মস্তিষ্ককে ক্ষুরধার করতে মেনে চলুন কিছু কৌশল। ছবি: শাটারস্টক।
বাড়ির কোনও দায়িত্বই হোক বা নিজের যাবতীয় কাজ কিংবা প্রিয় জনকে দেওয়া কথা রাখা— সব কিছুর জন্যই মনে রাখাটা একটা বিষয় বইকি। ভুলে গিয়ে কথা না রাখতে পারার সমস্যা বা ভুলের জন্য কাজের ক্ষতি— কে-ই বা এ সব পোহাতে চায় বলুন! একটা সময় ধারণা ছিল, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই কমে স্মৃতির দৌড়। কিন্তু আধুনিক জীবনযাপনের চাপ সে তথ্যকে কেবল বইয়ের পাতায় আটকে রেখেছে।
ভুলে যাওয়ার জন্য তাই আজ আর কোনও বয়স হয় না। টুকটাক দোকান-বাজার থেকে কিছু আনার তালিকাই হোক বা দরকারি কোনও জিনিস কোথায় রাখলেন তার খোঁজ— জীবনে চলার পথে মাথার কাজ চালানোটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অফিস, বাড়ি, পাড়ার ঠেক সর্বত্রই।
আধুনিক গবেষণা বলছে, ব্যায়াম ও কিছু কিছু অ্যারোবিক্স মস্তিষ্ককে সচল রাখতে সাহায্য করে। আপনি সে সব জানলেও নিয়ম করে হয়ত সে সব ব্যায়াম করে ওঠার সময় পান না। তা হলে উপায়? এমন কোনও অভ্যাস কি হতে পারে না যার প্রভাবে মাথাকে একটু কাজ করানো যায় ও মস্তিষ্কের কাজও খোলতাই হয়? আছে বইকি। প্রতি দিন কিছুটা সময় নিজের জন্য রাখেন তো? তা হলেই যথেষ্ট। সেই সময়ের মধ্যে অভ্যাস করুন এগুলি, পারলে শিশুদেরও যুক্ত রাখুন এ সবের মধ্যে। তাদের মস্তিষ্কও ক্ষুরধার হবে এতে।
আরও পড়ুন: ওজন কমানো থেকে সুস্থ শরীর, পাতে এই খাবার রাখলে আর চিন্তা নেই!
শরীর-সাস্থ্য নিয়ে এ সব তথ্য আগে জানতেন?
অবসরে চেষ্টা করুন ক্রশওয়ার্ড বা শব্দছক মেলাতে।
যে সময়টা অবসরের, তখন হাতে তুলে নিন ক্রশওয়ার্ড বা শব্দছক মেলানোর পাতা। বিভিন্ন পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে শব্দছক আকছার পাওয়া যায়। এ সব সমাধানের জন্য মস্তিষ্ককে খাটতে হয়, সঙ্গে শব্দের ভাঁড়ারও বাড়ে। শিশুদের বুদ্ধিমান করে তুলতে হলে ও ভাষার উপর তাদের দখল বাড়াতে গেলে এই পদ্ধতি খুবই কার্যকর। গবেষণা বলছে, কল্পনাশক্তি শুধু মনকেই নরম করে না, স্মৃতিকেও পোক্ত করে। তাই শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান, তাদের কল্পনার দুনিয়ার শরিক হোন, রূপকথার গল্প বা বিভিন্ন গল্পের বই পড়ার ফাঁকে নিজের কল্পনাকেও ঝালিয়ে নিন। এতে মস্তিষ্ক সক্রিয় হবে ও মনে রাখা সহজ হবে। অভিধান পড়ার অভ্যাস করুন। বাংলা হোক বা ইংরেজি, অভিধান পড়ে প্রতি দিন দশটি করে শব্দ লিখে রাখুন খাতায়। দিনের শেষে তার কতগুলি মনে রাখতে পারছেন দেখুন। না পারলে আবার পড়ুন, তার পর লিখে ফেলুন শব্দগুলি। প্রথম প্রথম অসফল হলেও এক সময় দেখবেন এই অভ্যাসের ফলে মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে সবগুলিই মনে রাখতে পারছে। শিশুদের ক্ষেত্রে এই অভ্যাস ভাষাজ্ঞান বাড়ায়, মস্তিষ্ককে সক্রিয় করে ও শব্দের জোগানও বাড়ায়। গান বা কবিতা ভালবাসেন? তা হলে পছন্দের একটি তালিকা বানান। এ বার সেই গান বা কবিতা কোনটা কোন বই থেকে নেওয়া বা কোন সিনেমায় ব্যবহার হয়েছে তা বাবুন। না পারলে জেনে নিয়ে লিখে রাখুন। মাঝে মাঝেই সে লেখার পাতা দেখুন ও না দেখে বলার চেষ্টা করুন সঠিক উত্তর। এতেও মাথাকে অনেকটা পরিশ্রম করতে হয়।
আরও পড়ুন: সন্তান অমনোযোগী বা পড়া মনে রাখতে পারছে না? কী কৌশলে মেটাবেন সমস্যা?
মস্তিষ্কের জোর বাড়ায় অভিধান পড়ার অভ্যাস।
সুদোকু বা পাজল বোর্ড সমাধান করার অভ্যাস তৈরি করুন নিজের। শিশুকেও ব্যস্ত রাখুন এ কাজে। মস্তিষ্কের ধার বাড়াতে দু’জনের জন্যই এই উপায় অনেকটা উপকারী হয়ে উঠবে। বেশ কিছু অ্যাপেও এমন পাজল বা ধাঁধার সন্ধান পাওয়া যায়। মস্তিষ্ক সচল থাকে এমন কিছু কাজ খেলার ছলে করুন। ডান হাত ও বাঁ হাত দিয়ে টেবিলের উপর আঙুল দিয়ে দুটি আলাদা ছবি আঁকার চেষ্টা করুন। ডান হাত দিয়ে টেবিল ঠোকার সময় বাঁ হাত দিয়ে একটি কাল্পনিক চিত্র আঁকার চেষ্টা করুন। বা দুই হাতের তর্জনীকে দু’টি বিপরীত দিকে লাটাই ঘোরানোর মতো করে ঘোরান। মোট কথা দুই হাতকে দুটো ভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারার মানে, মস্তিষ্ক যথেষ্ট সক্রিয় আছে। যে সব কাজ করতে হলে মাথাকে পরিশ্রম করতে হয় বেশি, সে সব কাজে অভ্যস্ত হোন। এ সব ঘরোয়া উপায়ে কাজ না হলে অবশ্যই পরামর্শ নিন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy