‘একটুকু ছোঁয়া লাগে, একটুকু কথা শুনি’। এক কালে বসন্তের প্রেমের মিষ্টত্ব বোঝাতে ব্যবহার হতো এই কথা। এ বার কী হল? আবারও যে ফাগুন লেগেছে শহরের অলিগলিতে। এসেছে প্রেম দিবস। এ দিকে, অতিমারি শিখিয়েছে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে। কেউ সামনে এলে, মাস্ক পরে কথা বলতে। যে প্রেমিক নিজের ঘরে বাস করেন না, তাঁর সঙ্গে কেমন ভাবে কাটল তবে ভ্যালেন্টাইন্স ডে? অল্প ছোঁয়া, কানে-কানে কথায় কি অতিমারির নিয়ম এল বাধা হয়ে? না কি বাঁধ ভাঙতে বাধ্য করল বসন্তের হাওয়া? এই প্রেম দিবস যে একেবারেই আলাদা। প্রেম কেমন রূপ নিল অতিমারির ছোঁয়ায়?
কোনও বিখ্যাত জন নন, আনন্দবাজার ডিজিটাল কথা বলল শহরের তরুণ প্রেমিক-প্রেমিকাদের সঙ্গে। তাঁদের কাছেই জানতে চাওয়া হল এ বারের প্রেম দিবসের অভিজ্ঞতা। প্রথম চুম্বন, লুকিয়ে আহ্লাদ, অথবা অচেনার সঙ্গে এক সন্ধ্যার মাখ-মাখ প্রেমে কি বদল আনল এই ভ্যালেন্টাইন্স ডে?
সদ্য কলেজে পা মীরার তিন মাস আগে আলাপ হয়েছে রক্তিমের সঙ্গে। একটি ডেটিং সাইটে। বাড়ি বসে ক্লাসের ফাঁকে সারাক্ষণ আড্ডা হয় দু’জনের। ছুঁয়ে দেখেননি একে-অপরকে। সামনাসামনি দেখাই যে মাত্র হয়েছে এক বার। কিন্তু বসন্ত ভারী কঠিন। না দেখা করলেই যে নয়। তাই বেছে নিয়েছিলেন প্রেম দিবসটাই। একে-অপরের সঙ্গে দেখা করেছেন বটে। তবে মুখোমুখি বসে। দূরত্ব রেখে। বেশিটাই মাস্ক পরে। কফি শপে ঢুকে স্যানিটাইজারের বোতলটা প্রায় খালি করে ফেলেছেন নাকি রক্তিম, জানালেন মীরা।
আর এক যুগল, অনিন্দিতা-অর্কর তো আবার এক বছরের পুরনো প্রেমটা ভেঙে যাওয়ার জোগাড় হল। বিতর্কে সেই সামাজিক দূরত্ব। ভুলের মধ্যে ভুল, অর্ক বাসে চেপে দেখা করতে গিয়েছিলেন অনিন্দিতার সঙ্গে। যে হাত ছুঁয়েছে বাসের সিট, সে কি প্রেমিকার ঠোঁট ছুঁতে পারে? একেবারেই না। অনুমতি পাননি তিনি।
তবে কি চুম্বনহীন কাটল প্রেম দিবস?
না। অন্য দিন না পরলেও, এ দিন সার্জিকাল মাস্কটা মুখে চাপাতে ভোলেননি ১৯ বছরের সাগরনীল। প্রেমিকাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি যত্নশীল। বান্ধবী লীনার হাত ধরেছেন, তবে তাঁর চোখ-মুখ ছুঁয়ে দেখেননি। বুঝিয়েছেন তাঁকে, যে নিজের ঠোঁটটা মাস্ক দিতে ঢাকাই ছিল। ফলে অন্ধকার রাস্তার মোড়ে জীবনের প্রথম চুম্বনটি সযত্নে সেরেছেন এই প্রেম দিবসেই। মুচকি হেসে সাগরনীল বললেন, ‘মাস্ক অনেক কাজে লাগে।’ প্রেমিকাকেও ভয় পেয়ে বলতে হয়নি, ‘ছুঁতে নাহি দিব!’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy