চাইলে বার বার জন্মদিন পালন করতে পারেন আপনিও! ছবি: সংগৃহীত
কোনও আত্মীয়ের জন্মদিনের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গেলেন, দেখলেন তাঁর বয়স ৪০। কিন্তু পর দিন এসেই তিনি বললেন, ‘তাঁর বয়স ৩৯ কিংবা ৪১’। তাঁকে পাগল ভাবাও অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু একটু তলিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে, এমনটা বাস্তবেও হতে পারে। পাগলামি নয়, এর পিছনে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ক্যালেন্ডার। পশ্চিমবঙ্গে যেমন একই সঙ্গে বাংলা ও ইংরেজি ক্যালেন্ডার মেনে চলা হয়, তেমনই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তেই এমন বহু ক্যালেন্ডার রয়েছে। কোনও কোনও দেশে একসঙ্গে ছ’টি ক্যালেন্ডারও মানা হয়!
যেমন মায়ানমারের ক্যালেন্ডারে এখন ১৩৮৪ সাল, তাইল্যান্ডের ক্যালেন্ডারে ২৫৬৬, ইথিয়োপিয়াতে আবার ২০১৫, তাতে আবার ১২ নয়, রয়েছে ১৩টি মাস। স্বাভাবিক ভাবেই সব ক্যালেন্ডারের তারিখ সব সময়ে মেলে না। ঠিক যেমন বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, জন্মদিন পালন করলে ইংরেজি তারিখ ভুল হয়ে যায় মাঝেমাঝে, তেমনই।
দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও এক ধাপ বেশি। সে দেশে প্রতি বছর ১ জানুয়ারিতে দেশের সব নাগরিকের জন্মদিন পালন করা হয়। তাই এমনিতেই ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুসারে এক বার আর দেশের নিয়ম অনুযায়ী এক বার জন্মদিন পালিত হয় সে দেশে।
তবে এখানেই শেষ নয়, দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্মদিন ও বয়স নির্ণয়ের বিষয়টি আরও একটু জটিল। এত দিন দক্ষিণ কোরিয়ায় জন্মের সময়ে কারও বয়স শূন্য বা এক দিন বলে ধরা হত না। শিশুর বয়স ধরা হত মায়ের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার সময় থেকে। অর্থাৎ, জন্মের সময়েই শিশুর বয়স ৯-১০ মাস হিসাবে ধরা হত। তবে এ বছর অর্থাৎ, ২০২৩ থেকেই এই পদ্ধতি ছেড়ে বিশ্বের অন্যত্র যে ভাবে বয়স গোনা হয়, তেমন ভাবে বয়স মাপার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার। এ ছাড়াও, সূর্য ও চন্দ্রের চলনের উপর ভিত্তি করেও বিভিন্ন ধরনের ক্যালেন্ডারের চল রয়েছে বিভিন্ন দেশে। তাই দক্ষিণ কোরিয়াতে যদি কেউ বলেন তাঁর বয়স ৩-৪ রকম, তবু তাঁকে অবজ্ঞা করার উপায় নেই।
আসলে ধর্মাচরণ, লৌকিক ক্রিয়াকর্মের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সময়পঞ্জি তৈরিতে। যেমন প্রাচীন ভারতে হিজরি ক্যালেন্ডার কৃষকদের চাষ আবাদের সময়ের তাল রাখতে না পারায় রাজস্ব আদায় হত চন্দ্রবর্ষ অনুযায়ী আর শস্য উৎপাদিত হত সৌরবর্ষের নিয়ম মেনে। চন্দ্রবর্ষ এবং সৌরবর্ষের মধ্যে বারো দিনের পার্থক্য ছিল। শোনা যায় সম্রাট আকবর সৌরবিজ্ঞানী আমির ফাতুল্লাহ সিরাজিকে দায়িত্ব দেন একটা নতুন ক্যালেন্ডার তৈরি করতে। একই ভাবে স্বতন্ত্র ক্যালেন্ডার তৈরির সিদ্ধান্ত নেন গৌড়ের রাজা শশাঙ্কও। ফলে প্রচলনের উপর ভিত্তি করে একই ব্যক্তির একাধিক জন্মদিন থাকতেই পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy