Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

ওজন নয়, নজর সুস্থ

কী ভাবে বুঝবেন সন্তানের ওজন কম না বেশি। তারতম্য হলে তার প্রতিকারই বা কী?

মডেল: ধ্রুব দ্বিবেদী, ছবি: অমিত দাস

মডেল: ধ্রুব দ্বিবেদী, ছবি: অমিত দাস

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:০৪
Share: Save:

সন্তানের খাওয়াদাওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়েননি, এমন অভিভাবক বোধহয় পাওয়া যাবে না। অধিকাংশ বাবা-মায়ের অভিযোগ, বাচ্চা খেতে চায় না। এ দিকে যে খাবারগুলি তারা খেতে ভালবাসে, তাতে পুষ্টিগুণ তো নেই-ই, উল্টে ক্ষতিকর। এই চাপানউতোরে নজর এড়িয়ে যাচ্ছে বাচ্চার ওজন। কারও ওজন অতিরিক্ত, কারও কম। এই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যতটা জরুরি, ততটাই প্রয়োজন তা মনিটর করা।

সাধারণত একদম ছোট বয়সে বাচ্চাদের ওজন যতটা মনিটর করা হয়, একটু বড় হলে ততটা নজর দেওয়া হয় না। অথচ বিশেষজ্ঞরা জোর দিচ্ছেন, সদ্যোজাত থেকে টিনএজ পর্যন্ত ওজন মনিটর করার দিকে। শিশু চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষের কথায়, ‘‘বাচ্চাদের গ্রোথ চার্ট মেনটেন করা ভীষণ জরুরি। বয়স অনুপাতে শিশুর ওজন ও উচ্চতা নির্দিষ্ট হয়। আপনার সন্তান সেই মাপকাঠির আওতায় আছে কি না, তা বাবা-মা ও ডাক্তারকে খেয়াল রাখতে হবে। সামান্য এ দিক ও দিক হতেই পারে। বাবা-মায়েরা সাধারণত কম ওজন নিয়ে চিন্তা করেন। আমি বলব, ওজন-উচ্চতার ভারসাম্য প্রয়োজন।’’ দু’বছর পর্যন্ত শিশুর প্রতি মাসেই গ্রোথ চার্ট মনিটর করুন। তার পর থেকে মাস তিনেক অন্তর করলেই চলবে। টিনএজারদের ক্ষেত্রে বছরে তিন বার যথেষ্ট। চার্টের রেফারেন্স শিশুর ডাক্তারের কাছেই পেয়ে যাবেন। নয়তো ইন্টারনেটেও তা পাওয়া যায়। যদি দেখেন, চার্টের চেয়ে ওজন দু’-তিন কিলোগ্রাম কম-বেশি হচ্ছে, তা হলে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

• ছোটরা খাওয়াদাওয়া নিয়ে ঝামেলা করবেই। অভিভাবককে খেয়াল রাখতে হবে, সন্তান দুর্বল হয়ে পড়ছে কি না। অনেক বাচ্চার ওজন বেশি হলেও কিন্তু সে দুর্বল হতে পারে। শিশু যদি খেলতে না চায় বা অল্পেই হাঁপিয়ে ওঠে, তা হলে চিন্তার। এর সঙ্গে যদি গ্রোথ চার্টও না মেলে, সে ক্ষেত্রে বুঝতে হবে শরীরে কিছু ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। সে রকম হলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।

• ছোটদের পেট ভরানো খুব একটা সমস্যার নয়। কিন্তু তাদের যথাযথ পুষ্টির দিকে নজর দিতে হবে। পুষ্টিকর খাবার একটু মুখরোচক ভাবে তৈরি করে দিলে তারা নিশ্চয়ই খাবে। ছোট থেকে সব ধরনের খাবার খাওয়ানোর অভ্যেস করানো ভাল। অবাধ জাঙ্ক ফুডে বাচ্চার ওজন বাড়তে পারে, কিন্তু আদতে লাভ হয় না। এ ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণে রাখাটাও জরুরি। ওরা বড়দের যেমন দেখে, তেমনটাই শেখে।

• ‘ওর বাচ্চার ভীষণ ভাল স্বাস্থ্য, আমার বাচ্চার নয় কেন?’ এটা অভিভাবকদের পরিচিত বক্তব্য। ডা. অপূর্ব ঘোষের কথা অনুযায়ী, শিশুর ওজন-উচ্চতা অনেকটাই নির্ভর করে তার জেনেটিক গঠনের উপরে। ধরুন আপনার শিশুর গড়ন রোগার দিকে, কিন্তু তার উচ্চতা একদম ঠিক। সে ক্ষেত্রে বুঝবেন এটা ওর জেনেটিক গঠন। ‘‘জেনেটিক্যাল পোটেনশিয়াল কম, এমন বাচ্চাকে অতিরিক্ত খাইয়ে ওজন বাড়ানো হলে পরে তার হাইপার টেনশন, ডায়াবিটিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়,’’ বলছেন তিনি।

• টিনএজ থেকে বাচ্চাদের ওজন-উচ্চতা অনেকটা হরমোনের উপরে নির্ভর করে। হঠাৎ দেখলেন, যে ছেলে বা মেয়েটি ক্লাস ফাইভে পড়ার সময়ে রোগা ছিল, সে ক্লাস সেভেনে উঠে ভাল স্বাস্থ্যের অধিকারী হয়েছে। আবার উল্টোটাও হতে পারে।

• বর্তমান পরিস্থিতিতে খাদ্যের গুণাগুণ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আনাজ, ফল, মাছ, মাংস— সব খাওয়ানোর পরেও শিশুর পুষ্টিতে ফাঁক রয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভিটামিন বা ফুড সাপ্লিমেন্টের কথা ভাবা যেতে পারে। অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Obesity Junk Food Diet Child's Weight
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy