ঠাকুর দেখার ফাঁকে কোথায় খেতে যাবেন? রইল কিছু রেস্তরাঁর হদিস। নিজস্ব চিত্র।
বাঙালি পুজোয় শুধু ঘুরবে, কিছু খাবে না, তা-ই কখনও হয়! যতই স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ হোন না কেন, পুজোয় নিয়মবিধি শিকেয় তুলে, ডায়েটের তোয়াক্কা না করেই ভূরিভোজ চলবে। সে ঘরে বানানো পোলাও-মটন হোক বা রেস্তরাঁয় ঘুরে চাইনিজ়-মোগলাই, ঠাকুর দেখার পাশাপাশি পেটপুজো চলবেই। উৎসবের মরসুমে শহরের বেশ কয়েকটি রেস্তরাঁ তাদের থালি সাজিয়েছে মনের মতো করে। কবে কোন ঠিকানায় যাবেন, তা ঠিক করে নিন এখন থেকেই।
ভেনেতো বার অ্যান্ড কিচেন
বিভিন্ন দেশি-বিদেশি স্বাদ-ঘরানার মধ্যে এখন সব থেকে রমরমা চিনে খাবারের। তার পরেই কিন্তু রয়েছে ইটালি। স্রেফ পিৎজ়া-পাস্তা নয়, ইটালীয় স্বাদের হরেক পদ এখন বেশ পছন্দ করছেন বাঙালিরা। ভেনেতো বার পুজো উপলক্ষে রাখছে তাদের তৈরি কয়েকটি বাহারি পদ— ইনসালাটা কন আঙ্গুরিয়া ডি ফেতা, ফাঙ্গি, পিৎজ়া, জ্যাকসন পোলোক বুরাতা। এই রেস্তরাঁয় মদ্যপানেরও ব্যবস্থা রয়েছে। মদ্যপান না করলে দু’জনের খাওয়াদাওয়ার খরচ পড়বে ১,২০০ টাকার আশপাশে।
অয়্যারহাউস ক্যাফে
বন্ধুদের সঙ্গে তো এক দিন নিশ্চয়ই বেরোবেন? তা হলে সাউথ সিটির এই ক্যাফেটিকে রাখতে পারেন পছন্দের তালিকায়। পুজো উপলক্ষে ক্যাফেতে থাকছে ভেটকি মাছের পাতুরি, দার্জিলিং পর্ক মোমো। এ ছাড়াও মেনুতে থাকছে ভেজ ও নন-ভেজ পিৎজ়া, বার্গার, রোল। পেয়ে যাবেন বিভিন্ন রকম ককটেল ও মকটেলও। দু’জনের ১২০০ টাকায় হয়ে যাবে, আর ককটেল বা অ্যালকোহল নিলে খরচ পড়বে ২৪০০ টাকার মতো।
লর্ড অফ ড্রিঙ্কস
কলাপাতায় মোড়া গন্ধরাজ মুরগি বা ঝাল ঝাল গার্লিক চিলি কাঁকড়ার স্বাদ চাখতে হলে সাউথ সিটি মলের লর্ড অফ ড্রিঙ্কস রেস্তরাঁয় একবার ঢুঁ মারতে পারেন। পুজো উপলক্ষে ভারতীয়-কন্টিনেন্টালে মেনু সাজিয়েছে এই রেস্তরাঁ। কাঁচা আমের চিলি সালসা বা রসমালাই ক্রিম ব্লুলি কিন্তু অবশ্যই চাখবেন। ১২০০ টাকার আশপাশেই হয়ে যাবে খাওয়াদাওয়া। ইচ্ছে করলে সুরাপানও করতে পারেন।
দ্য ইয়েলো স্ট্র
পুজোয় ঘুরতে ঘুরতে যদি তেষ্টা পায়, তা হলে রাস্তার ধারে ঠান্ডা পানীয়ের স্টল ছেড়ে সোজা চলে যান শরবতের দোকান দ্য ইয়েলো স্ট্র-তে। সাউথ সিটি, অ্যাক্রোপলিস, শরৎ বোস রোড, লেক মল, আর সল্টলেকের সেক্টর ওয়ানে রয়েছে এই রেস্তরাঁর শাখা। এদের মেনুতে আপনি পেয়ে যাবেন বিভিন্ন রকম স্যালাড, জুস, শেক, র্যাপ। পুজোতেও ডায়েট করবেন যাঁরা, তাঁরা অ্যাভোকাডো ডিল স্যালাডের সঙ্গে নারকেল ও নানা মরসুমি ফলের স্মুদি চেখে দেখতেই পারেন। বিভিন্ন রকম বাহারি শরবত, স্মুদির সম্ভার রয়েছে দ্য ইয়েলো স্ট্র-তে। দু’জনের জন্য খরচ পড়বে ৫০০ টাকা।
ড্রাঙ্কেন টেডি
পুজোতে লুচি-মাংস না হলে কি আর জমে! ফুলকো লুচির সঙ্গে কষা পাঁঠার মাংস চাখতে চলে যান এলগিন রোডের হরাইজ়ন বিল্ডিংয়ে ড্রাঙ্কেন টেডিতে। বাঙালির রসনাতৃপ্তির জন্য আম আড্ডা পনির টিক্কা, ধনিয়া কাঁচালঙ্কা চিকেন, ভেটকি পাতুরিও রয়েছে এদের মেনুতে। ১২০০ টাকাতেই দু’জনের খাওয়া হয়ে যাবে। আর সুরাপান করতে চাইলে দু’জনের খরচ পড়বে প্রায় ২৪০০ টাকার মতো।
দ্যাট প্লেস বাওয়েল অ্যান্ড বার
আদ্যোপান্ত বাঙালি থালি খেতে চাইলে শেক্সপিয়ার সরণির এই রেস্তরাঁয় ঢুঁ মেরে দেখতে পারেন। গন্ধরাজ ঘোল বা আমপোড়া শরবত দিয়ে শুর করুন। খিদে আরও চাগাড় দিয়ে উঠবে। একে একে থালিতে আসবে মোচার চপ, লাউপাতা দিয়ে ছানার পাতুরি, ভেটকি মাছের ফ্রাই, আলু পোস্ত, ধোঁকার ডালনা, ভাপা ভেটকি সর্ষে, আরও কত কী! বিরিয়ানি পছন্দ হলে তা-ও পাবেন। বাসন্তী পোলাওয়ের সঙ্গে মটন কষা জমে যাবে। শেষ পাতে মিষ্টি দই আর বেকড রসগোল্লা খেতে ভুলবেন না। পকেট বাঁচিয়েই ভূরিভোজ করতে পারবেন। দু’জনের খরচ পড়বে ১৫০০ টাকার মতো। এখানে সুরাপানের ব্যবস্থাও আছে। তার জন্য দু’জনের খরচ পড়বে ২৫০০ টাকার মতো।
হাংরি সর্দার
দুর্গাপুজো উপলক্ষে স্পেশ্যাল বাঙালি থালির আয়োজন করেছে হাওড়ার অবনী মলের হাংরি সর্দার রেস্তরাঁ। এদের মেনুতে আপনি পেয়ে যাবেন আচারি সয়া মিরচি চপ, ভেটকি পাতুরি, চিংড়ির মালাইকারি, কাঁচালঙ্কা ধনেপাতা বাটার মুরগি, গোলবাড়ি স্টাইলে কষা মাংস-সহ আরও অনেক কিছু। দু’জনের জন্য খরচ পড়বে ১২০০ টাকার মতো।
পিঙ্ক সুগারস
সল্টলেক সেক্টর ওয়ানের এই রেস্তরাঁটি তাদের ইটালীয় খাবারের জন্যই বেশি জনপ্রিয়। তবে পুজোর ক’দিন এখানে পেয়ে যাবেন হায়দরাবাদি খানার স্বাদও। হাক্কা নুডল্স, ভেজ মোমো, বাও-সহ আরও অনেক কিছু। দু’জনের জন্য খরচ পড়বে ১০০০ টাকার মতো।
অলটেরা
বাংলার অনেক হারিয়ে যাওয়া রান্নাকে মনে করাবে অলটেরা ‘ইন সার্চ অফ বেঙ্গল ২.০’। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম— বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের ঐতিহ্যবাহী পদের স্বাদ চাখতে যেতেই হবে পার্ক স্ট্রিটের অলটেরাতে। মুর্শিদাবাদের ছানাবড়া থেকে শুরু করে কালিম্পংয়ের প্যাট্রন সিলভার টাকিলা, পুরুলিয়ার লাল কুদ্রুম থেকে সুন্দরবনের মধু, সবই পাওয়া যাবে এখানে। দু’জনের খাওয়াদাওয়ার খরচ ২০০০ টাকার আশপাশেই পড়বে।
পার্ক স্ট্রিট সোশ্যাল
বর্ষশেষের উদ্যাপন হোক বা দুর্গাপুজো, পার্ক স্ট্রিট এখনও ক্লিশে হয়নি কলকাতা বা মফস্সলের কাছে। রাসেল স্ট্রিট থেকে হাঁটতে হাঁটতে ঢুকে পড়ুন এই রেস্তরাঁয়। দেশি মুরগির ঝোল থেকে কষা পাঁঠার মাংস, যে কোনও রকম বাঙালি থালিই পাওয়া যাবে। আবার চাইনিজ় চাখতে হলে তার জন্যও থাকছে ভরপুর আয়োজন। ৫৯৯ টাকায় দু’জনের পেটপুরে খাওয়া হয়ে যাবে।
কল অন
পরিবার বা বন্ধুবান্ধবকে নিয়ে আড্ডা দিতে দিতে কন্টিনেন্টাল বা বাঙালি পদের ফিউশন চাখতে হলে যেতে হবে বালিগঞ্জের রুফ টপ কল অন রেস্তরাঁয়। ব্লু চিজ় কুলচা, চিংড়ির টেম্পুরার সঙ্গে হরেক রকম ককটেলের মজা নিতে পারবেন। দু’জনের খরচ পড়বে ৩২০০ টাকার মতো।
নান দোসা পাভস
সল্টলেক সেক্টর-৫ এ গোদরেজ় ওয়াটারসাইডের টাওয়ার-১-এ সেই সেপ্টেম্বর থেকে রমরম করে চলছে ভূরিভোজ। বাহুবলী দোসা, বোম্বাইয়া ইডলি, ফিরঙ্গি দোসা থেকে পিৎজ়া দোসা— হরেক রকম পদের পসরা সাজিয়েছে এই রেস্তরাঁ। মকটেলেরও ভরপুর আয়োজন। আর আছে দক্ষিণ ভারতীয় ফিল্টার কফি। দু’জনে খেতে গেলে খরচ পড়বে ১০০০ টাকার কিছু বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy