ছবি: এএফপি।
এমন ঘটতে পারে আইআইটি গুয়াহাটির তরুণ গবেষক মৃগাঙ্ক বিশ্বাস ভাবেনইনি। উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায় পাঁচ মাসের লকডাউন-পর্ব কাটিয়ে অসমে ফেরার সময়ে তাঁর মনেও সংক্রমণের আশঙ্কা দানা বেঁধেছিল। গুয়াহাটি বিমানবন্দরে নামার পরের অভিজ্ঞতা কিন্তু বিরল ভরসা জুগিয়েছে।
রবিবার ২৩ অগস্ট সকাল-সকাল গুয়াহাটি বিমানবন্দরে নামেন মৃগাঙ্ক। তাঁর কথায়, ‘‘বিমান থেকে নেমে থার্মাল টেস্ট করিয়ে কে কোথায় যাবেন নথিবদ্ধ করানোর মসৃণ ব্যবস্থা। তার পর সরকারি ব্যবস্থাপনায় জেলাশাসকের অফিসে র্যাপিড অ্যান্টিজেন এবং আরটি-পিসিআর পরীক্ষা-পর্ব। যিনি, অসমের যে প্রান্তেই যান, পুরোটাই সরকারি আয়োজন।’’ মৃগাঙ্ক সমাজমাধ্যমেও লেখেন, বড় গাড়িতে তাঁকে জেলাশাসকের দফতরে নিয়ে যাওয়ার পর অপেক্ষা-পর্বে দুপুরের খাবার দেওয়া হয়। অ্যান্টিজেন টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ এলে সেই নথিসুদ্ধ তাঁকে আইআইটি-র হস্টেলে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। নিভৃতবাসে আছেন। খাবার বা দরকারি সরঞ্জামের অভাব নেই। আইআইটি থেকে ফোনে মৃগাঙ্ক বলছেন, ‘‘এতটা মসৃণ ভাবে টেস্ট হবে ভাবিনি। আরটি-পিসিআর টেস্টের ফলও এ বার জানতে পারব।’’
বাইরে থেকে আসা জনতাকে আলাদা রাখা বা টেস্ট করানোর পদ্ধতিতে অসম ও পশ্চিমবঙ্গে ভিন্ন নীতি। অসমের থেকে তিন গুণ বেশি জনসংখ্যা বাংলায়। কিন্তু অসম ২০ লক্ষ টেস্ট করিয়েছে, বাংলা ১৬ লক্ষ ছুঁয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ উপসর্গহীন হলে টেস্ট করাচ্ছে না। এ রাজ্যে তিন দিনে এক লক্ষ লোকের টেস্ট হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে, টেস্টের পিছনে এর বেশি খরচা না-বাড়িয়ে রোগীর পরিচর্যাই দরকার। পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কেউ ভিন্ রাজ্য থেকে উপসর্গহীন অবস্থায় এলে কড়াকড়ি নেই। তবে বিদেশ থেকে এলে মুচলেকা দিয়ে ১৪ দিন বাড়িতে থাকতে হচ্ছে।’’
প্রতি ১০ লক্ষে কোভিড টেস্ট
বাংলা - ১৬,৪৭৫.৫
অসম - ৫৮,৩৪৭.৪
কিন্তু দিল্লি বা অন্য শহর হয়ে কেউ বিদেশ থেকে ফিরলে সব সময়ে তাঁকে চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। অজয়বাবুর ব্যাখ্যা, ‘‘এখন সংক্রমণ যে পর্যায়ে, তাতে দু’-এক জন কোভিড পজ়িটিভ বিমানবন্দর হয়ে রাজ্যে ঢুকলেও তীব্র ভাবে সংক্রমণের হার বাড়বে বলা যায় না। তা ছাড়া, রাজ্যে তিন দিনের জন্য কেউ এলে বাধ্যতামূলক কোয়রান্টিনে পাঠানোর কড়াকড়ি এখানে নেই।’’
আরও পড়ুন: ধর্মনিরপেক্ষ হলে তুরস্কে কেন? এ বার সঙ্ঘের রোষে আমির খান
অসমের স্বাস্থ্য দফতরের ডেপুটি সেক্রেটারি পমি বরুয়াও জানাচ্ছেন, কেউ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অসম থেকে চলে গেলে তাঁকে কোয়রান্টিনে যেতে হবে না। কিন্তু বেশি দিনের জন্য এলে কমপক্ষে ৭ দিন কোয়রান্টিন বেঁধে দিয়েছে সরকার। কেউ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিনে থাকতে চাইলেও তার ব্যবস্থা করছে রাজ্য প্রশাসন। বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করানো হবে। পজ়িটিভ হলে আইসোলেশনে বা কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। পমির কথায়, ‘‘অসমে থাকাকালীন সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। কোথায়, কী কাজে এসেছেন, কোথায় থাকছেন— তা জানাতে ও কাজের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে।’’ সম্প্রতি কলকাতায় অসুস্থ মা-বাবার দেখভাল সেরে বেঙ্গালুরু ফিরেছেন রানা গুহ। বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে তাঁকেও নাম নথিভুক্ত করাতে হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy