ডায়াবিটিস সারাতে ভরসা ব্যায়াম। ছবি: পিক্সাবে।
ডায়াবিটিস এখন ঘরে ঘরে!রোগটাকে কব্জা করার আগে সংক্ষেপে বুঝে নিন এর ধরনধারণ। ডায়াবিটিস দুই ধরনের। টাইপ ওয়ান ডায়াবিটিসে শরীরের প্রতিরোধক সিস্টেম প্যানক্রিয়াসের ইনসুলিন উৎপাদনকারী বিটা সেল ধ্বংস করে। এটা অল্প বয়সে হতে পারে। সাধারণত জিনঘটিত কারণে হয়। টাইপ টু ডায়াবিটিস হয় স্থূলতা, অতিরিক্ত মেদ, বসে বসে জীবনযাপন ইত্যাদি কারণে। টাইপ টু-তে শরীরে ইনসুলিন প্রতিরোধ তৈরি হয়। গোড়ার দিকে প্যানক্রিয়াস চেষ্টা করে বেশি ইনসুলিন উৎপাদন করতে। কিন্তু কিছুদিন বাদে সেটা আর পারে না।
ডায়বিটিস নিয়ে দুনিয়া জয়
গোড়াতেই বলি, ডায়াবিটিস মানেই জীবন একদম শেষ নয়। দুনিয়ার নানা পেশার নানা মানুষ ডায়াবিটিস নিয়ে অসাধ্য সাধন করেছেন। মহিলা টেনিস খেলোয়াড় বিলি জিন কিং, পাকিস্তানি ক্রিকেটার ওয়াসিম আক্রম, হলিউডের হ্যাল বেরি, টম হ্যাঙ্কস, বলিউডের সোনম কপূর ডায়াবিটিসকে কোনও বাধা মনে করেননি। আপনারাও পারবেন।
এক্সারসাইজ বড় অস্ত্র
রক্তে প্রয়োজনের বেশি গ্লুকোজ থাকলে শরীরে নানা বিপদ আসতে পারে। এই গ্লুকোজকে যে কোনও উপায়ে খরচ করতে হবে। এর জন্য এক্সারসাইজ আর খাদ্যাভ্যাসে নিয়ন্ত্রণ ডায়াবিটিসকে বাগে আনার সেরা বাজি। ডায়াবিটিস ধরা পড়লেই ডাক্তারবাবু বলেন, ‘‘মশাই এক ঘণ্টা হাঁটুন।’’ হাঁটলে অবশ্য রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে। কিন্তু এ জন্য এক ঘণ্টা হাঁটার প্রয়োজন নেই। আর হাঁটাই একমাত্র এক্সারসাইজ নয়। চলুন দেখে নিই, ডায়াবিটিসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এক্সারসাইজের কী কী অ্যান্টিবায়োটিক আমাদের হাতে আছে।
হাঁটার কৌশল রপ্ত করুন।
আরও পড়ুন: ডায়াবিটিসকে রুখে দিতে চাইলে এ সব অভ্যাস রপ্ত করুন আজ থেকেই
রকমফের হাঁটা
সহজতম এক্সারসাইজ হল হাঁটা। আক্ষরিক অর্থে কোনও টেকনিক লাগে না। রাস্তায় নেমে পড়লেই হল। কিন্তু এক ঘণ্টা হাঁটলে অনেকের আবার হাঁটুতে টান ধরে। বিশেষ করে যাঁদের স্থূলতা আছে। বুদ্ধি খরচ করলে এক ঘণ্টা হাঁটায় যা ক্যালোরি খরচ হয় তা ২৫-৩০ মিনিটের হাঁটায় সম্ভব। যেমন, ঘড়ি ধরে ১ মিনিট জোরে হাঁটুন। তার পর ১ মিনিট আস্তে হাঁটুন। এই প্রক্রিয়া চলুক ২৫ থেকে ৩০ মিনিট। পদ্ধতিটা রপ্ত করার পর ২ মিনিট জোরে ১ মিনিট আস্তে এই অনুপাতটা নিয়ে আসুন। এতে আখেরে এক ঘণ্টার চেয়ে বেশি ক্যালোরি খরচ হয়। হাঁটায় একঘেয়েমি আছে। এটা কাটাতে রাস্তা বা পার্ক বদলে হাঁটুন।
বাড়িতে হাঁটা
অনেকের অফিস যাওয়ার তাড়া। অনেকের বাড়ির কাছে পার্ক বা মাঠ নেই, রাস্তা ঘিঞ্জি। চিন্তার কারণ নেই। বাড়িতে হাঁটুন। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে স্পট ওয়াকিং করুন। দু'হাতে দু'টো এক লিটারের জলের বোতল ধরে জায়গায় দাঁড়িয়ে হাত পা চালিয়ে ভাবুন যেন হাঁটছেন। ১-২ মিনিট করার পর বিশ্রাম নিন ১ মিনিট। ১০-১৫ বার রিপিট করুন। হয়ে গেলে আপনার হাঁটার গল্প।
সেরা বাজি
বেশিরভাগ মানুষ জানেন না, জোর বাড়ানোর ব্যায়াম আসলে সেরা বাজি। হাঁটার চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী ওষুধ হল জোর বাড়ানোর ব্যায়াম। কেন? আপনার সাধ্যমতো ৫-৬ বার বাড়ানোর ব্যায়াম পর পর করলে একদিকে শরীরে পেশি তৈরি হয়। অন্যদিকে, হার্ট রেটও চড়চড়িয়ে বাড়ে। পেশি বাড়লে বিপাকের হার বেড়ে বেশি ক্যালোরি খরচ হবে। আবার হার্ট রেট বাড়ল মানে হাঁটার কার্ডিয়ো গুণটাও পেয়ে গেলেন। মানে বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি। হঠাৎ সুগারের মাত্রা কমে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে। তার জন্য এক বোতল চিনি মেশানো জল সঙ্গে রাখুন।
ট্রেনারের কাছে শিখে নিন টেকনিক।
আরও পড়ুন: কিছু বদভ্যাস ডায়াবিটিস ডেকে আনে, জানেন তো?
টেকনিক শিখুন
বাড়িতে কোনও ট্রেনার ডেকে বা জিমে গিয়ে জোর বাড়ানোর ব্যায়াম, যেমন স্কোয়াট, স্টেপ আপ, পুশ আপ, রোয়িং, শোল্ডার প্রেস এগুলোর টেকনিক শিখে নিন। গোড়াতে ডাম্ববেল কেনার দরকার নেই। ২ লিটারের জলভর্তি বোতল দিয়ে কাজ চালান। মজা পেয়ে গেলে ডাম্ববেল কিনুন। কিনতে পারেন রেসিস্ট্যান্স টিউবও।
হাঁটা ও জোর বাড়ানোর কম্বিনেশন
খোলা জায়গায় হাঁটলে স্ট্রেস কমে। অনেকেই হাঁটতে ভালবাসেন। সুতরাং হাঁটা বন্ধ করার দরকার নেই। বরং সপ্তাহে তিন দিন হাঁটুন আর তিন দিন করুন জোর বাড়ানোর ব্যায়াম। এই দুইয়ের শক্তিশেলে দেখবেন ডায়াবিটিস একদম কুপোকাত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy