অনন্ত কুমার হেগড়ে।
গোটা দেশ যখন গর্বিত, দেশের ক্ষমতাসীন জাতীয়তাবাদী দলের নেতাদের তখন ভিন্ন সুর! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ অভিনন্দন জানালেন একটু রয়ে-সয়ে। আর বিজেপির প্রবীণ নেতা অনন্তকুমার হেগড়ে প্রকাশ্যেই রাজনৈতিক আক্রমণে নেমে পড়লেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নোবেল-প্রাপ্তিতে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন দেশের অর্থনীতি নিয়ে অভিজিতের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। টুইটারে অভিজিৎকে বিঁধে অনন্তকুমার লিখেছেন, ‘‘হ্যাঁ, যে মানুষটি পাপ্পুর মাধ্যমে দেশে মূল্যবৃদ্ধি ঘটানো ও কর-হার বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেছিলেন, তাঁকেই স্বীকৃতি দেওয়া হল, দেওয়া হল ২০১৯-এর নোবেল’’ এর সঙ্গে কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গাঁধীর নাম না-করে অনন্তকুমার লিখেছেন, ‘‘পাপ্পু এ বার তাঁর ন্যায়-তত্ত্বের হোতাকে নিয়ে গর্ববোধ করতে পারেন। যখন তার সুবিধা পাওয়ার সুযোগটা হারিয়েছে হতভাগ্য দেশ!!!!!!!!!!’’
লক্ষ্যণীয়, শ্লেষের মাত্রা বাড়াতে টুইট-শেষে দশটি বিস্ময়চিহ্ন জুড়েছেন অনন্তকুমার। সন্দেহ নেই, যাঁর ফাঁকে অনেক না-বলা কথা মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের দলের প্রবীণ নেতাটি। লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেস ‘ন্যূনতম আয় যোজনা’ তথা ‘ন্যায়’ সম্পর্কে পরামর্শ নিয়েছিল ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধ্যাপকের কাছে। নির্বাচনে এই ন্যায়-এর উপরে বড় ভরসা রেখেছিল কংগ্রেস। ইস্তাহারে বলা হয়েছিল, দেশের সবচেয়ে গরিব ২০ শতাংশ পরিবার-পিছু বছরে ৭২ হাজার টাকা দেওয়া হবে, ন্যূনতম আবশ্যিক চাহিদাগুলি মেটাতে। কংগ্রেসের বিশ্বাস ছিল, এই যোজনাই খেলা ঘুরিয়ে দেবে তাদের পক্ষে।
প্রশ্ন ওঠে, এত টাকা আসবে কোথা থেকে? সরকারি কোষাগারে তার সংস্থান কোথায়? এই সূত্রেই অভিজিৎ কংগ্রেসকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে কর বাড়িয়ে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলির জন্য বড় তহবিল গড়ে তুলুক। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে কংগ্রেস ধূলিসাৎ হয়েছে। ন্যায়-ও বাস্তবের জমি পায়নি। তবে অভিজিতের নোবেল জয়ে অভিনন্দন জানাতে গিয়ে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি রাহুল। টুইটারে লিখেছেন, ন্যায়-এর ধারণাটি দিয়ে অভিজিৎ আমাদের সাহায্য করেছিলেন। গরিবি মুছে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করার ক্ষমতা ছিল ওই প্রকল্পের।’’ এর সঙ্গেই রাহুল লেখেন, ‘‘তার বদলে দেশে এখন চলছে মোদীনোমিক্স। দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে যা দারিদ্র বাড়াচ্ছে।’’ ‘পাপ্পু’কে বিঁধে অনন্তকুমারের টুইট তারই জবাব বলে মনে করা হচ্ছে।
দেশের আর এক নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বা তাঁর মতকে পছন্দ করে না গেরুয়া শিবির। ছেড়ে কথা বলেন না অমর্ত্যও। ফোনে কথা বলতেও লোকে কেন ভয় পাবে, তা নিয়ে সম্প্রতিই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘বহু জাতি-ভাষার ভারতকে বোঝার মতো মনের প্রসারই নেই মোদীর।’’
অভিজিৎও মোদীর সমালোচনা করতে পিছপা হননি কখনও। অবসরপ্রাপ্ত আমলা শক্তিকান্ত দাসকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর করার সমালোচনা করে তিনি বলেছিলেন, ‘‘ভয়ের ব্যাপার। দেশের মূল সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য চিন্তা হচ্ছে।’’ অভিজিৎ নোটবন্দিরও সমালোচনা করেছেন প্রকাশ্যে। নোবেল জয়ের পরেও অবস্থান বদলাননি দারিদ্র মোছার পথ খোঁজা এই অর্থনীতিবিদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy