অপেক্ষায়: ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্তদের জন্য প্রতিষেধক শিবিরে। বৃহস্পতিবার, এসএসকেএমে। ছবি: সুমন বল্লভ
কিছুতেই সুচ ফোটাবেন না বছর কুড়ির তরুণী। অনেক বুঝিয়েও রাজি করানো যাচ্ছিল না। শেষে উপায় বার করলেন চিকিৎসকই। বললেন, ‘‘ইঞ্জেকশনটা নিলে তুমি এরোপ্লেনে চড়তে পারবে।’’ তা শুনে চোখে-মুখে খুশির ভাব ফুটলেও ভয় কাটছিল না তরুণীর। শেষে এরোপ্লেনে চড়ার আনন্দের রেশ ধরে, নার্সরা তাঁর হাতে ফুটিয়ে দিলেন করোনা প্রতিষেধকের সিরিঞ্জের সুচ।
‘ডাউন সিনড্রোম’-এ আক্রান্ত এমন ২৬ জন এবং তাঁদের বাবা-মা ও কেয়ারগিভার মিলিয়ে মোট ৪৯ জনকে বৃহস্পতিবার প্রতিষেধক দেওয়া হল এসএসকেএমে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ‘ডাউন সিনড্রোম’-এ আক্রান্তদের বৌদ্ধিক বিকাশ ঠিক মতো হয় না। তাই কোভিড কী, তা থেকে বাঁচতে কী বিধি মানতে হবে— তাঁদের বোঝানো মুশকিল। স্বভাবতই, প্রতিষেধক দেওয়াও ছিল ঝুঁকির। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সহযোগিতায় এ দিনের শিবিরের আয়োজক ছিল ডাউন সিনড্রোম নিয়ে কাজ করা দু’টি সংস্থা।
ডাউন সিনড্রোম নিয়ে গবেষণায় যুক্ত আন্তর্জাতিক সংস্থার ভারতীয় শাখার চেয়ারম্যান তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের জেনেটিক্সের অধ্যাপক সুজয় ঘোষ জানান, ‘ডাউন সিনড্রোম’-এর রোগীদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা আট গুণ বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও তাঁদের বিশেষ ক্যাটেগরিতে প্রতিষেধক দিতে বলেছে। বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করতে ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন সুজয়বাবু। কিন্তু উত্তর না পেয়ে তিনি চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রীকে।
সুজয়বাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব সহযোগিতা করেন। পিজিতে শিবির করার সিদ্ধান্ত হওয়ার পরে চিকিৎসক শান্তশীল পাইন ও সুপ্রতিম দত্ত সাহায্য
করেছেন। আগামী দু’মাস নির্দিষ্ট দিনে সেখানে চলবে শিবির।’’ শিবিরের চেয়ারপার্সন তথা ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু-রোগ বিভাগের প্রধান সুমন্ত্র সরকার বলেন, ‘‘ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্তদের মধ্যে কারও বয়স ২০ হলে তাঁর মানসিক বুদ্ধির বয়স ১০। ওঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। থাকে বিভিন্ন কোমর্বিডিটি। তাই ওঁদের সংক্রমণের আশঙ্কাও বেশি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy