ছবি: পিটিআই।
এক সঙ্গে খাওয়াদাওয়া, ওঠাবসা। রাজনৈতিক দলমত নির্বিশেষে এঁরা পরস্পরের বন্ধু। অপেক্ষাকৃত নবীনদের এই বিরল মৈত্রী সবচেয়ে বেশি নজরে আসে সংসদ চলার সময়।
কিন্তু গত তিন-চারদিন এঁদের কাউকে দেখা যাচ্ছে না। আতঙ্কে ঘরের দোর দিয়ে রেখেছেন এনসিপি-র সুপ্রিয়া সুলে, ডিএমকে-র কানিমোজি, বিজেপি-র অনুরাগ ঠাকুর, কংগ্রেসের গৌরব গগৈ, আপনা দল-এর অনুপ্রিয়া পটেলরা। আতঙ্ক— করোনা সংক্রমণের। এই বন্ধুবর্গের প্রায় দশ জন চলে গিয়েছেন ১৪ দিনের কোয়রান্টিনে। লন্ডন ফেরত গায়িকা কণিকা কপূরের সঙ্গে একটি পার্টিতে থাকার পরই ডিএমকে সাংসদ কানিমোজির দেওয়া পার্টিতে গিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ দুষ্মন্ত সিংহ। সেই পার্টিতে ছিলেন ওই বন্ধু গোষ্ঠীর (যাঁদের গড় বয়স অবশ্য ৫০) সাংসদেরা। ছিলেন অনুরাগ ঠাকুর, শরদ পওয়ারের কন্যা সুপ্রিয়া সুলে, তরুণ গগৈয়ের ছেলে গৌরব, অনুপম খেরের স্ত্রী কিরণ খের, বিজেপি-র নিশিকান্ত দুবে প্রমুখ। শুক্রবার বিকেলে যখন জানা গেল কণিকা করোনাভাইরাস আক্রান্ত, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বন্ধুদের মধ্যে। তবে তাঁদের স্বস্তি ধীরে ধীরে ফিরে আসছে দুষ্মন্তের নমুনা পরীক্ষার রেজাল্ট ‘নেগেটিভ’ আসায়।
পোড় খাওয়া রাজনৈতিক নেতারা এই গোষ্ঠীকে দেখেন একটু ভিন্ন চোখে। এক প্রবীণ সাংসদের কথায়, “এঁদের বয়স তুলনামূলকভাবে কম, বড় হয়েছেন প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারে। হাসি-মজা-আনন্দে সময় কাটাতে ভালবাসেন। দলীয় আদর্শের পাশাপাশি সমান্তরাল সামাজিক যাপন থাকাই স্বাভাবিক।’’
আরও পড়ুন: এক দিনে রেকর্ড আক্রান্ত, দেশে মৃত্যু বেড়ে ৯
কানিমোজি পার্টি দিয়েছিলেন স্বামীর চেন্নাই থেকে দিল্লি আসা উপলক্ষে। তবে সেটা ছিল নেহাতই উপলক্ষ। এক সঙ্গে হই হই করে সাম্প্রতিক করোনা চাপ কাটিয়ে ওঠাটাই ছিল মূল লক্ষ্য। তাঁরা ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি, সেই পার্টিই তাঁদের আতঙ্কের মুখে ঠেলে দেবে। সেখানে উপস্থিত এক সাংসদের বক্তব্য, “জনা দশেকের ছোট জমায়েত ছিল। আমরা তখন কেউই জানতাম না কণিকা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত।”
সংসদের সেন্ট্রাল হলে নিয়মিত উপস্থিত থাকা সাংসদদের মতে, এই গোষ্ঠীর নিজস্ব বিধি রয়েছে যা সবসময়ে দলীয় অবস্থানকে মেনে চলে না। অন্য দলের কোনও ‘বন্ধু’ যখন সংসদে বক্তৃতা দেন, তখন তাঁর জন্য আলতো হলেও সমর্থনের বার্তা থাকে অন্যদের শরীরী ভাষায়। ‘গোলি মারো’ মন্তব্যের জন্য বিরোধীরা যখন আক্রমণ করেছেন বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুরকে, তখন ওই গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত বিরোধী দলের বন্ধুদের কিন্তু মুখ ভার হয়েছে। সেন্ট্রাল হলে পিছনের দু’টি সারিতে বসে এঁরা জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন, উচ্চস্বরে হাসি-মশকরা করছেন--- এই দৃশ্য নিত্যনৈমিত্তিক। বাড়ি থেকে আনা খাবার ভাগাভাগি করে খাচ্ছেন, এমনও রোজকার ঘটনা।
পুরনো সাংসদদের মতে, করোনা আতঙ্ক সাময়িক। আগামী অধিবেশনেই ফের দেখা যাবে ডিএমকে-র কানিমোজির আনা ইডলি-সম্বর তৃপ্তির সঙ্গে খাচ্ছেন বিজেপির দুষ্মন্ত। ছোঁয়াছুঁয়ির তোয়াক্কা না করেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy