শীতেও এক দিনও বাদ দেবেন না শিশুর স্নান। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
বাতাসে হিমের পরশ লেগেছে ইতিমধ্যেই। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কিছু অভ্যাসের বদলও আনতে হয়, নইলে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে বাড়িতে শিশু থাকলে হিম পড়তে শুরু করলেই জরুরি কিছু ব্যবস্থা নিতে হয়।
এমনিতেই শীতের শুরু থেকেই শিশুদের স্নান করানোর ব্যাপারে অনেক অভিভাবক আশঙ্কায় থাকেন। কিন্তু যদি বিশেষ ক’টা নিয়ম মেনে শীতের শুরুতেই নিজের শিশুসন্তানের স্নানের বিষয়ে যত্নবান হন— তা হলে ঠান্ডা লাগা বা শ্লেষ্মাজনিত অসুখ থেকে শিশুকে সহজেই দূরে রাখা যাবে।
অনেকেই ভাবেন শীতের শুরু থেকে গোটা শীতকাল শরীর বিশেষ ঘামে না, তাই রোজ স্নানের তেমন কোনও প্রয়োজন নেই। অনেক শিশু ঠান্ডার ভয়ে তাই স্নান করতে না চাইলে মা-বাবাও খুব একটা জোরাজুরি করেন না। কিন্তু চিকিৎসকরা এমন ধারণাকে সমর্থন করেন না। বরং শিশুকে স্নান করানো নিয়ে দরকারি কিছু সতর্কতা অবলম্বনের কথাই বলেন। সে সব সতর্কতার কথাই জানাচ্ছেন শিশুরোগ বিষেশজ্ঞ অম্লান দত্ত।
আরও পড়ুন: আসছে শীত, কী করলে রোগ এড়াবেন?
স্নান সারা হলেই শিশুর শরীর ঢেকে দিন গরম তোয়ালেতে । ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
চিকিৎসকের মতে, শীতকাল মানেই স্নান বাদ দেওয়া যেতে পারে এই ধারণা থেকে আগে বেরন। শিশুর জন্মের তিন দিন পর থেকেই তাকে স্নান করানো উচিত। তার পর দেড় মাস পর্যন্ত এক দিন অন্তর স্নান করার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু যে সব শিশুর বয়স দেড় মাসের বেশি, তাদের অবশ্যই রোজ স্নান করান। তবে শিশু নিউমোনিয়া বা ব্রঙ্কাল কোনও অসুখ নিয়ে জন্মালে বা সময়ের আগেই জন্ম নিলে সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। শীতে আবহাওয়ার কারণে আমাদের শরীরের অভ্যন্তর শুষ্ক হয়ে যায়। তাই বাইরেও জলের অভাব পড়লে শরীর গরম হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়বে শিশু। তা ছাড়া শিশুর ত্বক অত্যন্ত সংবেদনশীল। তাই এক দিন স্নান না করালেও তাদের ত্বকে নানা সমস্যা দেখা যেতে পারে। তবে শীতের শুরু থেকেই ব্যবস্থা রাখুন উষ্ণ জলের। গরম জল ছাড়া স্নান একেবারেই নয়। স্নান করানোর জন্য নির্দিষ্ট রাখুন একটি সময়। শিশুদের বায়োলজিক্যাল ক্লকের খুব বেশি হেরফের করা ঠিক নয়। যে দিন কুয়াশা বেশি পড়বে সে দিনও স্নান বন্ধ নয়, বরং স্নানের সময়টা কমিয়ে ফেলুন। গায়ে জ্বর থাকলে বা আগে থেকেই ঠান্ডা লেগে থাকলে মাথা না ভেজালেও গরম জলে গা ভাল করে মুছিয়ে দিন।
আরও পড়ুন: ব্যায়াম করে দাবিয়ে রাখুন ডায়াবিটিসকে
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
স্নানের সময় খেয়াল রাখুন যেন স্নানের জায়গায় বাইরের হাওয়া ঢুকতে না পারে। গরম পরিবেশে স্নান করান। স্নান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাথা ও কান মোছান ভাল করে ও শিশুর শরীর ভাল করে শুকনো নরম ও গরম অনুভব হবে এমন তোয়ালে দিয়ে ঢেকে দিন। অনেকেই স্নানের পর গরম জলে তোয়ালে ভিজিয়ে তা দিয়ে শিশুকে মুড়ে দেন। এ ভুল করবেন না। এতে ঠান্ডা লাগে বেশি। শীতে শিশুকে স্নান করানোর জন্য আস্থা রাখুন গ্লিসারিন সাবানে। এতে ত্বকের রুক্ষতা কমবে। শ্যাম্পুর ক্ষেত্রেও কম ক্ষারযুক্ত শ্যাম্পুতে ভরসা রাখুন। স্নানের আগে শিশুকে কিছু ক্ষণ রোদে রাখুন। তার পর নরম হাতে সরষের তেল বা জলপাইয়ের তেলে ভাল করে মালিশ করান তার শরীর। এতে শরীর গরম থাকবে। সহজে ঠান্ডা লাগবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy