এমন গেঞ্জি মন কেড়েছে আট থেকে আশির। নিজস্ব চিত্র
মাস দুয়েক আগে ভরসন্ধেয় ছেলেটা এসে যখন জিগ্যেস করল, ‘‘দাদা, ‘একদিন তো মরেই যাবো’ গেঞ্জি আছে?’’— শুনে প্রথমটা ঘাবড়েই গিয়েছিলেন কৃষ্ণনগর পোস্ট অফিস মোড়ের রেডিমেড পোশাকের দোকানি অমিত পাল।
বুঝতে দেরি হয়নি, গেঞ্জিতে লেখা কোনও লাইনের কথা বলছে ছেলেটা। ‘নেই’ শুনে ছেলেটা বলে গিয়েছিল, পরের সপ্তাহে আবার খোঁজ নিতে আসবে। আর কৌতূহলি হয়ে দোকানি পরের দিন ছুটেছিলেন কলকাতায়। খোঁজ করে মিলেও গেল। কত জন আর কিনবে ভেবে প্রথমে মাত্র ছ’টা তুলেছিলেন। প্রায় সঙ্গে-সঙ্গেই বিক্রি। তার পর গত দু’মাসে প্রায় দু’শো ওই গেঞ্জি বেচে ফেলেছেন তিনি।
এখন আশপাশের দোকানগুলোও দেখাদেখি ওই গেঞ্জি আনিয়েছে। তাদেরও হইহই বিক্রি। মূলত স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারাই এর খদ্দের। ‘মরেই যাব’ ছাড়াও আর একটা গেঞ্জি খুব চলছে বাজারে— ‘টোপ আর গিলছি না!’ বিরাট হিট!
ইংরেজিতে নানা চমক লাগানো লাইন লেখা গেঞ্জি বহু দিন আগেই কমবয়েসিদের বাজার ধরেছে। তার মধ্যে সুপারম্যান আর ব্যাটম্যানের লোগো দেওয়া গেঞ্জি দারুণ জনপ্রিয়। গত বছর কিছু হিন্দি ডায়লগও বাজার ছেয়েছিল— ‘হাম নেহি শুধরেঙ্গে’, ‘ইসমে তেরা ঘাটা, মুঝে কুছ নেহি আতা’ বা ‘কেয়া হুয়া তেরা ওয়াদা’। সেগুলো এ বারও ঝুলছে দোকানে। কিন্তু বাংলায় লেখা ঝাক্কাস লাইনই বাজার মাত করেছে।
অনলাইন শপিং সাইট ঘাঁটায় যাঁরা অভ্যস্ত, তাঁরা জানেন, পপ কালচার ছোঁয়া বাংলা লেখা গেঞ্জি বেশ কিছু বছর ধরেই তরুণদের মন জয় করছে। কৃষ্ণনগরের সায়ন বিশ্বাসের আছে এমন বেশ কিছু গেঞ্জি। কোনওটায় লেখা ‘আমার বারোটা বেজে গেছে’, কোনওটায় আবার ‘লোকে জ্বলবে আমার এমনই চলবে’ বা ‘তুই কি চিনিস, আমি কি জিনিস?’ সায়ন হেসে বলে, ‘‘পরে রাস্তায় বেরোলেই সবাই চোখ টেরিয়ে দেখে। অনেকে ছবিও তুলে রাখেন!’’ তাতে নিজেকে খানিক কেউকেটা মনে হয় বইকী!
কোনও রাখঢাক না করেই অপূর্ব রানা বলে, ‘‘দাদা, লাইফে প্রেম নেই। মনের ব্যথা গেঞ্জিতেই ফুটছে! ‘টোপ আর গিলছি না’ পরে সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করে দেব। দেখবে আর জ্বলবে!’’
প্রেমিকা জ্বলুক নাই বা জ্বলুক, টোপ গিলুক আর না-ই গিলুক, বং গেঞ্জিই এখন রংবাজি করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy