ট্রেনের অপেক্ষায় জড়ো হয়েছেন শ্রমিকেরা। —ফাইল চিত্র।
রাস্তায় যে যেখানে পেরেছেন, জায়গা নিয়েছেন। ফুটপাত জুড়ে থিকথিক করছে ভিড়। সকলেই নিজের বাড়ি ফিরতে চান। করোনা-সংক্রমণ এড়াতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার বিধিনিষেধ উড়িয়ে গত তিন দিন ধরে এ ভাবেই আশ্রয়হীন ভাবে দিন কাটাচ্ছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। মুম্বইয়ের বডালা এলাকায় এ ছবিতে ফের এক বার ফুটে উঠেছে তাঁদের অসহায়তার কথা। তাঁদের দাবি, বাড়ি ফেরার জন্য পুলিশ স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করার কথা বললেও তা বার বার বাতিল হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়েই এ ভাবে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। গোটা বিষয়ে ফুটে উঠেছে চূড়ান্ত প্রশাসনিক অব্যবস্থার চিত্র।
লকডাউনের ফলে বিভিন্ন রাজ্যের মতো মহারাষ্ট্রেও কাজ হারিয়েছেন অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিক। বডালা এলাকার রাস্তায় যে শ্রমিকরা ট্রেনের অপেক্ষায় জড়ো হয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশেরই আর ভাড়াবাড়িতে ফিরে যাওয়ার উপায় নেই। ব্যাগপত্র গুছিয়ে গ্রামের বাড়ি ফিরতে ট্রেন ধরার জন্য বডালায় আসার পর জানতে পেরেছেন, তা বাতিল করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে অনেকই বাড়িভাড়া মেটানোর সামর্থ্য নেই। পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিড়ে রয়েছেন এক ন’মাসের অন্তঃসত্ত্বাও। তিনি বলেন, “বাড়ির মালিক ভাড়ার জন্য তাগাদা দিচ্ছেন। অন্য কোনও ব্যবস্থা করা না হলে ফুটপাথে অপেক্ষা করা ছাড়া আমাদের আর কোনও উপায় নেই। ভাড়াবাড়িতে আর ফিরতে পারব না।”
উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড় থেকে মুম্বইয়ে কাজ করতে এসেছিলেন বীরেন্দ্র কুমার। তবে নিজের বাড়ি ফিরতে গিয়ে যে এ অবস্থায় পড়বেন, তা বোধহয় কখনও ভাবেননি। তিনি বলেন, “আমাকে উত্তরপ্রদেশ ফিরতেই হবে। প্রতি দিন বলা হচ্ছে, ট্রেন বাতিল। তার পর বলা হচ্ছে, এ নিয়ে অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। খাবার নেই, ভাড়াবাড়ির মালিকও আমাদের রাখবেন না… আমরা কী করব?”
আরও পড়ুন: পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্কট ঘোচাতে আরও অনেক কিছু করতে পারতাম: নীতি আয়োগের সিইও
পুলিশের কাছ থেকে তাঁদের জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্য়বস্থা করা হয়েছে জানতে পেরে বডালায় এসেছিলেন আর এক পরিযায়ী শ্রমিক। তবে তা বাতিল হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তিনিও। তাঁর কথায়, “আমাদের ডাকা হলেও কখন ট্রেন বাতিল করা হয়েছে, তা নিয়ে (পুলিশ) কোনও কিছু বলেনি। আজ সকালে খবর পেলাম, ট্রেন চলবে। তার পর এখানে এসে দেখি, ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।”
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যকর্মীরা ছাড়াও কারা খেতে পারেন হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন, সংশোধিত নির্দেশ আইসিএমআর-এর
শুধুমাত্র বডালাতেই যে পরিযায়ী শ্রমিকরা এমন দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন, তা নয়। গত ২৫ মার্চ কেন্দ্রীয় সরকার লকডাউন ঘোষণা করার পর পরিযায়ীদের মতোই মহারাষ্ট্রে আটকে পড়েছেন হাজার হাজার পড়ুয়া, পর্যটক। কেন্দ্র ও রাজ্যের তরফে বিশেষ ট্রেন ও বাসের ব্যবস্থা করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ উঠছে। সেই সঙ্গে ট্রেন বা বাসের জন্য অপেক্ষারতদের মধ্যে ক্রমশই বাড়ছে করোনা-সংক্রমণের আশঙ্কা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy