রায়গঞ্জে ডেঙ্গির জীবাণু মিলল রোগীর শরীরে।
চেনা বিপদের মরশুম আসন্ন। ডেঙ্গির হানায় মৃত্যুমিছিল এই শহর কম দেখেনি। তবে কেবল কলকাতাই নয়, প্রত্যন্ত জেলা ও শহরতলিও এই অসুখ থেকে বাঁচাতে পারে না নিজেকে। প্রতি বছরই সতর্কতা, সতেচনতা, প্রচার সবই চলে পুরোদমে। তবু সমস্যা থেকে অব্যাহতি মেলে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন থেকে সতর্কতা না অবলম্বন করলে মাশুল দিতে হবে জীবন দিয়ে। কিন্তু কী ভাবে? ব্লিচিং জাতীয় কীটনাশক কাজে আসে কতটা, মশা রোখার জন্য আলাদা কোনও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের দরকার আছে কি?
জুওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার বিজ্ঞানী শঙ্কর সুমন বলছেন, ব্লিচিং পাউডার বা কীটনাশক দিয়ে মশাকে মারা যায়। কিন্তু মশার ডিম বা লার্ভাকে ধ্বংস করার ক্ষমতা এগুলির নেই। তাই এ সব ছড়ানোর পরে বড়জোর আধঘণ্টা থেকে ১ ঘণ্টা পর্যন্ত কিছুটা প্রভাব থাকে। তার বেশি নয়। বরং যে সব জায়গায় মশা ডিম পাড়তে পারে সেগুলি আগে ধ্বংস করা দরকার।
আরও পড়ুন: আচমকা হার্ট অ্যাটাক? প্রাণ বাঁচাতে কী করতে হবে জানেন?
মশা থেকে বাঁচার প্রথম ধাপ
ব্যবস্থা নিতে হবে যেন বাড়ির চারপাশে মশা ডিম না পাড়ে। অ্যানোফিলিস ও কিউলেক্স মশা জমা জলে ডিম পাড়ে। আশপাশে থাকা ফুলের টব, ডাবের খোসা, পরিত্যক্ত টায়ার ইত্যাদিতে চার–পাঁচ দিনের বেশি সময় ধরে জল জমতে দেওয়া চলবে না। যে সব জায়গায় নতুন বহুতল তৈরি হচ্ছে, সে সব ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে বিশেষ ভাবে। জমে থাকা ইটের খাঁজে, বালি সিমেন্টের স্তূপ এ সব এলাকায় মশা বাস করতে ভালবাসে। তাই এ সব জায়গা এড়িয়ে চলুন। ব্লিচিংয়ে ভরসা রাখার চেয়ে জল জমতে না দেওয়া, আগাছা পরিষ্কার এ সবে নজর দিন বেশি করে। ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করতেই হবে। সদ্যোজাত শিশুদের মশারির ভিতরে রাখুন অবশ্যই। দরজা–জানালায় নেট ব্যবহার করেও মশার কামড় থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। ছোট শিশুদের ফুল হাতা জামা বা প্যান্ট পরাতে হবে সন্ধ্যার পর। শরীরে মশানিরোধক রাসায়নিক ক্রিম মাখানোর চেয়ে চেষ্টা করুন ঘরোয়া পদ্ধতিতে মশা রুখতে। একান্তই মশা মারার ওষুধ ব্যবহার করলে তা বদলে নিন মাঝেমধ্যেই। একই ওষুধ অনেকদিন ব্যবহার করলে মশা নিজের শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ফেলে।
আরও পড়ুন: এই ভুলগুলোর জন্যই আক্রান্ত হতে পারেন মারণ রোগে! সাবধান!
মশাদের ‘চালাকি’ ধরে ফেলেছেন, বলছেন ম্যালেরিয়া গবেষক
রক্ত পরীক্ষায় যেন দেরি না হয়।
ডেঙ্গির ক্ষেত্রে সমাধান কোন পথে, কী ভাবে? চিকিৎসক তনুজ সরকারের সাফ কথা প্রথম পদক্ষেপটা নিতে হবে আপনাকেই।
জ্বর হলেই তিন দিনের সময়সীমা না নিয়ে প্রথমেই রক্তপরীক্ষা করান। ডেঙ্গির NS1, ম্যালেরিয়া এবং সাধারণ সংক্রমণের জন্য রক্ত পরীক্ষা করান। রোগ ধরা পড়ার পর আর মুহূর্ত সময় নষ্ট করা যাবে না। যোগাযোগ করুন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সঙ্গে। তাঁর পরামর্শ মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। যে কোনও জ্বরের রোগীকে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত মশারির মধ্যে রাখুন। সময় মতো রোগীকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করলে ডেঙ্গিতে মৃত্যু আটকাতে পারেন আপনি নিজেই। যত দ্রুত রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হবে, তত দ্রুত ডেঙ্গিকে নির্মূল করার পথে এগোনো যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy