প্রিয়ঙ্কা গাঁধী কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ হতেই পরিবারতন্ত্রের অভিযোগে সরব বিজেপি।
প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢড়াকে এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক নিয়োগে দেশ জুড়ে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উৎসবের মেজাজ। দিল্লি, রায়বরেলী, অমেঠীর পাশাপাশি দেশের প্রায় সর্বত্রই আনন্দ উচ্ছ্বাসে ভেসেছেন দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা। পাশাপাশি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বড় অংশই মনে করছেন, সক্রিয় রাজনীতিতে প্রিয়ঙ্কার অভিষেকের ফসল ঘরে তুলবে কংগ্রেস। তবে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি। পরিবারতন্ত্রের অভিযোগের পাশাপাশি রাহুলের নেতৃত্ব ব্যর্থ হওয়াতেই প্রিয়ঙ্কার অভিষেক বলে কটাক্ষ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ।
এইআইসিসিতে প্রিয়ঙ্কার অন্তর্ভুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়তেই দেশ জুড়ে কংগ্রেস নেতা-কর্মী-সমর্থকরা নতুন করে উচ্ছ্বাসে ভাসছেন। উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের দুই শক্ত ঘাঁটি রায়বরেলী ও অমেঠীতে আতসবাজি-আবিরে চলছে উদযাপন। দিল্লিতেও ২৪ আকবর রোডে কংগ্রেস সদর কার্যালয়ের সামনে উচ্ছ্বাসে মাতেন নেতা-কর্মীরা। দেশের বাকি অংশের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের অগণিত শুভেচ্ছায় ভাসছেন প্রিয়ঙ্কা।
মাস দু’য়েক আগে থেকে হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্য-সহ মোট পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের প্রচারে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগে কংগ্রেসকে বিদ্ধ করেছে বিজেপি। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একাধিক সভায় চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন, একবার অন্তত গাঁধী পরিবারের বাইরের কাউকে দলের সভাপতি করে দেখাক। প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর সক্রিয় রাজনীতিতে পদার্পণের পরের মুহূর্তেই বিজেপি সেই অভিযোগকে আরও উচ্চগ্রামে নিয়ে গিয়েছে। সেই পরিবারতন্ত্রের সঙ্গেই প্রিয়ঙ্কাকে শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে খোঁচাও দিয়েছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী তথা বিজেপি মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ। বলেন, ‘‘প্রিয়ঙ্কাজি কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। আমার শুভেচ্ছা। পরিবারভিত্তিক দলের থেকে এরকম সিদ্ধান্ত অপ্রত্যাশিত নয়। তবে তাঁকে শুধু উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব কেন দেওয়া হল? তাঁর ক্যারিশমা ও ব্যক্তিত্ব রাজনীতির ময়দানে আরও বড় পরিসর দাবি করে।’’
RS Prasad: Priyanka Ji has become General Secy, my good-luck to her. Since party is a family concern, these kinds of postings are nothing unusual, except to say with a caveat, why she has been given limited role of only Eastern UP? Perhaps her persona merited a wider role for her pic.twitter.com/pIMlqsDhE4
— ANI (@ANI) January 23, 2019
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা উত্তরপ্রদেশের নেতা জে পি নাড্ডা বলেন, ‘‘প্রিয়ঙ্কা সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হয়েছেন। কিন্তু সবাই জানেন, পারিবারিক সংস্থা কীভাবে কাজ করে। পরিবারতন্ত্র সম্পর্কে তাঁর কী মত, এ বার রাহুলের সেটা বলা উচিত।’’
আরও পড়ুন: ভোটের আগে রাহুলের মাস্টারস্ট্রোক, কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হলেন প্রিয়ঙ্কা
রাহুল গাঁধী সভাপতি পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর এক বছরের মধ্যেই হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে সাফল্য পেয়েছে কংগ্রেস। তিন রাজ্যেই সরকার গঠন করেছে কংগ্রেস। কিন্তু বিজেপি সেটাকে সাফল্য হিসেবে মানতে নারাজ। প্রিয়ঙ্কার নিয়োগের পর দলের নেতা সম্বিত পাত্র বলেন, ‘‘পরিবারতন্ত্র আরও শক্তপোক্ত করতে প্রিয়ঙ্কার নিয়োগ প্রত্যাশিতই ছিল। একই সঙ্গে কংগ্রেস মেনে নিল যে, রাহুল গাঁধী ফেল করেছেন।’’
Delhi: Congress party workers celebrate outside party headquarters after #PriyankaGandhiVadra was appointed party's General Secretary for Eastern Uttar Pradesh today. pic.twitter.com/2bpSYgfP2O
— ANI (@ANI) January 23, 2019
আরও পড়ুন: ধওয়ন জিতিয়ে ফিরলেন, পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-০ এগিয়ে গেল ভারত
বিজেপি সমালোচনা করলেও কংগ্রেসের এই পদক্ষেপ সদর্থক হিসেবেই দেখেছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। রাজনৈতিক নীতি নির্ধারণকারী জনতা দলের নেতা প্রশান্ত কিশোর যেমন বলেছেন, প্রিয়ঙ্কার সক্রিয় রাজনীতিতে নামা ‘‘ভারতীয় রাজনীতির সবচেয়ে প্রতীক্ষিত অধ্যায়। ঠিক সময়ে এলেন কিনা, সঠিক দায়িত্ব দেওয়া হল কিনা, সেসব সাধারণ মানুষ বিচার করবেন। তবে আমার কাছে এটাই সবচেয়ে বড় খবর যে তিনি শেষ পর্যন্ত রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁকে স্বাগত।’’ স্বাগত জানিয়েছেন অন্যান্য দলের নেতারাও।
কংগ্রেসে অবশ্য সর্বস্তরে এক সুর। প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত সবাই। দিল্লির দু’বারের মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত বলেন, ‘‘শুধু নেতারাই নন, দলের নীচু তলার কর্মীরাও নতুন করে উজ্জীবিত হবেন।’’ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাজ্যসভার সাংসদ রেণুকা চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এটা রাহুলের মাস্টারস্ট্রোক। আমরা সবাই এই সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করে ছিলাম।’’
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy