পুজোয় সঙ্গে রাখুন হোমিওপ্যাথি ওষুধ।
কখনও ভয়ানক গরম, কখনও শিশির ভেজা মনোরম সকাল— এই আবহাওয়ায় আপনি-আমি আনন্দে। তবে আমাদের সঙ্গে সঙ্গে আনন্দে আছে রোগ-জীবাণুরাও। তাই পুজোর আগেও ডেঙ্গির পাশাপাশি ইনফ্লুয়েঞ্জা বা সর্দি-কাশি কিংবা ডায়ারিয়ার হাত থেকে নিস্তার নেই। এই সময়ে বাচ্চাদের চট করে অসুখে পড়ার ঝুঁকি বাড়ে।
সারা বছরের নানা সমস্যা ও দুর্ঘটনার মাঝে শারদীয়া খানিকটা প্রলেপ নিয়ে আসে। পুজোয় আট থেকে আশি সকলেই মেতে ওঠেন লাগামছাড়া আনন্দে। বাড়ির খুদে সদস্যরা হাউজিং বা পাড়ার মণ্ডপ ছেড়ে এক পা নড়তে চায় না। এরই মধ্যে আচমকা জ্বর-সর্দি-হাঁচি-কাশি শুরু হলে মহা বিপদ। কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় যে হারে ডেঙ্গির উপদ্রব বাড়ছে তাতে সকলকেই সতর্ক থাকতে হবে। অসুখবিসুখ হলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরামর্শ নেওয়া দরকার। প্রাথমিক চিকিৎসা হিসাবে কিছু হোমিওপ্যাথি ওষুধ খুব ভাল কাজ করে।
এই সময়ে দিনে গরম রাতে শিরশিরে বাতাস। ঋতু পরিবর্তনের সন্ধিক্ষণ। মশাদের সঙ্গে সঙ্গে জীবাণুদের বাড়বাড়ন্ত অব্যাহত। বৃষ্টিতে ভিজে বা বাইরের খাবার খেয়ে কিন্তু সমস্যা হতেই পারে। মায়েরা সতর্ক থাকলে এই সমস্যার মোকাবিলা করতে পারেন অনায়াসে। বাড়িতে হোমিওপ্যাথি ওষুধের একটা বাক্স রেখে দিলে ছোটখাটো শারীরিক সমস্যায় ঝটপট রেহাই মিলতে পারে।
আরও পড়ুন: অসুখের ভ্রূকুটিতে পুজোর আনন্দে কাটছাঁট? রইল দরকারি সমাধান
বাচ্চারা ছোটাছুটি করে ঘেমেনেয়ে খেলাধুলো করবে এটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু গরম হলেই ঠান্ডা ঘরে ঢুকে ঘাম শুকানো আর ঠাণ্ডা জল খেয়ে আবার দৌড়ে চলে যাওয়া— এরকম করলে চলবে না। অনেক বাচ্চা আছে, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব একটা জুতসই নয়। তাঁদের অল্পেই গা ম্যাজম্যাজ, জ্বর-জ্বর ভাব হতে পারে। এরকম হলে ডালকামারা ৩০ হোমিওপ্যাথি গুলি খাওয়ানো শুরু করুন। ৬–৮ টা করে গুলি দিনে চার-পাঁচ বার খাওয়ালেই দেখবেন সমস্যা উধাও।
বারবার হাঁচি আর নাক দিয়ে অঝোরে জল ঝরছে, মাথা ঝিমঝিম। তাতেও খুব একটা কাবু নয় বাচ্চা। হাঁচি-কাশির মধ্যেই ছোটাছুটি করছে। ভাইরাল ফিভারের সূত্রপাত হতে পারে এ থেকেই। কোনও ঝুঁকি না নিয়ে রোগটাকে জব্দ করুন ঝটপট। অ্যাকোনাইট ৩০, নির্দিষ্ট মাত্রায় দিলে বাচ্চা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। তবে তেড়ে জ্বর এলে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতেই হবে। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক হোন বা অ্যালোপ্যাথি— অসুখ বাড়লে পরামর্শ নিতে দেরি করবেন না।
দৌড়োদৌড়ি করে ক্লান্ত, গা-হাত-পায়ে ব্যথা, ঝুপ করে বিছানায় গড়িয়ে পড়ছে, ঘ্যানঘ্যান করছে এই ধরনের সমস্যা হলে রাসটাক্স ৩০ একই নিয়মে খাইয়ে দিলে বাচ্চা আগের ফর্মে ফিরে আসবে।
আরও পড়ুন: পুজোয় সময় বাঁচিয়ে ঠাকুর দেখতে চান? তবে সঙ্গে থাকুক এ সব
ইদানীং দূষণের জন্যে বাচ্চাদের মধ্যে হাঁপানির প্রকোপ বাড়ছে। সর্দি-কাশি হলেই শ্বাসকষ্ট শুরু। শুয়ে থাকলে কিছুটা রিলিফ। এরকম ভোগান্তি হলে ব্রায়োনিয়া ৩০ দিন। হোমিওপ্যাথি গুলি বেশির ভাগ বাচ্চাদেরই পছন্দ। তাই ওষুধ খাওয়ানো নিয়ে কোনও ঝঞ্ঝাট নেই। ব্রায়োনিয়া ৩০ এই ধরনের সমস্যার মোকাবিলায় দারুণ কাজ করে। কয়েক বার এই ওষুধটি দিলেই বাচ্চা ফিট অ্যান্ড ফাইন।
দিনভর দৌড়োদৌড়ি করে জলতেষ্টা পেলে ঠান্ডা জল অথবা বোতলবন্দি কোলা ঢকঢক করে এক চুমুকে শেষ। চেপে ধরবে গলা ব্যথা। ঢোঁক গিলতে কষ্ট। ঘ্যানঘ্যান। নো প্রবলেম। এই অবস্থা থেকে বাচ্চাকে বাঁচাতে ওকে হেপারসালফ ৩০ দিন। গলা ব্যথা জব্দ হবে। আর গরম জলে নুন দিয়ে গার্গল করতেই হবে। গার্গল করতে না পারলে গরম জল খেতে দিন।
পুজোর বাজার করতে গিয়ে অনবরত মুখ চলে? উল্টোপাল্টা আর অনিয়ম করার ফল পেতে হয় কখনওসখনও। পেটে ব্যথা, বার বার বাথরুম দৌড়ানো। পালসেটিলা ৩০ এই সমস্যার মোকাবিলা করে ঝটপট।
আরও পড়ুন: ব্যথা নিয়েও পাহাড় চূড়ায় বা সমুদ্রের তীরে ঘুরে বেড়াতে পারেন
পেটে ব্যথার দাপট না থাকলেও বার বার লিকেজে কাহিল হয়ে গেলে মার্কসল ৩০ খাওয়ালে দ্রুত সমস্যার হাত থেকে মুক্তি। সঙ্গে ওআরএস দিতে হবে। যত বার বাথরুমে যাবে, তত বারই একগ্লাস করে ওআরএস দিন। এমন দিনে এটাই উৎকৃষ্ট খাবার। তাতে পেট ভার হয়ে কিছু না খেলে, না খাক।
বাইরের জল বা কাঠি আইসক্রিম খেয়ে পেটের সংক্রমণ হয়। বাথরুম দৌড়ানো তো আছেই সঙ্গে পেটেও ব্যতা। মেজাজও ভাল নেই। এ ক্ষেত্রে নাক্স ভমিকা ৩০ খাওয়ালে বাচ্চা সেরে উঠবে।
নতুন জুতো পড়ে পায়ে ফোস্কা বা খেলতে গিয়ে আছাড় খেয়ে ব্যথায় কান্নাকাটি করলে আর্নিকা খাওয়ালে বাচ্চা আরাম পাবে।
বাচ্চাকে ভাল রাখতে হোমিওপ্যাথি ওষুধের একটা বাক্স হাতের কাছে মজুত রাখলে আচমকা সমস্যায় পড়তে হয় না। ছোটখাটো সমস্যায় নিজেরা ওষুধ দিতেই পারেন। কিন্তু দু’-একদিন অপেক্ষা করেও সমস্যা না কমলে বা রোগ বাড়লে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে অবশ্যই হোমিওপ্যাথি বা অন্য কোনও ধারার পছন্দের চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy