দূষণের পাল্লা ভারী হচ্ছে। সেই সঙ্গেই বিভিন্ন সংক্রামক অসুখবিসুখ হানা দিচ্ছে চারদিকে। ধুলো, ধোঁয়া, ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস যাতে ছোট্ট শরীরটাকে কাবু না করতে পারে, সে জন্য পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন থাকার পাঠ দিতে হবে ছোট থেকেই। কিছু সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে ঘন ঘন অসুখে পড়ার হাত থেকে অনেকটাই রেহাই পাওয়া যাবে। সে জন্য ছোটদের কী কী শেখানো জরুরি, তা জেনে রাখা ভাল।
প্রথমেই শেখাতে হবে টয়লেট ট্রেনিং বা শৌচাগার ব্যবহারের শিক্ষা। এই বিষয়টি নিয়ে অজ্ঞতা, উদাসীনতা যথেষ্টই আছে। নিজেকে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করার পাশাপাশি শৌচাগার কী ভাবে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, তা-ও শেখাতে হবে। অপরিচ্ছন্ন শৌচাগার নানা রোগের আঁতুড়ঘর। সেখান থেকেই স্ট্যাফাইলোকক্কাই, ই কোলাই, স্ট্রেপটোকক্কাসের মতো ব্যাক্টেরিয়া ছড়ায়। স্কুলের শৌচাগার বা গণ শৌচাগার থেকে মূত্রনালির সংক্রমণ (ইউটিআই) ছড়াতে পারে ছোটদের মধ্যে। তাই কী ভাবে শৌচাগার ব্যবহার করতে হবে, তা শেখানো জরুরি। টয়লেট সিট ব্যবহারের আগে স্যানিটাইজ়ার স্প্রে করে নিলে ভাল হয়।
সন্তানকে শেখানো উচিত, শৌচাগার ব্যবহারের পরে হাত সাবান দিয়ে ধুতে হবে। স্কুলে সাবানের ব্যবস্থা না থাকলে পকেটে রাখতে হবে সোপ পেপার। ফ্লাশ ক্লিপআর্ট, কল, মগের হাতল, দরজায় প্রচুর হাতের ছোঁয়া পড়ে, তাই শৌচাগার থেকে বেরিয়ে হাত স্যানিটাইজ়ার দিয়ে বা সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে নিলে নিশ্চিন্ত থাকা যায়।
আরও পড়ুন:
খবারের প্যাকেট, টিস্যু পেপার বা স্যানিটারি প্যাড যেখানে-সেখানে না ফেলে তা ডাস্টবিনে ফেলতে হবে। সন্তানকে শেখাতে হবে ঋতুকালীন সময়ে কী ভাবে স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করতে হবে। বার বার অন্তর্বাস বদল করা, পরিচ্ছন্ন অন্তর্বাস ব্যবহার করা এবং পরিচ্ছন্ন জামাকাপড় পরাও জরুরি।
শিশুকে শেখাতে হবে, বাইরে থেকে ফিরেই হাত-পা ধুয়ে পরিচ্ছন্ন জামাকাপড় পরতে হবে। খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই হাত ধুতে হবে। অনেক ক্ষণ ধরে কেটে রাখা ফল বা বাইরের কাঁচা স্যালাড, রাস্তায় বিক্রি হওয়া ফলের রস, লস্যি অথবা ঠান্ডা পানীয় কতটা ক্ষতিকর হতে পারে, তা-ও বোঝাতে হবে শিশুকে।
স্নেহের বশে নিজের আধখাওয়া খাবার কখনওই শিশুর মুখে দেবেন না। এতে আপনার ভালবাসা বোঝানো হল ঠিকই, কিন্তু তা শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বরং ওদের থালা-বাটি, চামচ, গ্লাস আলাদা রাখাই ভাল। শিশুকে শেখাতে হবে প্রতি বার খাবার খাওয়ার আগে নিজের থালা বা বাটি ভাল করে ধুয়ে নিয়ে তবেই খেতে হবে। ফল খাওয়ার আগে তা-ও ধুয়ে নিয়ে খেতে শেখান শিশুকে।
স্কুলব্যাগে ওয়াইপ্স ও পরিষ্কার রুমাল রাখুন। বারে বারে হাত পরিষ্কার রাখা, খাওয়ার পরে মুখ ধোয়ার অভ্যাস করান। দিনে অন্তত দু’বার ব্রাশ করার অভ্যাস রাখা জরুরি।
নিজের জামাকাপড় গুছিয়ে রাখা, জুতো শু র্যাকে তুলে রাখা, খেলনা ও টুকিটাকি জিনিস চারদিকে ছড়িয়ে না রেখে নির্দিষ্ট জায়গায় তুলে রাখার অভ্যাসও করাতে হবে। একবার অভ্যাস হয়ে গেলে শিশু নিজেই পরিচ্ছন্ন থাকতে শিখে যাবে।