যে ধাতুর গয়না পরছেন, তার শুদ্ধতার উপর একটি সিলমোহর বসায় হলমার্ক।
কোভিডবিধি মেনেই জোর কদমে চলছে পুজোর কেনাকাটা। পোশাকের পাশাপাশি গয়নাগাঁটিও কিনছেন অনেকেই। নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন, সব সোনার গয়নার ভিতরের দিকে কিছু অক্ষর ও চিহ্ন খোদাই করা থাকে। অনেকেই জানেন, এই খোদাই করা অংশকে বলে হলমার্ক। কিন্তু জানেন কি এই হলমার্কের চল কোথা থেকে শুরু হল? এর ইতিহাসই বা কী?
যে ধাতুর গয়না পরছেন, তার শুদ্ধতার উপর একটি সিলমোহর বসায় হলমার্ক। ইউরোপে ক্রেতার সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার জন্য প্রথম যে ক’টি ধাপ নেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে একটি ছিল সোনার গয়নায় হলমার্ক বসানো। এই রীতির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ত্রয়োদশ শতকে, ফ্রান্সে নবম লুই ও ইংল্যান্ডে প্রথম এডওয়ার্ডের আমলে। জনসাধারণের জন্য বিক্রির আগে তখন গয়নায় বসত কিছু নির্দিষ্ট চিহ্ন এবং তৈরির তারিখ। তার পরের শতকেই ১৩২৭ সালে রাজা তৃতীয় এডওয়ার্ড ‘ওয়ার্শিপফুল কোম্পানি অব গোল্ডস্মিথস’-কে ফরমান দিলেন হলমার্ক দেওয়ার। এই সংস্থার হেডকোয়ার্টার ছিল লন্ডন শহরের ‘গোল্ডস্মিথস হল’-এ। সেখান থেকেই আসছে হলমার্ক শব্দটি।
শুদ্ধ অবস্থায় যে কোনও ধাতু খুবই নরম এবং ভঙ্গুর। তাই গয়নায় ব্যবহারযোগ্য করার আগে তা পোক্ত করতেই হয়। পোক্ত করার জন্য সোনা, রুপো বা প্ল্যাটিনামের সঙ্গে প্রায়ই তামা বা অন্য কোনও ধাতু মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করা হয়। নতুন এই শংকর ধাতু আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তপোক্ত। আর এই নতুন দ্রব্যের মান নিয়ে ক্রেতাকে আশ্বস্ত করতে বিক্রির আগে তার গায়ে দেওয়া হয় হলমার্ক। গয়না কেনার সময়ে হলমার্কের উপস্থিতি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তা দেখে একজন ক্রেতাও বুঝতে পারেন কতটা সোনা আছে তাঁর গয়নায়।
দু’ দশক আগে ভারতে প্রথম হলমার্ক ব্যবহারের চল শুরু হয়। তবে আগে তা বাধ্যতামূলক ছিল না। ভারত সরকার চলতি বছরের ১৬ জুন সোনার গয়নার ক্ষেত্রে হলমার্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে দেয়। ‘বিউরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড’ বা ‘বিআইএস’-এর উপর আপাতত হলমার্ক দেওয়ার দায়িত্ব ন্যস্ত। এখনও পর্যন্ত ১৪, ১৮ ও ২২ ক্যারাট সোনার উপরে হলমার্ক দেওয়ার অনুমতি আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy