জাপানি এনসেফ্যালাইটিস এবং অ্যাকিউট এনসেফ্যালিইটিস সিনড্রমে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু চলছেই উত্তরবঙ্গে।
রবিবার দুপুরের পর থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত এইএস-এ আক্রান্ত হয়ে আরও দুই জনের মৃত্যু হল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। জানুয়ারি থেকে এই হাসপাতালে জেই এবং এইএসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫৯ জন। তার মধ্যে জেইতে মারা গিয়েছেন ২৫ জন। জেই এবং এইএস নিয়ে আরও অন্তত ১৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছে এই হাসপাতালে। তাদের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। সিসিইউ’তে অন্তত ৫ জন ভর্তি রয়েছেন।
রবিবার মৃতের নাম কৃষ্ণা বর্মন (৪৮)। বাড়ি দিনহাটায়। ৮ অগস্ট তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছিল। ৯ অগস্ট তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এ দিন সকালে সিসিইউ’তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শিলিগুড়ির শিমূলবাড়ি এলাকার বাসিন্দা টুকমি মুণ্ডা (১৭)। ২৬ জুলাই থেকে তিনি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
জানুয়ারি থেকেই জেই-এইএসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছিল। পরিস্থিতি গত বছরের মতো ভয়াবহ হতে পারে আঁচ করে মে মাসের মাঝামাঝি স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বয়স্কদের জেই প্রতিষেধক টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা হয়। তবে উত্তরবঙ্গের সমস্ত এলাকার বাসিন্দাদের প্রতিষেধক দেওয়া যায়নি। আলিপুরদুযারের ৪টি ব্লকে, জলপাইগুড়ির ২টি ব্লকে এবং দার্জিলিং জেলার তথা শিলিগুড়ির ২টি ব্লকের বাসিন্দাদের প্রতিষেধক টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়ছিল। ১৪ জুলাই থেকে শিলিগুড়ি মহকুমার খড়িবাড়ি ব্লকে একই ভাবে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা হয়। তবে পর্যাপ্ত টিকা সরবরাহের অভাবে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার মোট ৫৪টি ব্লকের মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই টিকাকরণ করা যায়নি। তাতে জুলাই মাসে জেই এবং এইএস ফের ভয়াবহ আকার নেয়। ওই মাসে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালেই ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দার্জিলিং তথা শিলিগুড়ি মহকুমার বিভিন্ন এলাকা থেকে আক্রান্তদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে অন্তত দুই শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন।
সম্প্রতি পরিস্থিতি ঘুরে দেখে যান কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। বসতি এলাকার কাছাকাছি শুয়োর থাকা জেই সংক্রমণের একটা বড় কারণ বলেও তাঁরা জানিয়েছিলেন। তাছাড়া রোগ সংক্রমণ ঠেকাতে খেতে জল জমে থাকার মতো বিষয়ে সাবধনতা নেওয়ার জন্যও তারা পরামর্শ দেন। চিকিৎসকদের একাংশ জানান, অগস্ট মাসেও জেই এবং এইএসের প্রকোপ থাকবে বলেই মনে হচ্ছে। তবে আগামীর কথা ভেবে এখনই বয়স্ক বাসিন্দাদের সকলের টিকাকরণের ব্যবস্থা করা দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy