বৈশাখী আড্ডায় নতুন কী? সেই তো একঘেয়ে কিছু নিরামিষ টুকটাক আর চিংড়ি-ইলিশ!
তপ্ত এপ্রিল আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভোট-যুদ্ধে, তাই বলে কি বাদ পড়বে এ সব ঘরোয়া বিতর্ক? বাড়ির খুদে সদস্যও যে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলে ফেলেছে, ‘পয়লা বৈশাখ কত তারিখে?’ বাঙালিয়ানা উদ্যাপনেই না হয় খানিক স্বাদ বদল হোক এ মরসুমে। ভারী-গম্ভীর আড্ডার ফাঁকে জায়গা করে নিক কিছু মিষ্টি আলোচনা। বছর শুরুর ভোজের ঠিকানাও ঠিক করে দিক সেই মিষ্টি।
খোয়া আর মালাইয়ের সন্ধিতে তৈরি হেমকণা পায়েস যেমন ইতিমধ্যে বৈশাখী চমক দিতে তৈরি হচ্ছে মার্কোপোলোয়। শরৎ বসু রোড বা পার্ক স্ট্রিটের রেস্তোরাঁয় শসা-নারকেল দিয়ে চিংড়ি, ঠাকুরবাড়ি স্পেশ্যাল ভেটকি মইলুর আহার মসৃণ হোক মালাইয়ে ডোবানো খোয়া দিয়ে তৈরি ছোট গোল হেমকণায়।
গরমকালের আহ্লাদ-অতিথি লিচুও যে বাঙালি পায়েসের উপকরণ। ঘন হয়ে যাওয়া দুধে লিচুর টুকরো দিয়ে তৈরি সেই পায়েস আর রাজভোগ দিয়ে ওহ্! ক্যালকাটায় শেষ করা যায় চিতল মাছের মুইঠ্যা, রাজবাড়ির কোফতা, বেগুন বাসন্তীর বৈশাখী ভোজ।
কম চেনা পায়েসের টানে চলে যাওয়া যায় হিন্দুস্থান পার্কের সপ্তপদীতেও। পোস্ত বাটা চিকেন কয়েন, রাঙা আলুর ক্রকেট, কাঁচা লঙ্কা মুরগির ভোজ শেষ হবে সেখানে পান্তুয়ার পায়েসে। পায়েস-প্রীতি উস্কে দিতে হাজির হওয়া যায় সেক্টর ফাইভেও। সেখানকার জয়সলমের রেস্তোরাঁয় বাঙালি-পঞ্জাবি নানা সুখাদ্য সহযোগে আড্ডা শেষে মিষ্টিমুখ করা যায় বাঙালি পায়েস এবং ফিউশন মেজাজের বেকড মিহিদানায়।
সি-ফুড থালি অথবা লুচি, ছোলার ডাল, চিংড়ি মালাইকারির এলাহি পর্বও আবার শেষ হতে পারে তেমনই রাজকীয় মিষ্টি মেনুতে। শেষপাতে কাঁচা গোল্লা, কমলা ভোগ, কড়া পাকের সন্দেশ চেখে দেখতে চলে যাওয়া যায় হোটেল তাজ বেঙ্গল। চট্টগ্রামের চিংড়ি ভুনা, কাঁকড়ার ঝাল, কলকাতার মটন বিরিয়ানির আহার আবার শেষ করা যায় বেকড রসগোল্লা আর মিহিদানার টানে। ভোজ সেজেছে হোটেল হিন্দুস্থান ইন্টারন্যাশনালে।
ডাব ভাপা সন্দেশ আর বেকড পাটিসাপটা চেখে দেখার ইচ্ছে? যেতে হবে শহর থেকে একটু দূরে। বৈদিক ভিলেজের ভূমি রেস্তোরাঁয়। সঙ্গে থাকবে চমচম এবং মিষ্টি দইও। তার আগে মরিচ বাটা পাবদা, পোড়া লাউ পাতার ভেটকি অথবা তেল কইয়ের সঙ্গে সাদা ভাত।
হোটেল গেটওয়েতে আবার মাছের কচুরি, চিংড়ির পোলাওয়ের শেষে পাতে পড়তে পারে লবঙ্গ লতিকা, ছানার টোস্ট। পার্ক স্ট্রিটের পার্ক প্যাভিলিয়ন টেনে আনতে পারে পোস্ত মুরগি, রসগোল্লার ডালনার পরে ভাপা সন্দেশ, ছানার জিলিপির আকর্ষণে। মন যদি চায় শেষপাতে সাবেক রসগোল্লা, তবে যাওয়া যায় বালিগঞ্জের গোল্ড ব্রিকে। দই কাতলা, মুরগির ঝোলের মেন কোর্সও সাবেক মেজাজের সেখানে।
বিলিতি ডেজার্টে বর্ষবরণের আয়োজনও আছে। ক্যারামেল কাস্টার্ডের সাহেবিয়ানায় ‘বেঙ্গলি নিউ ইয়ার’ উদ্যাপন করতে ঘুরে আসা যায় বাইপাসের ধারের নতুন রেস্তোরাঁ ‘চ্যাপটার টু’ থেকে। মেন কোর্সে থাকুক হাল্কা আইরিশ ল্যাব স্ট্যু আর হার্ব রাইস। বাঙুর অ্যাভিনিউয়ের মেড ইন অভেনে রাখা থাকবে পয়লা বৈশাখ থালি কেক। থালা ভরছে মাছ, বেগুন ভাজা, ভাত, চিংড়ি — বিভিন্ন আকারের কেকে। মামা মিয়া-এ বৈশাখী উদ্যাপনে আবার শীতল ছোঁয়া। আয়োজন থাকছে নলেন গুড় আইসক্রিমের। মুঘলাই ধাঁচে বছর শুরুর ঝিঙ্গা বিরিয়ানি, মুর্গ ইরানির পরে অউধ ১৫৯০-এ আহার শেষ করা যায় রকমারি কুলফিতেও।
তাপমাত্রা যতই বাড়ুক, নতুন বছর শুরু হোক মিষ্টি মেজাজেই!
আরও পড়ুন: কচুর লতি, চিতল মুইঠ্যা, লইট্যা, পান্তা— রসনার বিগ বং জাঠ মুলুকে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy