Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

সদ্যোজাতের মৃত্যু, উত্তেজনা তমলুক জেলা হাসপাতালে

চিকিত্‌সার গাফিলতিতে সদ্যোজাতের মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল তমলুক জেলা হাসপাতালে। রবিবার সকালে ওই ঘটনার সময় হাসপাতালের এক নার্সকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে প্রসূতির পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই মহিলাকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৪ ০৮:০১
Share: Save:

চিকিত্‌সার গাফিলতিতে সদ্যোজাতের মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল তমলুক জেলা হাসপাতালে। রবিবার সকালে ওই ঘটনার সময় হাসপাতালের এক নার্সকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে প্রসূতির পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই মহিলাকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার দুপুরে হাওড়ার বাগনানের পশ্চিম বাইনান গ্রামের বাসিন্দা নাসিমা বেগম নামে ওই প্রসূতিকে তমলুক জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করার পরই তাঁর পুত্র সন্তান প্রসব হয়। কিন্তু ওই সদ্যোজাতের শারীরিক অবস্থা ভাল ছিল না। তাই তাকে প্রথমে হাসপাতালের এসএনসিইউতে রেখে চিকিত্‌সা শুরু করা হয়। কিন্তু ১২ শয্যার এসএনসিইউতে শয্যা খালি না থাকায় পরে ওই সদ্যোজাতকে জেলা হাসপাতালের শিশু বিভাগে স্থানান্তরিত করা হয়। আর নাসিমাকে প্রসূতি বিভাগে রেখে চিকিত্‌সা শুরু করা হয়। কিন্তু পরে ওই সদ্যোজাতর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। রবিবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ মৃত্যু হয় ওই শিশুর।

এরপরই চিকিত্‌সার গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালের শিশু বিভাগে কর্তব্যরত নার্সকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন নাসিমার পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগ, কর্তব্যরত নার্স বেবি বেরাকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করা হয় এবং তাঁর সামনে থাকা টেবিলের কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে অন্য রোগীর পরিজন ও হাসপাতালের কর্মীরা ছুটে আসেন। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নাসিমার মা রুসিয়া বিবি ও এক আত্মীয়া মাহমুদা বিবিকে আটক করে তমলুক থানার পুলিশ।

বেবীদেবী বলেন, “সকালে ওই শিশুর মৃত্যুর সময় আমি ছিলাম না। তা সত্ত্বেও মৃত শিশুর পরিবারের লোকজন এসে আমাকে মারধর করে ও টেবিলের কাচ ভেঙে দেয়।” রুসিয়া বিবি বলেন, “আমাদের শিশু অসুস্থ থাকায় তাকে এসএনসিইউতে রাখার জন্য বলেছিলাম। সেখানে না রাখার কারণেই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।” হাসপাতালে নার্সকে হেনস্থার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “আমরা হাসপাতালের নার্সের কাছে গিয়ে বলেছিলাম একটু ভাল করে চিকিত্‌সা করলে আমাদের ওই শিশুর মৃত্যু হত না। আমরা কাউকে হেনস্থা বা ভাঙচুর করিনি।”

ওই শিশুর চিকিত্‌সার দ্বায়িত্বে থাকা চিকিত্‌সক অরুণ ভুঁইয়া বলেন, “জন্মের পর থেকেই ওই শিশুর শারীরিক অবস্থা খারাপ ছিল। প্রথমে এসএনসিইউ’তে নিয়ে যাওয়া হলেও সেখানে শয্যা খালি না থাকায় তাকে শিশু বিভাগে রাখা হয়। শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিত্‌সার জন্য অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু পরিবারের লোকজন নিয়ে যায়নি।” জেলা হাসপাতালের সুপার ত্রিদিবেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রুগ্‌ণ ও অসুস্থ সদ্যোজাতর চিকিত্‌সার জন্য হাসপাতালে এসএনসিইউ বিভাগে মাত্র ১২ টি শয্যা রয়েছে। শয্যার অভাবে ওই শিশুকে এসএনসিইউতে রাখা না গেলেও চিকিত্‌সার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও রোগীর পরিজনরা যে ভাবে নার্সকে হেনস্থা করেছে তা ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।”

অন্য বিষয়গুলি:

new born death tamluk hospital agitation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE