শরীরে ফাইলেরিয়া বা গোদ রোগের জীবাণু রয়েছে কি না তা জানার জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা শুরু হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে একাধিক দল জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়াদের রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে দেখছে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, “জেলায় ফাইলেরিয়া রোগ নির্মূল করার লক্ষ্য নিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গিয়ে এই পরীক্ষা কর্মসূচি চলছে।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাইক্রো ফাইলেরিয়া নামে এক পরজীবী ফাইলেরিয়া রোগের জন্য দায়ী। এই পরজীবী স্ত্রী কিউলেক্স মশার কামড়ের মাধ্যমে অসুস্থ ব্যক্তির দেহ থেকে সুস্থ ব্যক্তির দেহে সংক্রামিত হয়ে থাকে। এই রোগে শারীরিক বিকৃতি হয়। সাধারণভাবে ‘গোদ’ নামে পরিচিত এই রোগের জেরে সাধারণত বারবার জ্বর হয়, হাত-পা ফুলে ওঠে ও যন্ত্রণা হয়। ভারতের ১৫ টি রাজ্য ও ৫ টি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের মোট ২৫০ টি জেলা ফাইলেরিয়া প্রবণ হিসেবে চিহ্নিত। দুই পড়শি রাজ্য ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ ফাইলেরিয়া প্রবণ এলাকা হিসেবে দেশের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে। উপকূলবর্তী পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ফাইলেরিয়া রোগপ্রবণ জেলা হিসেবে চিহ্নিত।
জাতীয় সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় ফাইলেরিয়া নির্মূলের জন্য এখন দেশ জুড়েই অভিযান চালানো হচ্ছে। লক্ষ্য আগামী ২০১৫ সালের মধ্যে দেশ থেকে ফাইলেরিয়া নির্মূলকরণ। সেই কর্মসূচিতেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় গত পাঁচ বছর ধরে জেলায় গণওষুধ সেবন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এবারই প্রথম রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে ফাইলেরিয়ার জীবাণু আছে কিনা দেখা হচ্ছে। রক্তে ফাইলেরিয়া রোগের জীবাণু মিললে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রান্সমিশন অ্যাসেসমেন্ট সার্ভে নামে এই কর্মসূচিতে মূলত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের রক্তের নমুনা নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে ফাইলেরিয়ার পরজীবী রয়েছে কি না।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ৩২৫৩ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে বিভিন্ন এলাকার ২০৪ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে বাছাই করে ওই সব বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এজন্য জেলায় ১৫টি দল তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি দলে একজন চিকিৎসক, একজন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট, প্যারামেডিক্যাল স্টাফ-সহ মোট ৬ জন রয়েছে। গত ৯ জুন থেকে জেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওই দল গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করছে। আগামী ১৮ জুন পর্যন্ত জেলায় এই সমীক্ষা কর্মসূচি চলবে। বুধবার নন্দকুমার ব্লকের আলাশুলি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি দল শিশু পড়ুয়াদের রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করছে। তবে ওই বিদ্যালয়ের ৩৯ জন ছাত্র-ছাত্রীর কারোরই রক্তে ফাইলেরিয়া রোগের জীবাণু মেলেনি। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরূপকুমার ভৌমিক বলেন, “ফাইলেরিয়া বা গোদ রোগের বিষয়ে স্কুল পাঠ্যে পড়ানো হলেও অনেকেই এ বিষয়ে সচেতন নই। ছাত্র-ছাত্রীদের রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষার কর্মসূচি ভাল পদক্ষেপ।”
ডুবে মৃত্যু। তাজপুরের সমুদ্রে মঙ্গলবার বিকেলে স্নান করতে নেমে তলিয়ে গেলেন এক ব্যক্তি। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম অনুপ রায় (৩৩)। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুপবাবু-স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ১২ জনের সঙ্গে সোমবার দিঘায় আসেন। মঙ্গলবার দিঘা থেকে তাজপুর সৈকতে বেড়াতে যান। বিকেলের দিকে তিনি সমুদ্রস্নানে নেমে তলিয়ে যান। সন্ধ্যার ভাটায় তাঁর দেহ ভেসে আসে। রামনগর থানার পুলিশ দেহ ময়না-তদন্তের জন্য কাঁথি হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
চিকিৎসক নিয়োগের দাবিতে পথ অবরোধ
নিজস্ব সংবাদদতা • বাঘমুণ্ডি
গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়নের দাবিতে ফের বিক্ষোভ, পথ অবরোধ হল পুরুলিয়া জেলায়। কোটশিলার পরে এ বার বাঘমুণ্ডিতে। সম্প্রতি কোটশিলায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগে চিকিৎসক না থাকায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। বুধবার বিজেপি-র নেতৃত্বে বাঘমুণ্ডির পাথরডি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চিকিৎসক নিয়োগের দাবিতে পথ অবরোধ করা হয়। এ দিন সকাল থেকে দীর্ঘ ক্ষণ ধরে বাঘমুণ্ডি-বলরামপুর রাস্তায় অযোধ্যা মোড়ে অবরোধ চলে। পরে দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আশ্বাস মেলার পরে অবরোধ ওঠে। স্থানীয় ও জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের মে মাসে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় বাঘমুণ্ডির বিএমওএইচ লম্বোদর ওরাংয়ের। তার পর থেকেই ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছেন এক জন মাত্র চিকিৎসক। কিন্তু গোটা ব্লকের রোগীদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া তাঁর একার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, এক জন চিকিৎসকের পক্ষে এত রোগী দেখা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে, সামান্য রোগের ক্ষেত্রেও অন্যত্র রেফার করে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়া বাঘমুণ্ডি থেকে পুরুলিয়া সদর-সহ পাশের বলরামপুর ব্লকের দূরত্ব অনেকটা হওয়ায় সেখানকার হাসপাতালগুলিতে যেতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের। স্থানীয় বিজেপি নেতা শঙ্কর মাহাতো বলেন, “প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসক নিয়োগ-সহ স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতির দাবিতে বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। আমরাও দলের তরফে চিকিৎসক নিয়োগের দাবি জানিয়েছি।” পুরুলিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মানবেন্দ্র ঘোষ বলেন, “শুধু বাঘমুণ্ডি নয়, গোটা জেলা জুড়েই চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। বাঘমুণ্ডিতে এ দিনই জরুরি ভিত্তিতে এক জন চিকিৎসককে নিয়োগ করা হয়েছে। আরও কাউকে নিয়োগ করা যায় কি না, দেখা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy