ভিডিয়ো কনফারেন্সে বিরোধী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। ছবি: পিটিআই
দীর্ঘদিন বাদে করোনা-পরিস্থিতি ঘিরে আবার একজোট হল বিরোধী শক্তি। কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধীর ডাকা ভিডিয়ো-বৈঠকে যোগ দিল বাইশটি বিরোধী দল। তৈরি হল যৌথ বিবৃতিও। সনিয়া ও রাহুল গাঁধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিরোধী দলের তিন জন মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও আজকের বৈঠকে বললেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া, ডিএমকে নেতা স্ট্যালিন, এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার, সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআই নেতা ডি রাজা, আরজেডি-র তেজস্বী যাদব এমনকি ওমর আবদুল্লাও।
সূত্রের খবর, বৈঠকের শুরুতেই দেশের ধুঁকতে থাকা অর্থনীতির প্রসঙ্গ তুলে সনিয়া মন্তব্য করেন, মোদী সরকার যে ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, সেটা দেশের সঙ্গে নিষ্ঠুর ঠাট্টা। ২০২০-২১ আর্থিক বছরের শেষে আর্থিক বৃদ্ধির হার মাইনাসে পৌঁছবে বলে অর্থনীতিবিদেরা আশঙ্কা করছেন। এ দিকে মোদী সরকার এখন নিজেদের গণতান্ত্রিক বলে দেখানোর ভানটুকুও করছে না! সমস্ত ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কেন্দ্রীভূত। সনিয়ার বক্তব্য, দেশের সংবিধানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিল যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, যা আজ বিস্মৃতপ্রায়। সংসদের অধিবেশন বা সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক কবে ডাকা হবে, তারও কোন স্থিরতা নেই।
অন্য নেতারাও কেন্দ্রের ব্যর্থতা নিয়ে সরব হন। তার পরে কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ রাহুলকে বলতে অনুরোধ করেন। রাহুল যদিও বলতে চেয়েছিলেন বৈঠকের একেবারে শেষে। সূত্রের খবর, রাহুল বলেছেন, ভারতে লকডাউন কার্যত ব্যর্থ। আর এখন যখন লকডাউন তুলে নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে, তখনই আসলে সংক্রমণ বাড়ছে। রাহুলের মতে, যদি অবিলম্বে আয়করের আওতার বাইরে থাকা মানুষ এবং শ্রমিকদের হাতে সরাসরি টাকা তুলে দেওয়া না-যায়, ছোট ব্যবসাকে সাহায্য করা না-হয়, তা হলে দেশ ধ্বংসের মুখে। মোদী সরকারের আর্থিক প্যাকেজকে নেহাতই ঋণ বলে মনে করেন রাহুল। তাঁর বক্তব্য, করোনার বিরুদ্ধে আসল লড়াই লডতে হবে রাজ্যকেই। রাজ্যের হাতে সব রকম সাহায্য তুলে দেওয়া উচিত। যে সাহায্য দরকার ছিল, তা মিলছে না। ইয়েচুরিও সরাসরি গরিবের হাতে টাকা ও খাদ্যশস্য পৌঁছে দেওয়ার পক্ষেই সওয়াল করেন।
আরও পড়ুন: ক্ষতি অন্তত লক্ষ কোটি টাকা: মমতা ॥ হাজার কোটির প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রীর
আরও পড়ুন: ‘কেন্দ্র জাতীয় বিপর্যয় বলুক’, দাবি বিরোধী বৈঠকে
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বলেন, বিজেপি যে রাজনীতি পারে করুক, কিন্তু রাজ্যকে বাঁচানোর জন্য তাঁর সরকার যত দূর পারছে, লড়ছে। সূত্রের দাবি, এই প্রসঙ্গে তিনি মমতার উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘দিদিকেও’ সব সময়েই ভিডিয়ো কনফারেন্সে কেন্দ্রের সঙ্গে লড়াই করতে হয়। মহারাষ্ট্রের আর এক নেতা শরদ পওয়ারের বক্তব্য, যে-হেতু তাঁদের রাজ্য শিল্পোন্নত, ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকরা সেখানে এসে খেটে রোজগার করেন। আজ সঙ্কটজনক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর উচিত, সমস্ত নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের রাস্তা খোঁজা। সূত্রের বক্তব্য, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন সরব হয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়টি নিয়ে। তাঁর মতে, লকডাউনের আগে কয়েক দিন সময় পাওয়া গেলে শ্রমিকেরা এ ভাবে বিপদে পড়তেন না। জনজাতি, শ্রমিক, দলিত, সংখ্যালঘুদের বেশি খেসারত দিতে হচ্ছে, এটা স্পষ্ট। বিপর্যয় মোকাবিলায় রাজ্যগুলিকে আর্থিক ভাবে বেশি শক্তিশালী করার দাবি জানিয়ে শীঘ্রই তিনি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখবেন বলে হেমন্ত জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy