সাবেক আমলের দাবার ছক মার্বেল মেঝে।
ইতালীয় মার্বেলের ঝকঝকে পালিশের মেঝেতে নাকি আয়নার মতো মুখ দেখা যেত একসময়! মোজাইক দানা দিয়ে পালিশ এতটাই চমৎকার হত যে মার্বেল লাগানোর দরকারই হত না। এমনকী, সাদামাটা লাল রঙের মেঝে এতটাই চকককে দেখেছি যে অবাক হয়ে যেতে হয়। পুরনো দিনে খুব একটা সেরামিক মেঝের চল ছিল না, সুতরাং এভাবেই মেঝে তৈরি হত।
এখন দিন বদলেছে। রুচি বদলেছে মানুষের। খাটনি সহজলভ্য করার চেষ্টাও চলছে। মার্বেল যদিও চিরকালীন, কিন্তু মোজাইক দানার মেঝে, কিম্বা মোজাইক দানার টাইলস বা সাধারণ মেঝে আজকাল উঠেই গিয়েছে এক প্রকার। অন্দরসজ্জার ভাবনা আরও অন্যরকম হয়েছে।
কোন মেঝে কিসের জন্যে ব্যবহার করা হবে, সেটাও ভাবা হচ্ছে রীতিমতো। মার্বেলের মেঝে তো চিরকালের। বিশেষ উডেন ফ্লোরিং, রবার ফ্লোরিং, টাফেন্ড গ্লাস ফ্লোরিং, সেরামিক টাইলস, কিংবা রাস্টিক টাইলস ফ্লোরিংও নিয়মিত মেঝের জন্যে ব্যবহার করা হচ্ছে আজকাল। অনেকেই আবার পার্টেক্স করিয়ে নিচ্ছেন। এতে খরচ মার্বেলের মতোই, কিন্তু ঘষাঘষির ঝঞ্ঝাট নেই।
আরও পড়ুন: ঘর সাজাতে খরচ ও ঝক্কি নিয়ে চিন্তায়? রইল পকেটসই সমাধান
সামনেই পুজো। উৎসবের মরসুমে তাই কিছু পরামর্শ রইল, যাতে পুজোর আগে ভালভাবে নিজের বাড়ির মেঝের যত্ন নিতে পারেন।
আপনার মার্বেলের মেঝের বয়স কি কয়েক বছর পেরিয়ে গিয়েছে? একটু পুরনো পুরনো দাগ ধরেছে? অনেক জায়গায় জলে আয়রনের পরিমাণ বেশি। তাই এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাথরুমের মেঝে। আপনার বাড়িতে আয়রন ফিল্টার লাগানো আছে কি? যদি না থাকে ফ্লোরিংয়ে কিন্তু লালচে একটা দাগ থেকে যেতে পারে। সুতরাং সেটাও তুলতে হবে। বাথরুমের মেঝে থেকে জল লিক করছে কি না সেটাও দেখে নিন। এমন কিছু সমস্যার সমাধান সহজেই করে নিতে পারেন আপনি।
আরও পড়ুন: জুতোও রাখতে পারেন ওয়ার্ডরোবে
উৎসবের আগে বাড়ির মেঝে, রান্নাঘর এবং বাথরুমের মার্বেলের মেঝেকে খুব ভাল করে পালিশ করে নিতে পারেন। খরচও খুব বেশি নয়। ফ্লোর পালিশ মেশিন এবং হ্যান্ড পালিশ মেশিন— এ ক্ষেত্রে দুটোই দরকার পড়বে। গ্রানাইট পালিশের কথা আগে থেকে বলে রাখুন। শেষ পর্বের পালিশ গ্রানাইট ফিনিশ হবে। কিন্তু বেশি স্লিপারি যেন না হয়ে যায়।
বাথরুম অথবা রান্নাঘরের মেঝে হ্যান্ড মেশিন দিয়ে পালিশ করিয়ে নেওয়াই ভাল। শুধু তাই নয় বাথরুমের মার্বেল বা টাইলসের জয়েন্টগুলোতে ভালো করে হোয়াইট সিমেন্টের আস্তরন লাগিয়ে নিন। যাতে জল লিক না করে। ভাল করে পালিশ করিয়ে নিতে পারলে আপনার যত পুরনো মার্বেল মেঝেই থাকুক না কেন, নতুনের মত চকচকে দেখাবে। চকচকে মেঝে দেখতে দারুণ লাগে। বিশেষ করে পুজোর দিনে একটা মন ভাল করা আনন্দ দেয়। উৎসবের দিনগুলোতে ড্রইং রুমের সোফাসেটের সামনে, শোওয়ার ঘরে খাটের সামনে ছোট কার্পেট পেতে রাখতে পারেন। মাঝে মাঝে মেঝের এরকম লুক পাল্টালে ভাল লাগে বেশ। মেঝের যত্ন নিতে হয় কিন্তু নিয়মিত। মেঝেতে ধূলো জমতে দেবেন না। অনেক দিনের জন্য বাড়ির বাইরে গেলে মেঝেতে পাতলা প্লাস্টিকের শিট কিনে টানটান করে পেতে যাবেন। যাতে কোথাও দিয়ে ধুলো ঢুকতে না পারে। সাদা মেঝেতে ধূলো জমে গেলে পরে সেগুলোকে পরিষ্কার করতে সমস্যা পোহাতে হয়। যাঁরা মেঝের লাল দাগ নিয়ে চিন্তিত, তাঁরা বোরাক্স পাউডার দিয়ে মেঝে একটু ঘষে নিন, নতুনের মতো চকচক করবে।
(লেখক অন্দরসজ্জা বিশেষজ্ঞ)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy