পোস্টারে লেখা ‘ডিপার্টমেন্ট এথিক্স আন্ডার মেনটেন্যান্স’। নিজস্ব চিত্র।
ছাত্র আন্দোলনের চাপে যাদবপুর কাণ্ডে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে ফের শোকজ করল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চলতি সপ্তাহের শুক্রবারের মধ্যে এই শোকজের জবাব দিতে হবে অধ্যাপক অভিষেক দাস এবং অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর সান্ত্বন চট্টোপাধ্যায়কে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শোকজ করলেও নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের জেরে সময় বেঁধে দিয়ে তাই আবার শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ, এমনটাই জানা গিয়েছে।
এই বিষয়ে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেন, “আমি দীর্ঘ ২০ বছর ধরে অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত, তাই কাজের প্রতি সততা বজায় রেখে যা করার করেছি। আমি এই ধরনের বিষয় নিয়ে অনুসন্ধানে সব রকম সহযোগিতা করতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। স্বাভাবিক গোপনীয়তার কারণ উপাচার্যের সঙ্গে এই বিষয়ে যা কথা হবে, তা প্রকাশ্যে বলব না।”
একই সঙ্গে সোমবার গণজ্ঞাপন বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধানের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়ারা। সোমবার তালা দেওয়ার পাশাপাশি, ঘরের দরজায় পোস্টারও লেখা হয়, ‘ডিপার্টমেন্ট এথিক্স আন্ডার মেনটেন্যান্স’। এর আগে খাতা না দেখে কেন নম্বর দেওয়া হয়েছে, সেই বিষয়ে কৈফিয়ত চেয়ে বিভাগীয় প্রধান ও ডিনকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখানো হয়েছিল।
এই বিষয়ে ছাত্রনেতা কিশলয় রায় বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে হয়ে চলা অনিয়মের বিরুদ্ধে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়ারা প্রতিবাদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যত দিন প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান এবং বাকিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেওয়া হচ্ছে, তত দিন আমরা এই আন্দোলনে অনড় থাকব। ক্লাস না করার বিষয়টিও বহাল থাকছে।”
বেশ কয়েকদিন ধরেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা এবং গণজ্ঞাপন বিভাগকে ঘিরে বিতর্ক চলছে। অভিযোগ, ওই বিভাগের ২০২৩-’২৫ ব্যাচের ‘ল অ্যান্ড এথিক্স’ বিষয়ের ৫০টি খাতা না দেখেই নম্বর বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরেই সরব হয় ক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের একাংশ। গত সোমবার উপাচার্যের ঘরের বাইরে অনশনও শুরু হয়। শেষে রাতের দিকে কর্তৃপক্ষ লিখিত ভাবে শুক্রবারের মধ্যে ফলপ্রকাশের প্রতিশ্রুতি দিলে অনশন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
এর পরেও ফলপ্রকাশ না হওয়ায় ২০২৩-’২৫ ব্যাচের পড়ুয়ারা বৃহস্পতিবার বিভাগে গিয়ে তাঁদের ইন্টারনাল পরীক্ষার খাতা দেখতে চান। খাতার বান্ডিল খুলে দেখা যায়, তাতে কোনও কলমের আঁচড় পর্যন্ত নেই! তার জেরে বিক্ষোভ শুরু হয়।
এর পরেই পড়ুয়ারা অন্তর্বর্তী উপাচার্যের কাছে এক্সটারনাল সিমেস্টারের খাতা দেখানোর দাবি তোলেন। সিদ্ধান্ত হয়, শুক্রবার সেই খাতা পরীক্ষার্থীদের দেখানো হবে। সেই মতো শুক্রবার বিভাগীয় প্রধান পার্থসারথি চক্রবর্তী খাতা দেখান। উপস্থিত ছিলেন স্বাধীন পর্যবেক্ষক তথা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান ইমনকল্যাণ লাহিড়ী, ডিন এবং পড়ুয়াদের দুই প্রতিনিধি।
পড়ুয়ারা আগেই জানিয়েছিলেন, অভিযুক্ত দুই অধ্যাপককে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) না করা হলে সোমবার থেকে ক্লাস করবেন না। এক পড়ুয়ার দাবি, অন্তর্বর্তী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত দুই অধ্যাপককে শোকজ় নোটিস পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছেন। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্যের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘‘পড়ুয়ারা অভিযোগ করেছেন। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy