এক্স রে প্লেটে সেই ছুরি।
ইচ্ছে হয়েছিল ছুরি চেখে দেখার! তাই প্রায় ২০ সেন্টিমিটার লম্বা একটি ছুরি গিলে ফেলেছিলেন। সেটি উদরস্থ করার পরে বেমালুম ভুলেও গিয়েছিলেন তিনি। পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হতে সম্বিত ফিরল। শেষ পর্যন্ত পেট কেটে দিল্লির এমসের চিকিৎসকেরা বার করলেন ওই ছুরিটি। পেট থেকে ছুরি উদ্ধারকে কার্যত বিরল ঘটনা বলছেন এমসের চিকিৎসকেরা।
ঘটনার সূত্রপাত এ মাসের প্রথম দিকে। বাদল (পরিবর্তিত নাম) নামে হরিয়ানার ওই যুবক দীর্ঘ দিন গাঁজার নেশা করে অপ্রকৃতিস্থ হয়ে পড়েছিলেন। চিকিৎসকদের ধারণা, নেশার ঘোরে ২০ সেন্টিমিটার লম্বা ওই ছুরি গিলে ফেলেন ওই যুবক। বাদলের অপারেশনের দায়িত্বে থাকা এমসের গ্যাস্ট্রো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক এন আর দাশ বলেন, ‘‘ছুরিটি খাদ্যনালী দিয়ে নীচে নামার সময়ে শ্বাস বা খাদ্যনালীকে চিরে দিতে পারত। এমনকি, ফুসফুস বা হৃদপিণ্ডে ধাক্কা দিতে পারত। ছেলেটির কপাল ভাল যে তেমন কিছু হয়নি। কিন্তু আরও নীচে নেমে তা লিভারে গিয়ে আঘাত করে। ফলে পেটে অসম্ভব ব্যথা শুরু হয়। তার পরেই পেটের এক্সরে-তে ছুরি ধরা পড়ে।’’ চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া ওই ছুরিটির ধারালো অংশ ১০ সেন্টিমিটার দীর্ঘ। বাকি অংশটি হাতল।
গত ১২ জুলাই দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতাল থেকে বাদলকে এমসে পাঠানো হয়। এমস সূত্রের খবর, সে সময়ে তার শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ হতে শুরু করেছে। সেপ্টেসেমিয়ার লক্ষণ ধরা পড়তে শুরু করেছে। ফুসফুসে জল জমে যায়। লিভারে পুঁজ জমতে থাকে। রক্তে হিমগ্লোবিনের পরিমাণ ছয়ে নেমে আসে। চিকিৎসক দাশের কথায়, ‘‘এর মধ্যে ছিল করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক। প্রাণ বাঁচাতে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’’
আরও পড়ুন: আলিবাবা-কর্তাকে সমন পাঠাল দিল্লির আদালত
অস্ত্রোপচারের আগে প্রায় সাত দিন ধরে কাউন্সিলিং চলে ওই যুবকের। রক্ত দেওয়া হয় যাতে শরীরে হিমগ্লোবিন বাড়ে। শেষে ১৯ জুলাই ওই ব্যক্তির অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে আপারেশন চলে। চিকিৎসক দাশের কথায়, ‘‘ছুরিটি বার করার কারণে রক্তপাত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এমনকি ছুরিটি গেঁথে থাকায় লিভারের কিছু অংশ নষ্ট হয়ে যেতে পারত। সে ক্ষেত্রে তা কেটে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে ধরনের কোনও সমস্যা হয়নি।’’
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আপাতত পেটের নীচের দিকে খাওয়ার নল লাগিয়ে ওই যুবককে তরল খাওয়ার দেওয়া হচ্ছে। আপাতত তিনি সুস্থ আছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy