প্রত্নতাত্ত্বিক পরীক্ষা অন্তত সে কথাই বলছে! ইদানীং না হলেও সভ্যতার শুরুর দিকে মিষ্টি কুমড়ো মানেই ছিল সাক্ষাৎ বিষ! খেলেই মৃত্যু অনিবার্য!
সম্প্রতি সমীক্ষা থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে এ কথা জানাচ্ছে পেনসিলভ্যানিয়ার পার্ক বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁদের বক্তব্য ইঙ্গিত করছে আদিম যুগের দিকে। যে সময়ে পৃথিবী কাঁপিয়ে ঘুরে বেড়াত বিশালাকার ম্যামথ, স্লথরা! সেই সময়ে কুমড়ো না কি ছিল ওই প্রাণীদেরই খাদ্য। মানুষ তখনও চাষ-আবাদে মন দেয়নি। সত্যি বলতে কী জানেই না ব্যাপারটা! শিকার করে পাওয়া মাংস আর খুঁজে পাওয়া ফল-মূল— এই তার খাদ্য!
তা, পশু যদি খেয়ে বহাল তবিয়তেই বেঁচে থাকতে পারে, মানুষের পক্ষে কেন তবে অসুবিধের ছিল কুমড়ো ভক্ষণ?
কারণটা ব্যাখ্যা করে জানিয়েছেন পেনসিলভ্যানিয়ার গবেষকদল। তাঁদের দাবি, সেই সময়ে ওই প্রাণীদের বর্জ্য থেকে এখানে-ওখানে গজিয়ে উঠত কুমড়ো। বিশালাকার প্রাণীদের বর্জ্য সার হিসেবে পরিপুষ্ট করত ওই বুনো কুমড়ো প্রজাতিকে। ফলে, মানুষের শরীরের পক্ষে তা নিরাপদ ছিল না!
“আমরা কুকারবিটা প্রজাতির ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখেছি। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য বেছে নিয়েছিলাম সেই সময়ে গজিয়ে ওঠা কিছু বুনো কুমড়ো, আর চাষ করা কুমড়োকে। পরীক্ষায় দেখা গেল, ওই বুনো কুমড়ো মানুষের শরীরের জন্য মোটেও নিরাপদ নয়”, ব্যাপারটা যে বেশ গুরু-গম্ভীর, বিশদে বুঝিয়ে দিচ্ছেন গবেষকরা!
আর ঠিক এই জায়গায় এসে জানা যাচ্ছে আর একটা মজার তথ্য। আদিম মানুষ যখন থেকে চাষ-আবাদ শিখল, তখন তারা কুমড়োর চাষ করত। কুমড়োর শরীর থেকে বিষ তখনও যায়নি, তখনও কুমড়ো খেলে বিপদ হবেই! তার পরেও কেন কুমড়োর চাষ করত আদিম মানুষ?
“ওই কুমড়োর বড় বড় খোল তখন ব্যবহার করা হত মূলত বাসন হিসেবে। কুমড়োর খোলে জল রাখত আদিম মানুষ, রাখত খাবার-দাবারও”, বলছেন লোগান কিসলার, গবেষণার সঙ্গে যুক্ত থাকা এক প্রত্নতাত্ত্বিক।
তা হলে ঠিক কবে থেকে কুমড়োর শরীর থেকে বিষ গেল? কবে থেকে তা বিবর্তিত হয়ে পরিণত হল নেহাতই নিরীহ নিরামিষে?
সে কথার উত্তর অবশ্য এখনই দিতে পারছেন না পেনসিলভ্যানিয়ার গবেষকরা। আরও খানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলুক, তার পরে জানা যাবে সে কথাও!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy