যক্ষ্মা রোগ নির্ণয় করে শুধু ওষুধ চালু করাই নয়। এর চিকিৎসার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল রোগীকে পর্যবেক্ষণে রাখা এবং অতি অবশ্যই ডায়েটে নজর দেওয়া। বিশ্বে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যার নিরিখে ভারতের স্থান শীর্ষে। ফলে, শুধুমাত্র প্রকল্প রূপায়ণই নয়, তা সুসম্পন্ন করার বিষয়েও উদ্যোগী হওয়া আবশ্যক। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধে ওষুধের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে পুষ্টিকর খাবার। এ ক্ষেত্রে দেহের ওজনের ভূমিকাও কম নয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র রিপোর্ট বলছে, ভারতে প্রায় প্রতি তিন মিনিটে দু’জন যক্ষ্মা রোগীর মৃত্যু হয়। আক্রান্তের সংখ্যাও বহু। তাই এই রোগ নিরাময়ে জোরদার চেষ্টা চলছে দেশে। এখনও এমন অনেক প্রত্যন্ত গ্রাম রয়েছে, যেখানে বসবাসকারী মানুষ দু’বেলা পেট ভরে খাবার খেতে পান না। তাই অপুষ্টিতে ভুগতে থাকা মানুষগুলোর শরীরে সহজেই থাবা বসাতে পারে ক্ষয়রোগ।
আরও পড়ুন:
এই বিষয়ে চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মত, যথাযথ পুষ্টি যে কোনও ধরনের যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে ফেলতে পারে। যক্ষ্মা আক্রান্ত রোগীকে প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খেতেই হবে। প্রতি কিলোগ্রাম ওজনে ১ গ্রাম করে প্রোটিন জরুরি। রোজের খাবারে ডিম, মাছ বা মাংস রাখতেই হবে। রেড মিট ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে, তাই এটি এড়িয়ে চলাই ভাল।
নিরামিষ খেলে বিভিন্ন রকম ডাল, সবুজ শাকসব্জি, চিজ়, সয়াবিন, পনির ডায়েটে রাখা যেতে পারে। সেই সঙ্গেই ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। নানা ধরনের মরসুমি ফল রাখতে হবে ডায়েটে। যদি খাবার খেতে পর্যাপ্ত ভিটামিন না পান, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট খেতে হবে। কোনও ভাবেই যেন শরীরে ভিটামিন ও খনিজের অভাব না হয়।
অ্যান্টি-টিউবারকুলার থেরাপি চললে, একবারে বেশি খাবার খেতে বারণ করেন চিকিৎসকেরা। বারে বারে অল্প করে খেতে হবে। ধূমপান ও মদ্যপান একেবারেই বন্ধ করতে হবে। যক্ষ্মা এমনই এক রোগ, যা নির্মূল হয়েও ফের আঘাত হানতে পারে। সুতরাং, সব দিক দিয়েই সাবধান থাকতে হবে।