রক্তচাপ বৃদ্ধি ডেকে আনতে পারে বিস্মৃতির সমস্যা। ছবি: সংগৃহীত
শুরুতে কিছুতেই চেনা মানুষের নাম মনে পড়ে না। এর পরে ভুলে যাওয়ার তালিকায় যোগ হয় দৈনন্দিন জীবনের নির্দিষ্ট কাজও। বাড়ির বাইরে গেলে পথ হারিয়ে যায়। এ ভাবেই শুরু হয় অ্যালঝাইমার।
ভুলে যাওয়া বা ডিমেনশিয়া বার্ধক্যের এক বড় সমস্যা। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, রাতে রক্তচাপ বেশি থাকলে প্রথমে ডিমেনশিয়া ও পরবর্তী কালে অ্যালঝাইমারসের আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। আমেরিকার ভ্যান্ডারবিল্ট মেডিক্যাল সেন্টারের ভ্যাস্কুলার মেডিসিনের অধিকর্তা চিকিৎসক জোশুয়া এ বেকম্যানের তত্ত্বাবধানে একদল গবেষক দেখিয়েছেন, রাতের দিকে রক্তচাপ স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে গেলে হৃদরোগ ও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের আশঙ্কা বেড়ে যায়। এতে বুদ্ধিমত্তা বা ‘কগনিটিভ ফাংশন’-এর উপর প্রভাব পড়ে। ডিমেনশিয়ারও আশঙ্কা বড়তে থাকে তাতে।
রক্তচাপ বাড়লে মস্তিষ্কে অক্সিজেনযুক্ত রক্তচলাচল কমে যায়। এতে ভুলে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। পরবর্তীকালে সেটাই অ্যালঝাইমারের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমনই বলছেন স্নায়ুর ওষুধের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অংশু সেন। সাধারণ ভাবে দিনের বেলা কাজকর্ম ও পরিশ্রমের সময় রক্তচাপ কিছুটা উপরের দিকে থাকে। যাঁরা উচ্চ রক্তচাপের রোগী, তাঁদের তো বটেই, এমনকি যাঁদের রক্তচাপ স্বাভাবিক, তাঁদের ক্ষেত্রেও এই ঘটনা দেখা যায়। ব্যাপারটা স্বাভাবিক। কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে ব্যাপারটা উল্টে যায়। দিনে রক্তচাপ কমের দিকে থাকে আর রাতে ঘুমনোর সময় রক্তচাপের মাত্রা বাড়তে থাকে, বললেন অংশু সেন। ডাক্তারি পরিভাষায় এই অবস্থার নাম ‘রিভার্স ডিপিং’।
রাতে ঘুমের সময় মস্তিষ্ক বিশ্রাম নেয় ও নিজের মেরামতির কাজ করে। অর্থাৎ সারা দিন মাথা খাটানোর পর মস্তিষ্কের ধূসর অংশের ভাঁজে ভাঁজে জমে থাকা টক্সিন স্রেফ ঘুমিয়ে পরিষ্কার করার সেরা সময় এটি। অথচ ‘রিভার্স ডিপিং’ হলে মস্তিষ্কে জমে থাকা আবর্জনা বেরতে পারে না। এই ভাবে রাতে রক্তচাপ উপরের দিকে থাকল এক দিকে গভীর ঘুমের অভাব হয়, অন্য দিকে মস্তিষ্কের ভাঁজে জমা ময়লার পরিমাণ বাড়তে থাকে। এই দুইয়ের মিলিত ফল স্মৃতিশক্তি হ্রাস। পরিণাম অ্যালঝাইমারস।
ভুলে যাওয়ার সমস্যা মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে বেশি। সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয় নিয়ে একটি গবেষণা হয়। ১ হাজার জন ৭০ বছর বা তার বেশি বয়সি মানুষকে নিয়ে ২৪ বছর ধরে চালানো ওই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যাঁদের রাতে রক্তচাপ ঊর্ধ্বমুখী, তাঁদের এক তৃতীয়াংশ ডিমেনশিয়া ও অ্যালঝাইমারস রোগে ভুগছেন।
উচ্চ রক্তচাপ থাকলে নাক ডাকার অসুখ বা স্লিপ অ্যাপনিয়ারও ঝুঁকি থাকে। নাক ডাকলে শরীরে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন যেতে বাধা পায়। তাতেও রক্তচাপ বেড়ে যায়। এই দুইয়ের মিলিত ফলও ভুলে যাওয়া। রক্তচাপকে বশে রাখতে ওষুধের পাশাপাশি নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ও জীবনযাত্রা বদলে ফেলাও দরকারি। সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন ৩০ মিনিট করে দ্রুত হাঁটাহাঁটি, নুন খাওয়া কমানো ও সঠিক খাবার খাওয়া উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy