও পুরীতে ছিলাম। সে বীভৎসতা নিজের চোখে দেখেছি। কিন্তু ফণীর ফণা তার চেয়েও ভয়ঙ্কর হবে বলে টের পাচ্ছি।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মেঘে ঢেকে রয়েছে আকাশ। ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিও শুরু হয়ে গিয়েছে সকাল থেকে। অন্য দিন এ সময়ে গমগম করে সমুদ্র সৈকত। ভোর থেকেই পর্যটকেরা সমুদ্রস্নানে নেমে পড়েন। কিন্তু আজ সৈকতের কাছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং পুলিশের দাপাদাপি। কোনও পর্যটককেই সমুদ্রে নামতে দেওয়া হচ্ছে না। মাইক দিয়ে প্রচার করে তাঁদের আজ ১২ টার মধ্যেই সমস্ত হোটেল খালি করে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদেরও।
আরও পড়ুন: দিঘা থেকে ৬১৫ কিমি দূরে ফণী, শুক্রবার গভীর রাতে ১১৫ কিমি বেগে আছড়ে পড়বে এ রাজ্যে
পর্যটকদের জন্য বিশেষ তিনটি ট্রেনের পাশাপাশি বিশেষ বাসেরও ব্যবস্থা করেছে ওড়িশা সরকার। সকাল ১০টা থেকে ৪০-৪৫টা বাসে পর্যটকদের কলকাতায় ফেরানো শুরু হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি, প্রাণহানি রুখতে যথাসম্ভব তৎপর ওড়িশা সরকার। আজ সকালে জগন্নাথ মন্দিরের পতাকাও ঝড়ে উড়ে যায়। মন্দিরের পুজোয় যাতে বিঘ্ন না ঘটে তার জন্য ফের পতাকা বাধার তোড়জোড় শুরু করেন মন্দির কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: কলকাতায় কার্যত হাই অ্যালার্ট, কর্মীদের ছুটি বাতিল, সর্বাত্মক তৎপরতা পুরসভায়
তবে প্রশাসন তৎপর হলেও সমুদ্রের একেবারে কাছে বসবাসকারী আমরা সকলেই আতঙ্কে রয়েছি। জানি না কী হবে। অতি শক্তিশালী প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়ের কথা জানার পর থেকে কলকাতার আত্মীয়েরাও মুহূর্মুহূ ফোন করে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছেন। আমার বাড়ি জগন্নাথ মন্দিরের কাছেই। মন্দির থেকে ৩-৪ কিলোমিটার দূরে। আর সেটাই আমার একমাত্র ভরসার জায়গা। জগন্নাথ দেব প্রতি বারের মতো এ বারও আমাদের রক্ষা করবেন। এই বিশ্বাস নিয়েই রয়েছি।
(লেখক পুরীতে কাপড়ের ব্যবসায়ী)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy