ব্রেস্ট ক্যানসারের ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ের চাবিটি থাকে আক্রান্তের কাছেই। ছবি: শাটারস্টক।
ব্রেস্ট ক্যানসার। তিরিশ পেরনো ভারতীয় মহিলাদের এর থেকে বড় ভয় সম্ভবত আর কিছু নেই। সমীক্ষা বলছে (ক্যানসার ইন্ডিয়া ডট ওআরজি ডটইন এর রিপোর্ট) শুধু ২০১৮ সালেই ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৪৬৮জন মহিলা। মৃতের সংখ্যা ৮৭ হাজারের বেশি। মহামারির মত ছড়িয়ে পড়া এই রোগের প্রতিকার দূরে থাক, কী ভাবে হবে রোগ নির্ণয়, তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে।
চিকিৎসকরা বলছেন ব্রেস্ট ক্যানসারের ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ের চাবিটি থাকে আক্রান্তের কাছেই। তাদের মতে ‘সেলফ ডিটেকশন’র বিকল্প নেই এ ক্ষেত্রে। ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে ক্রমশই এই রোগের প্রভাব বাড়ছে। ব্রেস্ট ক্যানসার বিশেষজ্ঞ তাপ্তি সেনের মতে, ‘‘আমাদের দেশে ইদানীং ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এ দেশে ৩০-৫০ বছর বয়সীরা এই অসুখের শিকার হন সবচেয়ে বেশি। বিদেশে আবার আক্রান্তদের বেশির ভাগেরই বয়স ৫০-এর উপরে। প্রথম থেকেই এই অসুখ নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। বয়স ৩০ পেরোলেই, অস্বস্তি থাক ছাই না থাক, ব্রেস্ট ক্যানসার বিশেষজ্ঞদের কাছে এসে বছরে এক বার চেক আপ করানো উচিত। কোনও রকম অস্বস্তি থাকলে তো তা করাতে হবেই। আর মনে রাখতে হবে, ব্রেস্টের সব লাম্প বা টিউমারে কিন্তু ক্যানসারের প্রবণতা থাকে না। বরং ১০-১৫ শতাংশ টিউমারেই এই ভয় থাকে, কিন্তু সেই চিকিৎসা দ্রুত শুরু হওয়া দরকার।’’
কী ভাবে বুঝবেন শরীরে বাসা বাঁধছে কি না এমন ঘোরতর অসুখ? কেবলমাত্র লাম্প থাকলেই তা কি ভয়ের? না কি এই অসুখের পিছনে ঘাপটি মেরে থাকে আরও নানা উপসর্গ?
আরও পড়ুন: কথা বলার জড়তা নিয়ে ভাবুন গোড়া থেকেই
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ব্রেস্ট ক্যানসার বিশেষজ্ঞদের কাছে এসে বছরে এক বার চেক আপ করানো উচিত।
ব্রেস্ট লাম্পগুলি অনেক সময় আন্ডার আর্ম বা কলার বোনের তলাতেও দেখা যায়। এছাড়া স্তনবৃন্তের আশপাশেও এই ধরনের লাম্প থাকে যেগুলি টিপলে শক্ত লাগে এবং অবস্থান পরিবর্তন করে না। এমন কিছু দেখলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। কোনও রকম র্যাশ নেই স্তনে, তবু চুলকানির মতো অনুভূতি হচ্ছে, এমন কিছু কিন্তু ক্যানসারের লক্ষণ। স্তনে টিউমার থাকলে তা আশপাশের ব্রেস্ট টিস্যুগুলির উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং তার ফলে স্তনে একটা ফোলা ফোলা ভাব দেখা যায়। এরই সঙ্গে স্তনে লাল ভাবও থাকে। স্তনে হাত দিলে বা চাপ দিলে ব্যথাও লাগে। কাঁধ এবং ঘাড়ের ব্যথাও ব্রেস্ট ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে কারণ এই ক্যানসার স্তন থেকে খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে শরীরের এই অংশগুলিতে। স্তনের আকার বিকৃতি হলে কখনওই ফেলে রাখবেন না। অন্তর্বাস পরে থাকার সময় যদি কোনও ঘর্ষণ বা ছড়ে যাওয়ার মতো অনুভূতি হয়, বিছানায় শোওয়ার সময় যদি ব্যথা লাগে তবে চিকিৎসকের কাছে যেতে দেরি করবেন না। ব্রেস্ট ফিডিং করছেন না অথচ স্তনবৃন্ত থেকে অল্প অল্প দুধের মতো জলীয় পদার্থ নিঃসরণ হচ্ছে এমনটা দেখলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যাবেন। এটি ব্রেস্ট ক্যানসারের অন্যতম বড় লক্ষণ।
আরও পড়ুন: রক্তাল্পতা এক ভয়ঙ্কর সমস্যা
স্তনবৃন্ত হল স্তনের অসম্ভব সংবেদনশীল অংশ। যদি দেখেন যে স্তনবৃন্ত স্পর্শ করলেও তেমন একটা অনুভূতি হচ্ছে না, বা একেবারেই অনুভূতিহীন হয়ে গিয়েছে তবে তা ব্রেস্ট ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি। স্তনের উপরের ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়া (অনেকটা কমলালেবুর খোসার মতো) ক্যানসারের প্রাথমিক স্টেজের লক্ষণ। এ ক্ষেত্রেও দেরি না করে চিকিৎসকের দারস্থ হওয়াই ভাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy