পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস-এর জওয়ানরা। —নিজস্ব চিত্র।
ছেলেধরা নিয়ে গুজবের জেরে পৃথক ঘটনায় ত্রিপুরায় গণপিটুনিতে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। ছেলেধরা সন্দেহে আগরতলা এবং পশ্চিম ত্রিপুরার মোহনপুর মহকুমার মুড়া পারায় এক ভবঘুরে মহিলা-সহ দু’জনকে পিটিয়ে মারে জনতা। এর জেরে বেশ কয়েকটি জায়গায় জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। অন্য একটি ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে তথ্য সংস্কৃতি দফতরের তরফে গুজব বিরোধী প্রচারে অংশ নেওয়া এক ঘোষককেও উত্তেজিত জনতা পিটিয়ে মারে বলে অভিযোগ।
বুধবার আগরতলায় এক ভবঘুরে মহিলাকে এলাকাবাসী পিটিয়ে মারার ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকালে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার মুড়া পারায় ছেলেধরা সন্দেহে তিন হকারকে ব্যাপক মারধর করে এলাকাবাসী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসের জওয়ানরা। ওই তিনজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় ক্যাম্পে নিয়ে আসেন। কিন্তু ক্ষিপ্ত জনতা সেই ক্যাম্পে ঢুকে হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: মমতার বিরুদ্ধে বেনজির আক্রমণ অমিত শাহের, সরকার ছুড়ে ফেলার ডাক
আরও পড়ুন: সার্জিক্যাল স্ট্রাইককে রাজনৈতিক অস্ত্র করেছে বিজেপি, তোপ কংগ্রেসের
খবর পেয়ে আগরতলা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী রওনা দেয়। অভিযোগ, রাস্তায় উপর গাছ ফেলে তাঁদের পথ আটকানোর চেষ্টা হয়। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে মহকুমাশাসক প্রসূন দে’র উপস্থিতিতে পুলিশ শূন্যে গুলি চালায়। জেলাশাসক সন্দীপ মহাত্মে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
রাজ্য পুলিশের আইজি ভি সৃজেশ জানান, উত্তরপ্রদেশ এবং বিহার থেকে আগত ওই তিন হকাররের মধ্যে জাহির খানের মৃত্যু হয়েছে।জাহিরের সঙ্গী আহত গুলজার আহমেদ, মোহম্মদ খুরশিদ এবংগাড়ির চালক স্বপন মিঞাকে আগরতলা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্ত্তি করানো হয়েছে।
দেখুন ভিডিয়ো
বৃহস্পতিবার বিকেলে দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার সাব্রুম মহকুমার কলাছড়া বাজারে ত্রিপুরা তথ্য সংস্কৃতি দফতরের তরফে সচেতনতা প্রচার চলছিল। সেই প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন সুকান্ত চক্রবর্তী নামে এক ঘোষক। তাদের প্রচারের গাড়ি থামিয়ে বাজারে যখন চা খাচ্ছিলেন সুকান্ত, সেসময় স্থানীয় এক যুবক তাঁর উপর চড়াও হয়। তাঁকে ব্যাপক মারধর করা হয়। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ত্রিপুরার সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর তরফে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত দাবি করা হয়েছে।
রাজ্য কংগ্রেসের মুখপাত্র তাপস দে গোটা ঘটনায় সরকারকেই দায়ী করেছেন। তাঁর দাবি, “মুখ্যমন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রী দু’জনেই সংবাদমাধ্যমের কাছে বিভ্রান্তিমূলক বিবৃতি দিয়েছিলেন।” গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করে তাঁর আরও দাবি, ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের মনে আরও আতঙ্ক ছড়াবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy