সর্দিকাশি সেরে যাওয়ার পরেও একই টুথব্রাশ ব্যবহার করে যান? এমনটা অনেকেই করেন। শেষ কবে ব্রাশ বদলেছেন তা হয়ত মনেও নেই। নিয়ম করে দু’বেলা দাঁত মাজলেই তো হল, ব্রাশ নিয়ে ভাবনার সময় কার কাছেই বা আছে! অনেকেই মনে করেন,কেবল দাঁতের অযত্ন হলেই নানা শারীরিক সমস্যা হতে পারে, কিন্তু ব্রাশ বদল না হলে যে কী কী বিপদ ঘনাতে পারে, সে নিয়ে স্বচ্ছ ধারণা নেই অনেকেরই। এই ব্যাপারে বুঝিয়ে বললেন চিকিৎসকেরা।
দাঁত মাজার ব্রাশ কিন্তু রোগজীবাণুর আঁতুড়ঘর। ব্রাশটি ব্যবহারের পরে কোথায় রাখছেন, কত দিন ধরে ব্যবহার করছেন, সবই কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। জানলে অবাক হবেন, দাঁত মাজার ব্রাশে কতশত ব্যাক্টেরিয়া-ভাইরাস বা ছত্রাক বাসা বেঁধে থাকে। স্ট্যাফাইলোকক্কাস, সিউডোমোনাস, এন্টেরোকক্কাস, ল্যাক্টোব্যাসিলাসের মতো ব্যাক্টেরিয়া জন্মায় ব্রাশে। কয়েক রকম ভাইরাস ও সংক্রামক ছত্রাকও বাসা বাঁধে। এই ব্যাপারে একমত মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার। তিনি জানাচ্ছেন, প্রতি বার ব্রাশ ব্যবহারের পরে এই সব জীবাণু লালায় মিশে পেটে যায়। ফলে পেটের গোলমাল, বদহজম লেগেই থাকে। সর্দিকাশি একবার সেরে গেলেও, ফের কাবু করে। একই ব্রাশ ব্যবহার করে যাওয়ার কারণে সর্দিজ্বরের ভাইরাস ব্রাশের মধ্যেই থেকে যায় এবং সেখান থেকেই সংক্রমণ ঘটায়।
২ থেকে ৩ মাসের বেশি একটি ব্রাশ ব্যবহার করলে জীবাণু সংক্রমণ ঘটবেই। এ ব্যাপারে চিকিৎসক কুণাল সুদের মত, প্রায় বেশির ভাগ বাড়িতেই সব সদস্যের ব্রাশ একই পাত্রে সাজানো থাকে। এই ভাবে ব্রাশ রাখলে এক জনের ব্রাশ থেকে অন্য জনের ব্রাশে জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে। যিনি সর্দিকাশি, গলাব্যাথায় ভুগছেন বা দাঁতের কোনও অসুখ আছে, তাঁর ব্রাশের সঙ্গে একই জায়গায় বাকি ব্রাশগুলি রাখলে কিন্তু অসুখবিসুখ হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে। আর টুথব্রাশ শৌচাগারে না রাখাই ভাল। প্রতি বার ব্যবহারের পরে ভাল করে ধুয়ে ও শুকিয়ে, মুখ ঢেকে রাখতে হবে।
ব্রাশ ব্যবহারের নিয়ম
১) নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে ব্রাশ। ধোয়ার পরে শুকিয়ে নিয়ে তবে রাখতে হবে।
২) সপ্তাহে একবার ঈষদুষ্ণ জলে ধুতে হবে। এতে জীবাণু সংক্রমণের আশঙ্কা কিছুটা কমবে। এ ছাড়া, মাউথ ওয়াশ জাতীয় দ্রবণে মিনিট দুয়েক চুবিয়ে রাখলেও জীবাণুমুক্ত হবে ব্রাশ।
৩)শরীর খারাপের পরে সেই ব্রাশ আর ব্যবহার করবেন না। যদি করতেই হয়, তা হলে আলট্রাভায়োলেট আলোর নীচে রেখে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৪) যদি ব্রাশের ব্রিসলগুলি বিকৃত হয়ে যায়, তবে সেই ব্রাশ ব্যবহার করা উচিত নয়।
৫) ব্রাশ সব সময়ে খোলামেলা জায়গায় রাখতে হবে। ভিজে বা স্যাঁতসেঁতে জায়গায় রাখলে সংক্রামক ছত্রাক বাসা বাঁধতে পারে।