টিএলসি ডায়েটে কমতে পারে কোলেস্টেরলের মাত্রা
হাই কোলেস্টেরল এখন ঘরে ঘরে৷ ওষুধ খেয়ে তাকে সামলানো যায় অবশ্যই৷ কিন্তু সে ওষুধ সকলের সহ্য হয় না৷ ক্লান্তি বেড়ে যায়৷ আবার ওষুধ না খেলেও নয়। কারণ একে বাড়তে দিলে, কিছু ক্ষেত্রে হৃদরোগের আশঙ্কা বেড়ে যায়৷ কাজেই এমন যদি কোনও খাবার থাকে, যা খেলে এই বিপদ কাটানো যায়, তার চেয়ে ভালো আর কিছু হতে পারে না৷ থেরাপিউটিক লাইফস্টাইল চেঞ্জেস বা সংক্ষেপে টিএলসি ডায়েটে আছে সেই সমাধানের রাস্তা৷ এমনটাই বলছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ৷
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সব্যসাচী সেনের মতে, ‘‘কোলেস্টেরল বাড়লে টিএলসি ডায়েট করতে হবে৷ ব্যায়ামও করতে হবে৷ তাতেই যে রোগ পুরো সেরে যাবে, এমন নয়৷ প্রকোপ কমবে৷ কমবে ওষুধের মাত্রা৷ ফলে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কমবে৷ কাজেই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো চিকিৎসার পাশাপাশি এই ডায়েট মেনে চলতে হবে৷’’ শুধু কোলেস্টেরল নয়, এতে কমে রক্তচাপ, সুগার, কোমরের মাপ, ইস্কিমিক হৃদরোগের আশঙ্কা৷
ডায়েটের নিয়ম
যত ক্যালোরি খাবার খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, খেতে হবে স্রেফ ততটুকু৷ মোট ক্যালোরির ২৫ থেকে ৩৫ শতাংশ যেন আসে উপকারি ফ্যাট থেকে৷ স্যাচুরেটেড ফ্যাট ৭ শতাংশের বেশি থাকলে চলবে না৷ কোলেস্টেরল যেন ২০০ মিলিগ্রামের কম থাকে৷ ১০ থেকে ২৫ গ্রাম সলিউবল ফাইবার খেতে হয় রোজ৷ দিনে অন্তত দু’গ্রাম উদ্ভিজ্জ স্টেরোল বা স্ট্যানোল খেতে হয়৷ নিয়মিত ব্যায়াম করতে হয়৷
কী কী খাবেন
শাক–সবজি, ফল, খোসাওলা শস্যদানা (ব্রাউন রাইস, আটা–বাজরা–রাগি ইত্যাদির রুটি, ওট্স, কিনোয়া), বাদাম, অন্য বীজ, প্রচুর ফাইবার উপকারি ফ্যাট, উদ্ভিজ্জ প্রোটিন চামড়া ছাড়ানো টার্কি ও চিকেন খান মাপমতো৷ দেশি মুরগি খেতে পারলে ভাল৷ মিষ্টি জলের মাছের পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছও খেতে পারেন৷
খাবেন না কী কী
চর্বিসমৃদ্ধ রেড মিট৷ সসেজ, বেকন, হট ডগ৷ চামড়া না ছাড়ানো টার্কি বা মুরগির মাংস৷ মাঠা না তোলা দুধ। এই দুধে বানানো খাবার৷ প্রসেস করা খাবার যেমন, কোনও বেক করা খাবার, কুকিজ, পটেটো চিপ্স, ক্র্যাকার৷ ভেজে বানানো যে কোনও খাবার৷ ডিমের কুসুম৷
‘‘ডায়েট মেনে চলার পাশাপাশি, সপ্তাহে পাঁচ দিন কম করে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন৷ ধূমপান করবেন না৷ মানসিক চাপ কম রাখার চেষ্টা করুন৷’’ জানালেন সব্যসাচী।
তবে এই ডায়েটের কিছু সমস্যাও আছে। সেগুলো দেখে নেওয়া যাক।
এই ডায়েটে এত হিসেব করে চলতে হয়, যা কাঁটায় কাঁটায় মেনে চলা কঠিন৷ বিশেষ করে স্যাচুরেটেড ফ্যাট, কোলেস্টেরল ও ফাইবারের হিসেব৷ যে সব গবেষণার উপর ভিত্তি করে এই ডায়েট বানানো হয়েছিল, তার বেশ কিছুই আজ ভুল প্রমাণিত৷ সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে যেমন জানা গিয়েছে, খাবারে কোলেস্টেরলের পরিমাণের সঙ্গে রক্তে কোলেস্টেরল বাড়ার সম্পর্ক কম৷ স্যাচুরেটেড ফ্যাটকে যত ক্ষতিকর ভাবা হত, সে আদতে ততটাও নয়৷ খুব বেশি মাত্রায় খেলে খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএল বাড়লেও, ভাল কোলেস্টেরল এইচডিএল বাড়ার মূলেও তার হাত আছে৷ পরিসংখ্যান বলছে, খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ কমালেই যে হৃদরোগ হবে না বা হৃদরোগের কারণে মৃত্যু কম হবে— এমন নয়৷
তবে একথাও ঠিক, কিছু তত্ত্বগত ভুল থাকলেও এই ডায়েট মেনে চললে, উপকারই হয়৷ অতএব চোখ বন্ধ করে এই ডায়েট মেনে চলতে পারেন৷
আরও পড়ুন: কেক খেয়েই মাতাল, রীতিমতো অসুস্থ প্রৌঢ়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy