চলছে বৈঠক। নিজস্ব চিত্র।
নতুন সরকারের আমলে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর হার শতকরা ৪ ভাগ কমেছে বলে দাবি করলেন মন্ত্রী তথা রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান স্বপন দেবনাথ। বৃহস্পতিবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একাধিক শিশু মৃত্যুর খবর শুনে এমন মন্তব্য করেন তিনি। তবে শিশু বিভাগ পরিদর্শন করেননি স্বপনবাবু।
স্বপনবাবুর অভিযোগ, সংবাদপত্রে শিশু মৃত্যু নিয়ে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা পুরোপুরি ঠিক নয়। তাঁর দাবি, “আগে বর্ধমান মেডিক্যালে শিশুমৃত্যুর হার ছিল ৭.৪। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩.৬-এ।” এ দিন হাসপাতালের সুপার, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুশ্রী রায়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। সেখানে হাসপাতালের তরফে কোনও গাফিলতি ছিল কি না, বারবার চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীদের বিরুদ্ধে ঠিকমতো চিকিৎসা না করা ও রোগীর বাড়ির লোকেদের সঙ্গে দুর্ব্যহারের অভিযোগ ওঠা নিয়েও প্রশ্ন করেন তিনি। স্বপনবাবু বলেন, “আমি বলেছি, রোগী বা তাদের বাড়ির লোকেদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা চলবে না।”
অনুষ্ঠানে হাজির জামালপুরে বিধায়ক তথা রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য উজ্জ্বল প্রামাণিক বলেন, “বেশির ভাগ শিশুই ম্যানেনজাইটিস নিয়ে আসে। ওই রোগের আশঙ্কাজনক অবস্থা ঠেকাতে আমরা মা ও শিশুদের আগাম প্রতিষেধকের আওতায় আনবার জন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে একটি পরিকল্পনা নিতে বলেছি।”
বুধবার রাতেও বর্ধমান মেডিক্যালে একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ফলে সবমিলিয়ে দু’দিনে ১০টি শিশুর মৃত্যু হল জানিয়েছেন মেডিক্যাল সুপার তথা এমএসভিপি উৎপল দা।ঁ তবে বৃহস্পতিবার ক’জন শিশু মারা গিয়েছে তা বলতে পারেননি তিনি। উৎপলবাবু বলেন, “এই পরিসংখ্যান শুক্রবার মিলবে।” উৎপলবাবু আরও জানান, ওই দু’দিনে যে ১০টি শিশু মারা গিয়েছে, তাদের ৩ জনকে বীরভূম থেকে রেফার করা হয়েছিল, ২ জন মঙ্গলকোট থেকে ও একজন ভর্তি হয়েছিল বর্ধমানের বাজেপ্রতাপপুর থেকে। বয়স ছিল ২ থেকে ১৬ দিন। ওজন ছিল ৯০০ গ্রাম থেকে ২ কিলোর মধ্যে। অনেকে রোগেও আক্রান্ত ছিল। ফলে ওই শিশুদের বাঁচানো যায়নি। ওই ঘটনা মোটেই অস্বাভাবিক নয় বলেও তাঁর দাবি।
এ দিকে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা সরাসরি শিশুমৃত্যু নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৃহস্পতিবার। তাঁর দাবি, বারবার বৈঠক করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে রোগীদের চিকিৎসার দিকে উপযুক্ত নজর দিতে বলা হলেও কাজের কাজ হয়নি। জেলা প্রশাসনের আরেক কর্তার দাবি, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বারবার বলা হয়েছে রাধারানি ও জরুরী বিভাগের নিরাপত্তা রক্ষীদের পাল্টাতে। এই দুটি বিভাগের সাফাই কাজ যাতে ঠিক মতো হয় সেদিকেও নজর রাখতে। কিন্তু তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy