নানা ভাবে চেষ্টা চালিয়েও রাজ্যে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের দাপট পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। ওই মারণ রোগে আক্রান্ত বীরভূমের এক রোগী বৃহস্পতিবার কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গিয়েছেন।
রফিকুল রহমান (৬৫) নামে বীরভূমের মুরারইয়ের ওই রোগী ২৬ অগস্ট নীলরতনে ভর্তি হয়েছিলেন। বুধবার রাত থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। মৃত্যু হয় পরের দিন সকালে। হাসপাতালের তরফে ওই দিন দুপুরেই মৃত্যুর খবর পাঠানো হয়েছিল স্বাস্থ্য ভবনে। তবে স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী সরকারি ভাবে তা জানান শুক্রবার।
জাপানি এনসেফ্যালাইটিস বা জেই-তে আক্রান্ত হয়ে কলকাতা পুলিশের এক কর্মী কয়েক দিন আগে মহানগরীর এক হাসপাতালে মারা যান। একবালপুরে তাঁর বাড়ির আশপাশ থেকে ১২ জনের রক্তের নমুনা স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পাঠিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। কারণ, কোনও এলাকায় জেই ছড়িয়ে পড়লে সংলগ্ন এলাকায় অন্তত ২৫০-৩০০ জনের শরীরে তার ভাইরাস মেলার কথা। কিন্তু ট্রপিক্যালে পরীক্ষার পরে ১২টি নমুনার মধ্যে কোনওটিতেই জেই-র ভাইরাস মেলেনি বলে জানান স্বাস্থ্য অধিকর্তা। তাঁর কথায়, “ওই ব্যক্তি ভিন্ রাজ্যে জেই-তে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে অনুমান করা হচ্ছিল। কলকাতায় তাঁর বাড়ি সংলগ্ন এলাকার ১২টি নমুনায় ওই রোগের ভাইরাস না-মেলায় তা সত্যি প্রমাণিত হল।”
দক্ষিণবঙ্গে দু’জনের অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিক সিনড্রোম বা এইএস-এ আক্রান্ত বলে এ দিন স্বাস্থ্য ভবনের দৈনিক বুলেটিনে জানানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জন উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা। তিনি ভর্তি আছেন বারাসত হাসপাতালে। দ্বিতীয় জনের চিকিৎসা চলছে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। স্বাস্থ্য ভবন থেকে জানানো হয়েছে, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তসলিমা বিবি নামে এক মহিলা ভর্তি ছিলেন। ট্রপিক্যালে তাঁর সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড পরীক্ষায় জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে বলে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকদের সন্দেহ হওয়ায় আবার পরীক্ষার জন্য তাঁর রক্তের সিরাম পাঠানো হয় ট্রপিক্যালে। এ বারের রিপোর্ট নেগেটিভ। অর্থাৎ সিরামে জেই ভাইরাস মেলেনি।
এর মধ্যে স্বাস্থ্য দফতরের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ডেঙ্গি। কলকাতায় ডেঙ্গি-রোগী প্রায় সব হাসপাতালেই রয়েছেন। হুগলির খানাকুলেও ডেঙ্গি ছড়িয়েছে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্য দফতরের। সেখানে ১২ জন জ্বরে আক্রান্ত। তাঁদের মধ্যে ন’জনের রক্ত পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে ট্রপিক্যালে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা জানান, রোগীদের শারীরিক অবস্থা বিচার করে প্রাথমিক ভাবে ডেঙ্গি বলেই মনে হচ্ছে। “ওই অঞ্চলে প্রচুর এডিস ইজিপ্টাই মশার লার্ভা পেয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। এই মশাই ডেঙ্গি ছড়ায়। স্বাস্থ্য দফতর যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে,” বলেছেন বিশ্বরঞ্জনবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy