Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in India

টিকা ‘নিয়েও’ সংক্রমণ কেন

ভারত বায়োটেকের টিকার তৃতীয় দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগে অংশ নিয়েও করোনা সংক্রমিত হয়েছেন বলে শনিবার জানিয়েছেন হরিয়ানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনিল বিজ। এতে প্রতিষেধক নিয়ে তৈরি হয়েছে কিছু প্রশ্ন। যদিও চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, টিকা পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কারও সংক্রমিত হওয়াটা আদৌ অস্বাভাবিক কিছু নয়। এখানে রইল তার ব্যাখ্যা চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, টিকা পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কারও সংক্রমিত হওয়াটা আদৌ অস্বাভাবিক কিছু নয়।

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:০৩
Share: Save:

প্রশ্ন: পরীক্ষামূলক প্রয়োগে অংশ নিয়েও কেন আক্রান্ত হলেন হরিয়ানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী?

উত্তর: কোভ্যাক্সিনের প্রতিষেধক দুই ডোজ়ের। প্রথম ডোজ় নেওয়ার ২৮ দিন পরে দ্বিতীয় ডোজ় নিতে হয়। দ্বিতীয় ডোজ়ের ১৪ দিন পরে স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে করোনা সংক্রমের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার কথা। অর্থাৎ মোট ছ’সপ্তাহের প্রোটোকল। কিন্তু এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এক ডোজ় নিয়েছিলেন ২০ নভেম্বর। তার দু’সপ্তাহের মাথায় তিনি সংক্রমিত হন। ফলে প্রোটোকল মেনে ৪২ দিন পুরো না-হওয়া সংক্রমণের অন্যতম কারণ।

প্রশ্ন: যারা পরীক্ষামূলক প্রয়োগে অংশ নিচ্ছেন, তাঁরা কী সকলেই প্রতিষেধক পাচ্ছেন?

উত্তর: ভারত বায়োটেক সংস্থার বিবৃতি অনুযায়ী দেশের ২৫টি কেন্দ্র ২৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের উপরে তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে। ডাবল ব্লাইন্ড পদ্ধতি মেনে স্বেচ্ছাসেবকদের অর্ধেক পেয়েছেন সত্যিকারের প্রতিষেধক। বাকিদের দেওয়া হয়েছে জল বা স্যালাইনের মতো নিরাপদ তরল যা বৈজ্ঞানিক ভাষায় ‘প্ল্যাসিবো’ নামে পরিচিত। নীতিগত ভাবে কোনও স্বেচ্ছাসেবককেই জানানো হয় না, তিনি কী পেয়েছেন। ফলে যে স্বেচ্ছাসেবকেরা ‘প্ল্যাসিবো’ পেয়েছেন, তাঁদের শরীরে ছ’সপ্তাহ পরেও কোনও অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার কথা নয়। হরিয়ানার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ক্ষেত্রে তিনি যদি ‘প্ল্যাসিবো’ পেয়ে থাকেন, তা হলে আর পাঁচ জন সাধারণ মানুষের মতোই তাঁর সংক্রমণের পূর্ণ সম্ভাবনা থেকে যায়।

প্রশ্ন: স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যোগ দেওয়া সাধারণ মানুষ থেকে মন্ত্রী, সকলেই দাবি করছেন তিনি প্রতিষেধক পেয়েছেন। এই দাবি কি ঠিক?

উত্তর: একেবারেই ঠিক নয়। কে সত্যিকারের ওষুধ পাচ্ছেন, আর কে ‘প্ল্যাসিবো’ পাচ্ছেন, তা স্বেচ্ছাসেবক কেন, যাঁরা টিকা দিচ্ছেন তাঁরাও জানেন না। প্রত্যেক ব্যক্তির নামের প্রেক্ষিতে একটি কোড থাকে। প্রয়োগের শেষে যখন ফলাফল নিয়ে পর্যালোচনা শুরু হয়, তখন জানা সম্ভব কে কী পেয়েছিলেন। তার আগে নীতিগত ভাবে কারও জানা সম্ভব নয়।

আরও পড়ুন: ৫ লাখের তালিকায় দেশের অষ্টম রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ, তবে কমছে সক্রিয় রোগী

প্রশ্ন: প্রতিষেধক পেয়েছেন ভেবে স্বেচ্ছাসেবকেরা অনেকে মাস্ক পরা ছেড়ে দিচ্ছেন, মানছেন না দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি। স্বেচ্ছাসেবকদের এই আচরণ কি ঠিক?

উত্তর: একদম নয়। স্বেচ্ছাসেবকেরা জানেন না, তাঁদের শরীরে ওষুধ গিয়েছে না প্ল্যাসিবো। ফলে তাঁদেরও সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত।

আরও পড়ুন: কালকের ভারত বন্‌ধ ঘিরে ঐক্যের চেষ্টা ছত্রভঙ্গ বিরোধী শিবিরের

প্রশ্ন: আগামী ছ’মাসের মধ্যে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিষেধক বাজারে আসতে চলেছে। প্রতিষেধক নেওয়া মানেই আর করোনা সংক্রমণ হবে না, এই ধারণা কতটা ঠিক?

উত্তর: একমাত্র গুটিবসন্ত ছাড়া অন্য কোনও প্রতিষেধক ১০০ শতাংশ কার্যকরী নয়। ফাইজ়ার সংস্থার দাবি, তাদের টিকার কার্যকারিতা ৯৫%। তার মানে ৫% লোকের করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। সেই ৫% ব্যক্তি কে, সেটা কেউ জানে না। প্রতিষেধক নেওয়া যে কোনও ব্যক্তি ওই ৫%-এর শ্রেণিতে পড়তে পারেন। ভারত বায়োটেক সংস্থার কোভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা শোনা যাচ্ছে ৭০%-এর কাছাকাছি। তার অর্থ টিকা নেওয়া সত্ত্বেও প্রতি ১০০ জনে ৩০ জনের সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকেই যাবে।

# সূত্র: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in India COVID-19 Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy