অতিরিক্ত অধিকারবোধ অস্বাস্থ্যকর সম্পর্কের অন্যতম লক্ষণ। ছবি: সংগৃহীত
যুদ্ধে ও ভালবাসায় সব কিছুই ন্যায়সঙ্গত বলে মনে করেন? তা হলে ভাবনা বদলানোর সময় এসে গিয়েছে। অনেক সময়েই ভালবাসার দোহাই দিয়ে এমন কাজ করে বসেন প্রেমিক-প্রেমিকারা, যা শুধু সম্পর্ককেই নষ্ট করে তা নয়, বিপদের মুখে ঠেলে দেয় সঙ্গীকেও। এই ধরনের আচরণের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। সম্পর্কের বাইরেও একাধিক স্তরে ক্ষতি করতে পারে এই ধরনের আচরণ।
সঙ্গীর কাজকর্মে অসুরক্ষিত বোধ করা, প্রাত্যহিক অশান্তি, নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী কথা বলা বা কাজ করতে ভয় পাওয়া, অবচেতনকে অস্বীকার করে সব সময়ে ভুল করার ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকা— এই সব কিছুই অস্বাস্থ্যকর সম্পর্কের লক্ষণ হতে পারে। জেনে নিন, ভালবাসা বলে এড়িয়ে না গিয়ে সঙ্গীর কোন কোন ক্ষতিকর আচরণের বিষয়ে হবেন সতর্ক—
১। গ্যাসলাইটিং শব্দটির সঙ্গে এখন অনেকেই পরিচিত। সঙ্গীকে তাঁর প্রকৃতিস্থতা, অভিজ্ঞতা বা বাস্তবতা নিয়ে সন্দিহান করে তোলার নামই গ্যাসলাইটিং। বিশেষজ্ঞদের মতে এটি সবচেয়ে বেশি ঘটে চলা অস্বাস্থ্যকর আচরণগুলির মধ্যে অন্যতম।
২। অনেক সময়েই সম্পর্কে থাকা দু’জন খুনসুটিতে মেতে ওঠেন। কিন্তু খেয়াল রাখা দরকার খুনসুটি যেন কখনও অপমানের পর্যায়ে না চলে যায়। পাশাপাশি, সমালোচনা হোক ভুল শুধরে দেওয়ার জন্য, ভুল ধরার জন্য নয়। সঙ্গীকে নিয়ে ব্যঙ্গ করতে গিয়ে মাত্রা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে হেয় করা মোটেই সুসম্পর্কের লক্ষণ নয়। পারস্পরিক সম্মান শুধু ভালবাসা নয়, যে কোনও সম্পর্কেরই সবচেয়ে বড় মূলধন।
৩। অন্য যাবতীয় বিষয়ের থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টাও অস্বাস্থ্যকর সম্পর্কের একটি প্রধান লক্ষণ। সম্পর্কের কারণে যদি বন্ধু-বান্ধব, পরিবার বা অন্যান্য সামাজিক কার্যকলাপ থেকে দূরে সরে যেতে বাধ্য হন, তা হলে আপনর সম্পর্ক মোটেও সুস্থ নয়। ধরুন আপনি পেশাগত ভাবে কোনও গুরত্বপূর্ণ কাজে রয়েছেন। অথবা এমন কিছুর মাঝে রয়েছেন যা আপনার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু সঙ্গীর কাছে ততটাও নয়। তখনই সঙ্গীর আপনাকে এত প্রয়োজন পড়ল যে ছুটে যেতে হল সব কাজ ফেলে। তা হলে সতর্ক হোন। খেয়াল রাখুন বার বার একই ঘটনা ঘটছে কি না।
৪। কেউ অন্তর্মুখী হতে পারেন, তাঁদের নিজেকে মেলে ধরতে সময় লাগে বেশি। কিন্তু মন খারাপ থাকলে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ার অভ্যাস সমস্যা ডেকে আনতে পারে। কোনও বিষয়ে মতান্তর তৈরি হলে, কথা বলার বদলে যদি কেউ নিজের বা সঙ্গীর পরোক্ষ ক্ষতি হয়, এমন কোনও কাজ করেন তা হলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। সম্পর্কে নিজেকে শাস্তি দেওয়ার প্রবণতায় কিন্তু মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।
৫। অতিরিক্ত অধিকারবোধ অস্বাস্থ্যকর সম্পর্কের অন্যতম লক্ষণ। সঙ্গীর সব ব্যাপারে নিজের মালিকানা ফলানো বা তার ইচ্ছে-অনিচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টাকে কেউ কেউ ভালবাসার প্রমাণ বলে দাবি করেন। এর থেকে বড় ভুল ধারণা বিশ্ব সংসারে দ্বিতীয়টি নেই। একাত্মতাবোধ আর অধিকারবোধ এক নয়। প্রথমটি জোর করে তৈরি হয় না। আর হলে জাহির করতে হয় না।
মনে রাখবেন প্রত্যেক সম্পর্ক আলাদা, আলাদা তার সমীকরণও। কিন্তু কিছু বিষয় সব ধরনের সম্পর্কের জন্যেই সত্যি। সমস্যা তৈরি হলে ভালবাসার দোহাই দিয়ে এড়িয়ে না গিয়ে সমাধানের উপায় খোঁজাই শ্রেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy