ডায়াপার পরানোর আগে জেনে নিন তা ব্যবহার ঠিক নিয়ম। ছবি: শাটারস্টক।
প্রতি রাতেই ঘুম ভেঙে একনাগাড়ে কাঁদতে থাকে শিশু? কিংবা বাইরে বেরোলে একটু পর থেকেই কান্নাকাটি করে?এমন নানা সমস্যা ছাড়াও শিশুর ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা বা সংক্রমণে ভোগার অন্যতম কারণ কিন্তু আপনার ডায়াপার পরানোর ভুল!
সাধারণত, বেশির ভাগ অভিভাবক মনে করেন, শিশুকে প্যান্টের ভিতরে ডায়াপার পরিয়ে রাখার মানেই অনেকটা নিশ্চিন্ত থাকা। তাই বাইরে বেরিয়ে বা সারা দিন পরিশ্রমের পর রাতে একটু নিশ্চিন্তে বিশ্রামের কারণে অনেক মা-বাবাই প্রায় তিন বছর বয়স পর্যন্ত সন্তানকে ডায়াপার পরিয়ে রাখেন। কিন্তু এটি ব্যবহারের সময়, নিয়ম ও পদ্ধতি না জানার কারণে শিশুর অস্বস্তি তো হয়ই, তা ছাড়া তার ত্বকেও নানা প্রদাহ তৈরি হয়, এমনকি শ্লেষ্মাজনিত অসুখেরও শিকার হয় শিশু।
এমনিতে সন্তানের যত্নের বিষয়ে অভিভাবকরা সব সময় সচেতন। তবু শিশুর যত্নের কিছু নিয়ম অজানা থাকায় এবং কর্মব্যস্ত জীবনে অভিভাবকদের হাতে সময় কমে যাওয়ায় এমন ভুল করে বসেন অনেকেই। ‘‘ডায়াপার পরানো থাকলে শিশু মল-মূত্র ত্যাগ করলেও তখনই তাকে পরিষ্কারের প্রয়োজন পড়ে না, তাই অনেকেই ডায়াপারে আস্থা রাখেন। কিন্তু শিশুর ত্বকের কথা ভাবেন না। ডায়াপারের ভুল ব্যবহারের জেরে শিশুর ত্বকে র্যাশ, অ্যালার্জি ও প্রদাহ তৈরি হয়। তাই এই বিষয়ে বিশেষ সচেতনতা নেওয়া উচিত।’’— জানালেন ত্বক বিশেষজ্ঞ সঞ্জয় ঘোষ।
আরও পড়ুন: ঘি খাবেন না মাখন, কোনটা বেশি উপকারী, জানেন?
না ভিজলেও প্রতি দু’ঘণ্টায় বদলে দিন ডায়াপার। ছবি: শাটারস্টক।
তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে এই সমস্যা থেকে বাঁচা যায়। বিশেষজ্ঞদের বাতলানো সে সব নিয়ম জেনে নিন।
ডায়াপার পরাতেই হবে এমন ধারণা মাথায় গেঁথে নেবেন না। বরং ডায়াপার না পরালেই শিশু বেসি সুস্থ থাকে। নেহাত অসুবিধার জেরে মা-বাবা শিশুকে ডায়াপার পরিয়ে রাখেন, তেমন ব্যস্ততা না থাকলে হালকা রাখুন শিশুকে। ডায়াপার কেনার আগে অবশ্যই ভাল করে দেখে নিন এর কাপড়। অবশ্যই পরামর্শ করুন ত্বক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে। কেবল সুতি নয়, নরম সুতির কাপড় ছাড়া ডায়াপার কিনবেন না। অন্য ধরনের কাপড়ে ঘসা লেগে শিশুর ত্বক লালচে হয়ে যায়। খানিকটা বিশ্রামের লোভে অনেক অভিভাবক রাতভর শিশুকে ডায়াপার পরিয়েই শুইয়ে রাখেন। পারলে এই অভ্যাস আজই ত্যাগ করুন। রাতে এমনিতেই শিশুরা মূত্র বেশি ত্যাগ করে। সারা রাত ওই ভিজে অবস্থায় শুয়ে থাকলে শিশুর ত্বকে ভেজা ভাব থেকে র্যাশ বেরোয়। তা থেকে ঠান্ডাও লাগে প্রায়ই। এ ছাড়া মল-মূত্র দীর্ঘ ক্ষণ শরীরের লেগে থাকলে তা থেকে সংক্রমণ ছড়ায়। তাই রাতে যে ভাবেই হোক শিশুকে ডায়াপার ছাড়া ঘুম পাড়ান, দরকার হলে অভিভাবকরা পালা করে যত্ন নিন শিশুর।
আরও পড়ুন: গাড়িতে চড়লেই মাথা ঘোরে, বমি পায়? এ সব মানলে রেহাই মিলবে সহজে
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
বাইরে বেরোনোর সময় ডায়াপার পরালে, কিছু সময় অন্তর তা পরীক্ষা করুন। ভিজে গেলেই বদলে দিন। এমনকি, শিশু মল-মূত্র ত্যাগ না করলেও দু’ঘণ্টা অন্তর বদলান ডায়াপার। এমনিতেই মোটা প্যাডিং থাকায় তা শরীরকে গরম রাখে, নরম চামড়ার উপর চেপে থাকা কাপড়ের ঘষা লেগে কুঁচকির দু’পাশ ছড়ে যেতে থাকে। কোনও কোনও ডায়াপার প্রস্তুতকারী সংস্থা অত্যাধুনিক উপায়ে কাপড় ভিজে গেলেই সঙ্কেত পাঠায়, ভাল হয় সে সব ডায়াপার কিনতে পারলে। খুব দূরের যাত্রাপথ ছাড়া সন্তানকে ডায়াপার না পরানোই বাল। এতে কাপড় থেকেও সংক্রমণ ছড়ায়। তাই চেষ্টা করুন যতটা সম্ভব সিশুর শরীরকে নির্ভার ও শুকনো রাখতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy